alt

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি: এজিএম নিয়ে অনিশ্চয়তা, কর্মীদের ক্ষোভ বাড়ছে

ফয়েজ আহমেদ তুষার : শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে এবার আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন না হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে এজিএম আয়োজনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

বোর্ড সদস্যদের ‘স্বার্থের সংঘাত’, হিসাব অনুমোদন নিয়ে জটিলতা

‘ষড়যন্ত্র হচ্ছে’- অভিযোগ তুলে শ্রমিকদের চিঠি

বিসিএমসিএল ও পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, টনপ্রতি কয়লার বর্তমান দর মার্কিন ১৭৬ ডলার ধরে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করায় বোর্ড সভায় আর্থিক নিরীক্ষার অনুমোদন মেলেনি। সূত্র বলছে, আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী কয়লার দর কমিয়ে হিসাব প্রস্তুত করার মৌখিক নির্দেশনা ছিল। সে অনুযায়ী অডিট রিপোর্ট প্রস্তুত করে এজিএম আয়োজন করতে বলা হয়েছে।

দেশীয় এই খনির কয়লার দামের ওপর কোম্পানির লাভ-লোকসান নির্ভরশীল। মৌখিকভাবে দাম কমানোর নির্দেশনায় ‘ক্ষুব্ধ’ খনি শ্রমিকরা বলছেন, এই খনি ‘বন্ধে ষড়যন্ত্র চলছে’। বিদেশি কয়লা ‘আমদানির’ লক্ষ্যে একটি ‘চক্র জড়িত’।

বিসিএমসিএল হলো রাষ্ট্রীয় পেট্রোবাংলার অধীনস্থ একটি কোম্পানি; যা জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন। বিসিএমসিলের ‘শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন’ ইতোমধ্যে নিজেদের অভিযোগ ও দাবির কথা তুলে ধরে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছে।

‘বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিকে বন্ধের চক্রান্ত চলছে’ অভিযোগ তুলে চিঠিতে যা বলা হয়েছে তার মোদ্দা কথা হচ্ছে- এই খনি থেকে কয়লার একমাত্র ক্রেতা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। এখানে পিডিবির লাভ দেখতে গিয়ে কয়লা খনির লোকসান উপেক্ষা করা হচ্ছে। কারণ পিডিবি বিদ্যুৎ বিভাগের অধীনস্থ। আর কয়লা খনির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব। তিনি বিদ্যুৎ বিভাগের লাভ চাইবেন; জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নয়। এছাড়া এই খনি কোম্পানির বোর্ডে দুজন সদস্য বিদ্যুৎ বিভাগের। তারাও পিডিপির লাভ চাইবেন।

‘এতে মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগের স্বার্থের সংঘাত তৈরি হয়েছে’ বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

স্বার্থের সংঘাত

বিসিএমসিএলের শ্রমিক ইউনয়িনের অভিযোগ- বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব, পিডিবি একজন সদস্য এবং বিদ্যুৎ বিভাগের একজন উপ-সচিব তিনজনই বিদ্যুৎ বিভাগ তথা পিডিবির স্বার্থ দেখতে গিয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীনস্থ কয়লা কোম্পানির স্বার্থ দেখছে না। তারা আর্ন্তজাতিক বাজার দরে কয়লার দাম কম নির্ধারণের অজুহাতে বাস্তবতা বিবেচনা না করে খনি কোম্পানিটিকে ‘লোকসানের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন’। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দর যখন টনপ্রতি ৪০০ ডলার ছিল, তখনও পিডিবি এই খনির কয়লা নিয়েছে ১৭৬ ডলারে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের দিকনির্দেশনায় খনি কোম্পানিটি গত ১৫ বছর ধরে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চলছে। সম্প্রতি একটি মহল কয়লার দাম কমানোর চেষ্টা করছে, যার ফলে খনিটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে খনি থেকে উত্তোলিত সম্পূর্ণ কয়লা পিডিবির অধীনস্থ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিক্রি সরবরাহ করা হচ্ছে।

বড়পুকুরিয়ার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে বলেন, ‘সরকার যদি কয়লার দাম কমানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সেটার একটা অফিসিয়াল অর্ডার থাকতে হবে। কোনো অফিসিয়াল অর্ডার ছাড়াই মৌখিক নির্দেশনায় ১৭৬ ডলার থেকে কমিয়ে আর্ন্তজাতিক রেট ধরে অডিট করে সাধারণ সভার আয়োজন করতে বলছে। যেটা সম্পূর্র্ণ বেআইনি।’বিসিএমসিএলের সর্বশেষ বোর্ড সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বোর্ড চেয়ারম্যান কয়লার মূল্য দ্রুত পুনঃনির্ধারণ করে আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করে বোর্ড সভায় উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।

কর্মীদের অসন্তোষ

এরপর বিষয়টি নিয়ে কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। তাদের মতে, কয়লার বর্তমান দাম নির্ধারণ করা আছে ১৭৬ ডলার। নতুন করে দাম নির্ধারণ হয়নি। একটি কমিটি কাজ করছে। অথচ মৌখিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক মূল্য ধরে অডিট রিপোর্ট তৈরি করে এজিএমের আয়োজন করতে। তারা বলছেন, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিকে নিয়ে ‘ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে। খনিটি বন্ধ হলে দেশে কয়লা আমদানি বাড়বে, এতে একটি মহলের স্বার্থ জড়িত।

*এজিএমের বাধ্যবাধকতা*

পেট্রোবাংলার একটি সূত্রে জানা যায়, আগামী ৩১ ডিসেম্বর এজিএম আয়োজনে সময় খুব একটা নেইÑ বিষয়টি তুলে ধরে বোর্ড সভায় বিসিএমসিএল এর উপ-মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) বলেন, ‘কোম্পানি আইন, ১৯৯৪-এর ৮৫ (১) (ক) অনুযায়ী বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কমপক্ষে ২১ দিন পূর্বে পরিচালনা পর্ষদ সভার অনুমোদনক্রমে নোটিশ জারি করতে হবে। নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন কোম্পানি আইন, ১৯৯৪-এর ১৮৩ (৬) ও ১৮৯(৪) ধারা অনুযায়ী বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কমপক্ষে ১৪ দিন পূর্বে চূড়ান্ত করতে হবে।’

যদি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজন করা সম্ভব না হয় তবে ১৯৯৪ সালের কোম্পানির আইনানুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন গ্রহণের জন্য কোম্পানির যে কোনো সদস্যকে আবেদন করতে হবে।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, ৪ আগস্ট ১৯৯৮ সালে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধনের পর ১ম বার্ষিক সাধারণ সভা ২০০০ সালের ০৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুন তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদিত হয়। এরপর ২০০০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের জন্য একই বছর কোম্পানির ২য় বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজন সম্ভব হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর ৩০ জুন তারিখে অর্থবছর সমাপ্ত হলেও ঐ পঞ্জিকাবর্ষে আর এজিএম আয়োজন না করে পরবর্তী পঞ্জিকাবর্ষে এজিএম আয়োজন করতে হতো। এতে কোম্পানির বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে (এপিএ) কম নম্বর অর্জিত হতো।

কোম্পানির আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশনের অনুচ্ছেদ ৭০ অনুযায়ী অর্থবছর সমাপ্তির ছয় মাসের মধ্যে এজিএম আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০২৩ সালে কোম্পানির পক্ষ থেকে ২৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা ওই বছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আয়োজনে হাইকোর্টের অনুমতি নেয়া হয়। সে অনুযায়ী ওই বছর ২৬ ডিসেম্বর কোম্পানির ২৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানে ৩০ জুন ২০২৩ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদিত হয়।

এর ধারাবাহিকতায় কোম্পানির ২৬তম এজিএম গত ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদিত হয়। ফলে ৩০ জুন ২০২৫ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের জন্য কোম্পানি আইন ও বিসিএমসিএলের আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশনের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে ২৭তম এজিএম আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের উপদেষ্টার নজরে আনা হবে। কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী সঠিক সময়েই সাধারণ সভা করতে হবে। সভা আয়োজনে জটিলতা থাকলে দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

*কয়লার দাম*

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে একনেকের সভায় বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহকৃত কয়লার বিক্রয়মূল্য ৬০ মার্কিন ডলার নির্ধারিত হয়। পরবর্তীতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ কয়লার সমীক্ষা ব্যয় ও অন্যান্য ব্যয়সহ উত্তোলন ব্যয় বিবেচনা করে কয়লার বিক্রয়মূল্য পর্যায়ক্রমে ৭০, ৮৪, ১০৫, ১৩০ ও সর্বশেষ ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি ১৭৬ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে। তবে আর্ন্তজাতিক বাজারে বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ায় কয়লার দাম কম এমন যুক্তিতে বড় পুকুরিয়ার কয়লার দাম ৯০ ডলার করতে চায় পিডিবি।

বড়পুকুরিয়া কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০২২ সালে বিসিএমসিএলের কয়লার দাম ১৭৬ মার্কিন ডলার ছিল। কিন্তু তখন আন্তর্জাতিক বাজারে সমমানের কয়লার দাম ৪০০ ডলারের ওপরে ছিল। ওই সময়ে বিসিএমসিএলকে পিডিবি কয়লার মূল্য ৪০০ ডলারের পরিবর্তে সরকার নির্ধারিত দাম পরিশোধ করে।

এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে সম্পাদিত ৪র্থ চুক্তি ২০২১ সাল থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত হওয়ায় চুক্তিকালীন সময়ের ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে ২০২২ সালে পিডিবির জন্য বিক্রয়মূল্য ১৭৬ ডলার পুনঃনির্ধারণ করা হয়।

# অর্থ সংকট

বর্তমানে বড়পুকুরিয়ার কয়লার মূল্য ১৭৬ ডলার জ্বালানি বিভাগ থেকে নির্ধারিত। সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই পিডিবি ‘জোর করে কম দাম দিচ্ছে’- অভিযোগ খনি কর্তৃপক্ষের। বিসিএমসিএল বলছে, পিডিবি এক হাজার ১৭৮ কোটি টাকা আটকে রাখায় আর্থিক সংকটে খনিটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

উন্মুক্ত বাজারে বড়পুকুরিয়ার কয়লার প্রচুর চাহিদা থাকার পরও আইনি বাধার কারণে বাইরে বিক্রি করা যাচ্ছে না।

খনি কর্তৃপক্ষ বলছে, পিডিবির অধীনস্থ বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিটগুলো কারিগরি ত্রুটিসহ নানা কারণে বছরের বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে। এ কারণে বিসিএমসিএলের কয়লা জমে থাকে। বর্তমানে ৩টি কোল ইয়ার্ডে মজুতের উচ্চতা বাড়িয়ে (প্রায় ২০ মিটার) প্রায় ৪.৪৫ লাখ মেট্রিক টন কয়লা মজুত করা হয়েছে, যা নিরাপদ মজুতের দ্বিগুণ। একমাত্র ক্রেতা হিসেবে পিডিবি এই ‘ব্যর্থতা’ ঢাকার জন্য কয়লার দাম কমিয়ে খনিটি ‘বন্ধের অপচেষ্টা করছে’।

বেশি কয়লা মজুদের কারণে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করে পিডিবিকে একাধিক চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পিডিবি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ‘গ্রহণ করছে না’ বলে অভিযোগ।

বরিশালে চোরাই পথে আনা ১১ হাজার টন কয়লা জব্দ, গ্রেপ্তার ১২

ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ফের দুইপক্ষে গোলাগুলি, নিহত ১

ছবি

এলজিইডির ৫ কোটি টাকার আম্পান প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

ছবি

মহেশপুরে করাত কলের অনিয়মে বাড়ছে পরিবেশ ও নিরাপত্তা ঝুঁকি

ছবি

জনস্বাস্থ্যের উপ সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে টিউবওয়েল প্রদানের অভিযোগ

ছবি

হারিয়ে যাচ্ছে লাঙল জোয়াল

ছবি

ভোলায় গাছ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

ছবি

দশমিনায় কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরন বিতরন

ছবি

আটোয়ারিতে নবাগত জেলা প্রশাসক কর্তৃক গণশুনানি অনুষ্ঠিত

ছবি

ডিমলায় ট্রাকের ধাক্কায় কলেজ ছাত্রের মৃত্যু

ছবি

নোয়াখালীতে নকলে ধরা পড়ায় বিদ্যালয়ের শৌচাগারে গিয়ে ছাত্রীর আত্মহত্যা

ছবি

নবীগঞ্জে সরকারি খাস জমি উদ্ধার করলো প্রশাসন

ছবি

নরসিংদী জেলার নামকরনের সূতিকাগার নগর নরসিংহপুরের মনোরম ইতিকথা

ছবি

সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে পিকআপভ্যানে আগুন

ছবি

সিএনজি-অটোর দখলে স্কুলমাঠ ব্যাহত খেলাধুলা ও পাঠদান

ছবি

রাণীনগরে আগুনে বাড়ি পুড়ে যাওয়া পরিবারকে সহায়তা

ছবি

মানিকগঞ্জে বিনামূল্যে ঢেউটিন ও গৃহমঞ্জুরির চেক বিতরণ

ছবি

আত্রাইয়ে ব্যবসায়ীকে মারধর করে টাকা ছিনতাই

ছবি

রাউজানে ধানের শীষ পেতে ৩ হেভিওয়েটের তৎপরতা

ছবি

বিএনপি’র প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মশাল মিছিল

ছবি

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা.শামীমের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ছবি

যশোরে প্রতিপক্ষের আগুনে কৃষকের মাঠের ধান পুড়ে ছাই

ছবি

নড়াইল-২ আসনে জর্জের মনোনয়ন দাবিতে গণমিছিল

ছবি

চাটখিলে শিক্ষকের স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে মারধর করে আহত-থানায় অভিযোগ

ছবি

বোয়ালখালীতে কলাপসিবল গেট কেটে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে চুরি

ছবি

মানিকগঞ্জের নবাগত ডিসির মতবিনিময়

ছবি

দৃষ্টিহীনতার দেয়াল ভেঙে কর্মজীবন সুফিয়ানের

ছবি

রূপগঞ্জে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্টদের স্মারকলিপি

ছবি

আদমদীঘিতে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর উদ্বোধন

ছবি

কটিয়াদীতে গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ছবি

রায়পুরায় জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন

ছবি

হাজীগঞ্জ বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে নানি ও নাতিনের মৃত্যু

ছবি

চৌগাছায় দিনব্যাপি জিআই পণ্য খেজুর গুড়ের গাছি প্রশিক্ষণ

ছবি

পীরগাছায় আমন ধান ও চাল ক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন

ছবি

রাজিবপুরে ডিসির সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

ছবি

প্রচলিত অনিয়মের পরিবর্তন চায় রাঙ্গাবালীর মানুষ

tab

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি: এজিএম নিয়ে অনিশ্চয়তা, কর্মীদের ক্ষোভ বাড়ছে

ফয়েজ আহমেদ তুষার

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে এবার আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন না হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে এজিএম আয়োজনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

বোর্ড সদস্যদের ‘স্বার্থের সংঘাত’, হিসাব অনুমোদন নিয়ে জটিলতা

‘ষড়যন্ত্র হচ্ছে’- অভিযোগ তুলে শ্রমিকদের চিঠি

বিসিএমসিএল ও পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, টনপ্রতি কয়লার বর্তমান দর মার্কিন ১৭৬ ডলার ধরে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করায় বোর্ড সভায় আর্থিক নিরীক্ষার অনুমোদন মেলেনি। সূত্র বলছে, আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী কয়লার দর কমিয়ে হিসাব প্রস্তুত করার মৌখিক নির্দেশনা ছিল। সে অনুযায়ী অডিট রিপোর্ট প্রস্তুত করে এজিএম আয়োজন করতে বলা হয়েছে।

দেশীয় এই খনির কয়লার দামের ওপর কোম্পানির লাভ-লোকসান নির্ভরশীল। মৌখিকভাবে দাম কমানোর নির্দেশনায় ‘ক্ষুব্ধ’ খনি শ্রমিকরা বলছেন, এই খনি ‘বন্ধে ষড়যন্ত্র চলছে’। বিদেশি কয়লা ‘আমদানির’ লক্ষ্যে একটি ‘চক্র জড়িত’।

বিসিএমসিএল হলো রাষ্ট্রীয় পেট্রোবাংলার অধীনস্থ একটি কোম্পানি; যা জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন। বিসিএমসিলের ‘শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন’ ইতোমধ্যে নিজেদের অভিযোগ ও দাবির কথা তুলে ধরে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছে।

‘বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিকে বন্ধের চক্রান্ত চলছে’ অভিযোগ তুলে চিঠিতে যা বলা হয়েছে তার মোদ্দা কথা হচ্ছে- এই খনি থেকে কয়লার একমাত্র ক্রেতা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। এখানে পিডিবির লাভ দেখতে গিয়ে কয়লা খনির লোকসান উপেক্ষা করা হচ্ছে। কারণ পিডিবি বিদ্যুৎ বিভাগের অধীনস্থ। আর কয়লা খনির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব। তিনি বিদ্যুৎ বিভাগের লাভ চাইবেন; জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নয়। এছাড়া এই খনি কোম্পানির বোর্ডে দুজন সদস্য বিদ্যুৎ বিভাগের। তারাও পিডিপির লাভ চাইবেন।

‘এতে মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগের স্বার্থের সংঘাত তৈরি হয়েছে’ বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

স্বার্থের সংঘাত

বিসিএমসিএলের শ্রমিক ইউনয়িনের অভিযোগ- বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব, পিডিবি একজন সদস্য এবং বিদ্যুৎ বিভাগের একজন উপ-সচিব তিনজনই বিদ্যুৎ বিভাগ তথা পিডিবির স্বার্থ দেখতে গিয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীনস্থ কয়লা কোম্পানির স্বার্থ দেখছে না। তারা আর্ন্তজাতিক বাজার দরে কয়লার দাম কম নির্ধারণের অজুহাতে বাস্তবতা বিবেচনা না করে খনি কোম্পানিটিকে ‘লোকসানের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন’। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দর যখন টনপ্রতি ৪০০ ডলার ছিল, তখনও পিডিবি এই খনির কয়লা নিয়েছে ১৭৬ ডলারে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের দিকনির্দেশনায় খনি কোম্পানিটি গত ১৫ বছর ধরে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চলছে। সম্প্রতি একটি মহল কয়লার দাম কমানোর চেষ্টা করছে, যার ফলে খনিটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে খনি থেকে উত্তোলিত সম্পূর্ণ কয়লা পিডিবির অধীনস্থ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিক্রি সরবরাহ করা হচ্ছে।

বড়পুকুরিয়ার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে বলেন, ‘সরকার যদি কয়লার দাম কমানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সেটার একটা অফিসিয়াল অর্ডার থাকতে হবে। কোনো অফিসিয়াল অর্ডার ছাড়াই মৌখিক নির্দেশনায় ১৭৬ ডলার থেকে কমিয়ে আর্ন্তজাতিক রেট ধরে অডিট করে সাধারণ সভার আয়োজন করতে বলছে। যেটা সম্পূর্র্ণ বেআইনি।’বিসিএমসিএলের সর্বশেষ বোর্ড সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বোর্ড চেয়ারম্যান কয়লার মূল্য দ্রুত পুনঃনির্ধারণ করে আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করে বোর্ড সভায় উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।

কর্মীদের অসন্তোষ

এরপর বিষয়টি নিয়ে কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। তাদের মতে, কয়লার বর্তমান দাম নির্ধারণ করা আছে ১৭৬ ডলার। নতুন করে দাম নির্ধারণ হয়নি। একটি কমিটি কাজ করছে। অথচ মৌখিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক মূল্য ধরে অডিট রিপোর্ট তৈরি করে এজিএমের আয়োজন করতে। তারা বলছেন, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিকে নিয়ে ‘ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে। খনিটি বন্ধ হলে দেশে কয়লা আমদানি বাড়বে, এতে একটি মহলের স্বার্থ জড়িত।

*এজিএমের বাধ্যবাধকতা*

পেট্রোবাংলার একটি সূত্রে জানা যায়, আগামী ৩১ ডিসেম্বর এজিএম আয়োজনে সময় খুব একটা নেইÑ বিষয়টি তুলে ধরে বোর্ড সভায় বিসিএমসিএল এর উপ-মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) বলেন, ‘কোম্পানি আইন, ১৯৯৪-এর ৮৫ (১) (ক) অনুযায়ী বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কমপক্ষে ২১ দিন পূর্বে পরিচালনা পর্ষদ সভার অনুমোদনক্রমে নোটিশ জারি করতে হবে। নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন কোম্পানি আইন, ১৯৯৪-এর ১৮৩ (৬) ও ১৮৯(৪) ধারা অনুযায়ী বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কমপক্ষে ১৪ দিন পূর্বে চূড়ান্ত করতে হবে।’

যদি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজন করা সম্ভব না হয় তবে ১৯৯৪ সালের কোম্পানির আইনানুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন গ্রহণের জন্য কোম্পানির যে কোনো সদস্যকে আবেদন করতে হবে।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, ৪ আগস্ট ১৯৯৮ সালে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধনের পর ১ম বার্ষিক সাধারণ সভা ২০০০ সালের ০৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুন তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদিত হয়। এরপর ২০০০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের জন্য একই বছর কোম্পানির ২য় বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজন সম্ভব হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর ৩০ জুন তারিখে অর্থবছর সমাপ্ত হলেও ঐ পঞ্জিকাবর্ষে আর এজিএম আয়োজন না করে পরবর্তী পঞ্জিকাবর্ষে এজিএম আয়োজন করতে হতো। এতে কোম্পানির বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে (এপিএ) কম নম্বর অর্জিত হতো।

কোম্পানির আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশনের অনুচ্ছেদ ৭০ অনুযায়ী অর্থবছর সমাপ্তির ছয় মাসের মধ্যে এজিএম আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০২৩ সালে কোম্পানির পক্ষ থেকে ২৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা ওই বছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আয়োজনে হাইকোর্টের অনুমতি নেয়া হয়। সে অনুযায়ী ওই বছর ২৬ ডিসেম্বর কোম্পানির ২৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানে ৩০ জুন ২০২৩ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদিত হয়।

এর ধারাবাহিকতায় কোম্পানির ২৬তম এজিএম গত ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদিত হয়। ফলে ৩০ জুন ২০২৫ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের জন্য কোম্পানি আইন ও বিসিএমসিএলের আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশনের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে ২৭তম এজিএম আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের উপদেষ্টার নজরে আনা হবে। কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী সঠিক সময়েই সাধারণ সভা করতে হবে। সভা আয়োজনে জটিলতা থাকলে দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

*কয়লার দাম*

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে একনেকের সভায় বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহকৃত কয়লার বিক্রয়মূল্য ৬০ মার্কিন ডলার নির্ধারিত হয়। পরবর্তীতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ কয়লার সমীক্ষা ব্যয় ও অন্যান্য ব্যয়সহ উত্তোলন ব্যয় বিবেচনা করে কয়লার বিক্রয়মূল্য পর্যায়ক্রমে ৭০, ৮৪, ১০৫, ১৩০ ও সর্বশেষ ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি ১৭৬ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে। তবে আর্ন্তজাতিক বাজারে বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ায় কয়লার দাম কম এমন যুক্তিতে বড় পুকুরিয়ার কয়লার দাম ৯০ ডলার করতে চায় পিডিবি।

বড়পুকুরিয়া কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০২২ সালে বিসিএমসিএলের কয়লার দাম ১৭৬ মার্কিন ডলার ছিল। কিন্তু তখন আন্তর্জাতিক বাজারে সমমানের কয়লার দাম ৪০০ ডলারের ওপরে ছিল। ওই সময়ে বিসিএমসিএলকে পিডিবি কয়লার মূল্য ৪০০ ডলারের পরিবর্তে সরকার নির্ধারিত দাম পরিশোধ করে।

এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে সম্পাদিত ৪র্থ চুক্তি ২০২১ সাল থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত হওয়ায় চুক্তিকালীন সময়ের ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে ২০২২ সালে পিডিবির জন্য বিক্রয়মূল্য ১৭৬ ডলার পুনঃনির্ধারণ করা হয়।

# অর্থ সংকট

বর্তমানে বড়পুকুরিয়ার কয়লার মূল্য ১৭৬ ডলার জ্বালানি বিভাগ থেকে নির্ধারিত। সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই পিডিবি ‘জোর করে কম দাম দিচ্ছে’- অভিযোগ খনি কর্তৃপক্ষের। বিসিএমসিএল বলছে, পিডিবি এক হাজার ১৭৮ কোটি টাকা আটকে রাখায় আর্থিক সংকটে খনিটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

উন্মুক্ত বাজারে বড়পুকুরিয়ার কয়লার প্রচুর চাহিদা থাকার পরও আইনি বাধার কারণে বাইরে বিক্রি করা যাচ্ছে না।

খনি কর্তৃপক্ষ বলছে, পিডিবির অধীনস্থ বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিটগুলো কারিগরি ত্রুটিসহ নানা কারণে বছরের বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে। এ কারণে বিসিএমসিএলের কয়লা জমে থাকে। বর্তমানে ৩টি কোল ইয়ার্ডে মজুতের উচ্চতা বাড়িয়ে (প্রায় ২০ মিটার) প্রায় ৪.৪৫ লাখ মেট্রিক টন কয়লা মজুত করা হয়েছে, যা নিরাপদ মজুতের দ্বিগুণ। একমাত্র ক্রেতা হিসেবে পিডিবি এই ‘ব্যর্থতা’ ঢাকার জন্য কয়লার দাম কমিয়ে খনিটি ‘বন্ধের অপচেষ্টা করছে’।

বেশি কয়লা মজুদের কারণে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করে পিডিবিকে একাধিক চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পিডিবি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ‘গ্রহণ করছে না’ বলে অভিযোগ।

back to top