অভিযোগের তীর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কের দিকে
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আবারও দুইপক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে সাদ্দাম হোসেন (৩২) নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জেলা শহরের কান্দিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাদ্দাম ওই এলাকার মো. মস্তু মিয়ার ছেলে এবং সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য ছিলেন।
নিহতের পরিবার জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কান্দিপাড়া এলাকার লায়ন শাকিল গ্রুপের লোকজন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলীপ গ্রুপের তিনজনকে গুলি করে আহত করে।
এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মধ্যরাতে দিলীপ ও তার সহযোগীরা তাদের অনুসারী সাদ্দামকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর খবর পাওয়া যায়, সাদ্দাম গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সড়কে পড়ে আছেন। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, মূলত প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই দিলীপ ও তার সহযোগীরা সাদ্দামকে হত্যা করেছে।
নিহতের পিতা মো. মস্তু মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে সাদ্দাম জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলীপের অনুসারী। কিন্তু শুক্রবার,(২৮ নভেম্বর ২০২৫) সন্ধ্যায় লায়ন শাকিল ও দিলীপ গ্রুপের গুলাগুলির ঘটনার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা চলছিল। রাতে দিলীপ, বাবুল ও পলাশ আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর দিলীপ জানায় সাদ্দাম গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে দিলীপ জানায়, লায়ন শাকিল তাদের লক্ষ্য করে গুলি করলে তারা পালাতে চেষ্টা করে, এ সময় সাদ্দাম পড়ে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়। কিন্তু পালাতে গেলে পিঠে গুলি লাগার কথা, অথচ তার বুকে গুলি লেগেছে এবং ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতও রয়েছে। আমি মনে করি, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে দিলীপই আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজহারুল ইসলাম জানান, ‘রাত দুইটার দিকে আমরা গোলাগুলির খবর পাই। পরে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে গিয়ে দেখি সাদ্দাম বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন এবং ঘাড়ে কোপের দাগ রয়েছে। মূলত সন্ধ্যায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কান্দিপাড়ার দিলীপ ও শাকিল গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জেরেই এই হত্যাকা- ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারা এই হত্যাকা-ে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তদন্ত করছে। এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।’ নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলীপ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ‘আমি সাদ্দামকে ডেকে নিয়ে যাইনি। বরং সাদ্দাম আমার সঙ্গেই ছিলেন। রাতে লায়ন শাকিল আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করলে সাদ্দাম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। একটি মহল আমাকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
স্থানীয়রা জানান, ‘হঠাৎ করেই শান্ত থাকা কান্দিপাড়া এলাকায় আবারও অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা যাচ্ছে। এ অবস্থায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই দ্রুত অভিযানের মাধ্যমে অস্ত্র উদ্ধারে প্রশাসনের জোরালো হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের কান্দিপাড়া মাদরাসা রোডে স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলীপ গ্রুপের সঙ্গে স্থানীয় লায়ন শাকিল গ্রুপের মধ্যে পূর্ববিরোধের জেরে সংর্ঘষ হয় তখন তিনজন গুলিবিদ্ধ হন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
অভিযোগের তীর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কের দিকে
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আবারও দুইপক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে সাদ্দাম হোসেন (৩২) নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জেলা শহরের কান্দিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাদ্দাম ওই এলাকার মো. মস্তু মিয়ার ছেলে এবং সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য ছিলেন।
নিহতের পরিবার জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কান্দিপাড়া এলাকার লায়ন শাকিল গ্রুপের লোকজন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলীপ গ্রুপের তিনজনকে গুলি করে আহত করে।
এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মধ্যরাতে দিলীপ ও তার সহযোগীরা তাদের অনুসারী সাদ্দামকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর খবর পাওয়া যায়, সাদ্দাম গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সড়কে পড়ে আছেন। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, মূলত প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই দিলীপ ও তার সহযোগীরা সাদ্দামকে হত্যা করেছে।
নিহতের পিতা মো. মস্তু মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে সাদ্দাম জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলীপের অনুসারী। কিন্তু শুক্রবার,(২৮ নভেম্বর ২০২৫) সন্ধ্যায় লায়ন শাকিল ও দিলীপ গ্রুপের গুলাগুলির ঘটনার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা চলছিল। রাতে দিলীপ, বাবুল ও পলাশ আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর দিলীপ জানায় সাদ্দাম গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে দিলীপ জানায়, লায়ন শাকিল তাদের লক্ষ্য করে গুলি করলে তারা পালাতে চেষ্টা করে, এ সময় সাদ্দাম পড়ে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়। কিন্তু পালাতে গেলে পিঠে গুলি লাগার কথা, অথচ তার বুকে গুলি লেগেছে এবং ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতও রয়েছে। আমি মনে করি, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে দিলীপই আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজহারুল ইসলাম জানান, ‘রাত দুইটার দিকে আমরা গোলাগুলির খবর পাই। পরে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে গিয়ে দেখি সাদ্দাম বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন এবং ঘাড়ে কোপের দাগ রয়েছে। মূলত সন্ধ্যায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কান্দিপাড়ার দিলীপ ও শাকিল গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জেরেই এই হত্যাকা- ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারা এই হত্যাকা-ে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তদন্ত করছে। এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।’ নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলীপ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ‘আমি সাদ্দামকে ডেকে নিয়ে যাইনি। বরং সাদ্দাম আমার সঙ্গেই ছিলেন। রাতে লায়ন শাকিল আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করলে সাদ্দাম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। একটি মহল আমাকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
স্থানীয়রা জানান, ‘হঠাৎ করেই শান্ত থাকা কান্দিপাড়া এলাকায় আবারও অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা যাচ্ছে। এ অবস্থায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই দ্রুত অভিযানের মাধ্যমে অস্ত্র উদ্ধারে প্রশাসনের জোরালো হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের কান্দিপাড়া মাদরাসা রোডে স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলীপ গ্রুপের সঙ্গে স্থানীয় লায়ন শাকিল গ্রুপের মধ্যে পূর্ববিরোধের জেরে সংর্ঘষ হয় তখন তিনজন গুলিবিদ্ধ হন।