বাংলাদেশে নির্যাতন প্রতিরোধ, জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং মানবাধিকার কাঠামো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নির্যাতন বিরোধী সনদ এবং এর ঐচ্ছিক প্রোটোকল বিষয়ে ময়মনসিংহে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার বিকেলে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার-এর উদ্যোগে জেলা পরিষদ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিসত হয়। সভায় মানবাধিকারকর্মী, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সভায় সাবেক সরকারের আমলে গুম ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরা তাদের বিভৎস্য নির্যাতনের কাহিনী তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা যেন কারো সংগে না ঘটে এর জন্য কঠোর আইনের বিধান রাখার আহ্বান জানান।
সভায় বক্তারা বলেন, নির্যাতন একটি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং কোনো গণতান্ত্রিক সমাজেই এ ধরনের আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। তারা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ১৯৯৮ সালে নির্যাতনবিরোধী সনদ অনুমোদন করলেও এখনও অনুস্বাক্ষর না করা দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে আটকস্থলে স্বাধীন পরিদর্শন ব্যবস্থার অভাব, রিমান্ডে নির্যাতন, পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু, জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। অধিকারের সিনিয়র গবেষক তাসকিন ফাহমিনার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহের ডিআইজি প্রিজন মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রেজা মোহাম্মদ গোলাম মাসুম প্রধান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহরাওয়ার্দী হোসেন, জিপি অ্যাডভোকেট আজহারুল হক, পিপি অ্যাডভোকেট নূরুল হক, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. ফয়সাল আহমেদ প্রমুখ।
, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর কামরুল হাসান মিলন, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক শহিদুল্লাহ কায়সার, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক একেএম মাহবুবুল আলম, এনসিপির জেলা সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মাহবুব আলমসহ অন্যান্যরা। বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালের ‘নির্যাতন ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন’ অত্যন্ত শক্তিশালী হলেও বাস্তবে মামলার সংখ্যা খুব কম এবং বিচার আরও কম। অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা মামলা করতে ভয় পান বা বাধার মুখে পড়েন। তদন্ত প্রক্রিয়া দীর্ঘসূত্রতা, সাক্ষীর নিরাপত্তার অভাব এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনার জটিলতা ভুক্তভোগীদের নিরুৎসাহিত করছে। অধিকার প্রতিনিধিরা জানান, বাংলাদেশে রিমান্ডে নির্যাতন, গুম, হেফাজতে মৃত্যু এবং বিচারবহির্ভূত ঘটনার নথিভুক্তি অব্যাহত রয়েছে, এবং আন্তর্জাতিক মহলেও এ বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তারা বলেন, নির্যাতন প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, শক্তিশালী আইনি কাঠামোর বাস্তবায়ন এবং মানবাধিকার রক্ষাকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। অনুষ্ঠান শেষে বক্তারা নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যৌথভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশে নির্যাতন প্রতিরোধ, জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং মানবাধিকার কাঠামো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নির্যাতন বিরোধী সনদ এবং এর ঐচ্ছিক প্রোটোকল বিষয়ে ময়মনসিংহে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার বিকেলে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার-এর উদ্যোগে জেলা পরিষদ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিসত হয়। সভায় মানবাধিকারকর্মী, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সভায় সাবেক সরকারের আমলে গুম ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরা তাদের বিভৎস্য নির্যাতনের কাহিনী তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা যেন কারো সংগে না ঘটে এর জন্য কঠোর আইনের বিধান রাখার আহ্বান জানান।
সভায় বক্তারা বলেন, নির্যাতন একটি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং কোনো গণতান্ত্রিক সমাজেই এ ধরনের আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। তারা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ১৯৯৮ সালে নির্যাতনবিরোধী সনদ অনুমোদন করলেও এখনও অনুস্বাক্ষর না করা দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে আটকস্থলে স্বাধীন পরিদর্শন ব্যবস্থার অভাব, রিমান্ডে নির্যাতন, পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু, জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। অধিকারের সিনিয়র গবেষক তাসকিন ফাহমিনার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহের ডিআইজি প্রিজন মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রেজা মোহাম্মদ গোলাম মাসুম প্রধান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহরাওয়ার্দী হোসেন, জিপি অ্যাডভোকেট আজহারুল হক, পিপি অ্যাডভোকেট নূরুল হক, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. ফয়সাল আহমেদ প্রমুখ।
, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর কামরুল হাসান মিলন, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক শহিদুল্লাহ কায়সার, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক একেএম মাহবুবুল আলম, এনসিপির জেলা সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মাহবুব আলমসহ অন্যান্যরা। বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালের ‘নির্যাতন ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন’ অত্যন্ত শক্তিশালী হলেও বাস্তবে মামলার সংখ্যা খুব কম এবং বিচার আরও কম। অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা মামলা করতে ভয় পান বা বাধার মুখে পড়েন। তদন্ত প্রক্রিয়া দীর্ঘসূত্রতা, সাক্ষীর নিরাপত্তার অভাব এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনার জটিলতা ভুক্তভোগীদের নিরুৎসাহিত করছে। অধিকার প্রতিনিধিরা জানান, বাংলাদেশে রিমান্ডে নির্যাতন, গুম, হেফাজতে মৃত্যু এবং বিচারবহির্ভূত ঘটনার নথিভুক্তি অব্যাহত রয়েছে, এবং আন্তর্জাতিক মহলেও এ বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তারা বলেন, নির্যাতন প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, শক্তিশালী আইনি কাঠামোর বাস্তবায়ন এবং মানবাধিকার রক্ষাকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। অনুষ্ঠান শেষে বক্তারা নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যৌথভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।