মীরসরাইয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের এই সরোবরটিতে করা হবে দৃষ্টিনন্দন ওয়াটার পার্ক -সংবাদ
মীরসরাই উপজেলার ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ এলাকায় একটি পরিকল্পিত অংশ হিসেবে প্রায় ২০০ একর জমির ওপর একটি সরোবর তৈরি করার সিদ্ধান্ত ছিল শুরুর দিক থেকে। সেই স্বপ্নের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে শীঘ্রই এমন তথ্য জানা গেছে অর্থনৈতিক অঞ্চল সূত্রে।
সরজমিনে দেখা যায়, মীরসরাইয়ের অর্থনৈতিক অঞ্চলের সুপার ডাইক তথা বৃহত্তম বেড়িবাঁধ কেন্দ্রিক সমুদ্র উপকূলের জলরাশির ঢেউ আর বিস্তীর্ণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ইতোমধ্যে প্রতিদিন শত-সহস্র দর্শনার্থী ভিড় করছে সেখানে। কেউ পাথরের ওপর বসে পতেঙ্গা বিচ আদলের প্রকৃতি উপভোগ করছে। আবার কেউ বাঁধের ওপর বসে সমুদ্রের হাওয়া খেতে খেতে ঝালমুড়ি বা বাদাম খাচ্ছে। তবে মানুষ নিয়মিতই দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্ত অবধি ভিড় করছে এখানে।
২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া এই অর্থনৈতিক অঞ্চল দীর্ঘ দেড় দশক ধরে সৃজন হওয়া এখানকার জাতীয় অর্থনৈতিক শিল্পনগরের বিভিন্ন ফ্যাক্টরি ও গার্মেন্টস শিল্পের পাশাপাশি রয়েছে খোলা প্রাকৃতিক পরিবেশ। চারপাশে উঁচু-নিচু সবুজ ভূমি, দিগন্ত বিস্তৃত নীলাকাশ আর আঁকাবাঁকা পথ যেন প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়েছে। এর পাশেই বঙ্গোপসাগরের মোহনায় গড়ে উঠেছে মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকতটি। এই সৈকতের উল্টো দিকের অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভেতরে গড়ে উঠা কয়েকটি কারখানার বেষ্টনী মোহনায় প্রস্তাবিত সরোবরের স্থানে এখনো লেক সদৃশ জলাধার গড়ে উঠেছে। এক পাশে টলমল দীঘির জলের মতো আরেক পাশে দ্বৈত সারিতে সাজানো ঝাউগাছগুলো বড় হয়ে উঠেছে। এখন থেকে সরোবরটি সাজানো হলে ফুটে উঠবে এর নান্দনিক সৌন্দর্য।
কর্মজীবী বা সাধারণ মানুষ একটু সময় পেলেই ছুটে যাচ্ছে এই সৈকতে। গতকাল বৃহস্পতিবার ও এখানে দেখা যায় দর্শনার্থীদের ভীড়। বিকেলে সৈকতজুড়ে উপচেপড়া পর্যটকদের ভিড়। অন্তত কয়েকশ’ মানুষ পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে বেড়াতে এসেছেন এখানে। সৈকতের আশপাশে কোনো দোকানপাট না থাকলে ও দু-একজন ফেরিওয়ালাই দেখা গেছে। দেখা যায়, সাগরের জোয়ার-ভাটার খেলা সৈকতের রূপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। শিল্পনগরের পাশে সুরক্ষার জন্য নির্মিত সুপার ডাইক ঘেষেই সৃজিত হয়েছে এই সৈকত। ঈদের ছুটি ছাড়াও প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার ও শনিবার এখানে দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ফেনী থেকে ঘুরতে আসা পিয়াল মাহমুদ (৫২) ও শিক্ষিকা ইসমত আরা ( ৪০) বলেন, ‘এখানে এসে কক্সবাজারের একটুখানি অনুভূতি পাওয়া যায়। সরকার চাইলে এটিকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারে। উন্নয়ন আর রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে মীরসরাইয়ের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে ৈৈসকতটি।’
এই বিষয়ে অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষের জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক সেঁজুতি বড়–য়া বলেন, আমরা এখানে সুপার ডাইকের ভেতরে ২০০ একর জমিজুড়ে একটি সরোবর গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে লেকের ওপর ভ্রাম্যমাণ ফুড কর্নারসহ ভ্রমণ পিপাষুদের জন্য দৃষ্টিনন্দন ও প্রকৃতিবান্ধব নান্দনিক ব্যবস্থাপনা থাকবে। যারা সৈকতে আসবে, তারা সৈকত উপভোগ করার পাশাপাশি এখানে লেকের স্বচ্ছ টলমলে জলের পাশে তাদের প্রয়োজনীয় খাবার ও পানীয় গ্রহণ করতে পারবেন। যেহেতু সৈকতের দর্শনার্থী বাড়ছে সেহেতু আমরা শীঘ্রই ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে এ বিষয়ে উদ্যোগের প্রস্তাবনা পাঠানোর আলোচনা চলছে।
উল্লেখ্য যে, ১০১০ সালে বাস্তবায়ন হওয়া বাংলাদেশের বৃহত্তম এই অর্থনৈতিক অঞ্চল ইতোমধ্যে অনেক সফলতার পথে। ৩০,০০০ একর জমিতে নির্মিত এই জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বেজা দ্বারা পরিচালিত। বর্তমানে এখানে ১৪টি বিদেশি এবং স্থানীয় কোম্পানি তাদের কারখানা চালু করেছে। প্রক্রিয়াধীন আরও অনেক দেশি-বিদেশি কারখানা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মীরসরাইয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের এই সরোবরটিতে করা হবে দৃষ্টিনন্দন ওয়াটার পার্ক -সংবাদ
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
মীরসরাই উপজেলার ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ এলাকায় একটি পরিকল্পিত অংশ হিসেবে প্রায় ২০০ একর জমির ওপর একটি সরোবর তৈরি করার সিদ্ধান্ত ছিল শুরুর দিক থেকে। সেই স্বপ্নের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে শীঘ্রই এমন তথ্য জানা গেছে অর্থনৈতিক অঞ্চল সূত্রে।
সরজমিনে দেখা যায়, মীরসরাইয়ের অর্থনৈতিক অঞ্চলের সুপার ডাইক তথা বৃহত্তম বেড়িবাঁধ কেন্দ্রিক সমুদ্র উপকূলের জলরাশির ঢেউ আর বিস্তীর্ণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ইতোমধ্যে প্রতিদিন শত-সহস্র দর্শনার্থী ভিড় করছে সেখানে। কেউ পাথরের ওপর বসে পতেঙ্গা বিচ আদলের প্রকৃতি উপভোগ করছে। আবার কেউ বাঁধের ওপর বসে সমুদ্রের হাওয়া খেতে খেতে ঝালমুড়ি বা বাদাম খাচ্ছে। তবে মানুষ নিয়মিতই দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্ত অবধি ভিড় করছে এখানে।
২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া এই অর্থনৈতিক অঞ্চল দীর্ঘ দেড় দশক ধরে সৃজন হওয়া এখানকার জাতীয় অর্থনৈতিক শিল্পনগরের বিভিন্ন ফ্যাক্টরি ও গার্মেন্টস শিল্পের পাশাপাশি রয়েছে খোলা প্রাকৃতিক পরিবেশ। চারপাশে উঁচু-নিচু সবুজ ভূমি, দিগন্ত বিস্তৃত নীলাকাশ আর আঁকাবাঁকা পথ যেন প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়েছে। এর পাশেই বঙ্গোপসাগরের মোহনায় গড়ে উঠেছে মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকতটি। এই সৈকতের উল্টো দিকের অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভেতরে গড়ে উঠা কয়েকটি কারখানার বেষ্টনী মোহনায় প্রস্তাবিত সরোবরের স্থানে এখনো লেক সদৃশ জলাধার গড়ে উঠেছে। এক পাশে টলমল দীঘির জলের মতো আরেক পাশে দ্বৈত সারিতে সাজানো ঝাউগাছগুলো বড় হয়ে উঠেছে। এখন থেকে সরোবরটি সাজানো হলে ফুটে উঠবে এর নান্দনিক সৌন্দর্য।
কর্মজীবী বা সাধারণ মানুষ একটু সময় পেলেই ছুটে যাচ্ছে এই সৈকতে। গতকাল বৃহস্পতিবার ও এখানে দেখা যায় দর্শনার্থীদের ভীড়। বিকেলে সৈকতজুড়ে উপচেপড়া পর্যটকদের ভিড়। অন্তত কয়েকশ’ মানুষ পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে বেড়াতে এসেছেন এখানে। সৈকতের আশপাশে কোনো দোকানপাট না থাকলে ও দু-একজন ফেরিওয়ালাই দেখা গেছে। দেখা যায়, সাগরের জোয়ার-ভাটার খেলা সৈকতের রূপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। শিল্পনগরের পাশে সুরক্ষার জন্য নির্মিত সুপার ডাইক ঘেষেই সৃজিত হয়েছে এই সৈকত। ঈদের ছুটি ছাড়াও প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার ও শনিবার এখানে দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ফেনী থেকে ঘুরতে আসা পিয়াল মাহমুদ (৫২) ও শিক্ষিকা ইসমত আরা ( ৪০) বলেন, ‘এখানে এসে কক্সবাজারের একটুখানি অনুভূতি পাওয়া যায়। সরকার চাইলে এটিকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারে। উন্নয়ন আর রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে মীরসরাইয়ের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে ৈৈসকতটি।’
এই বিষয়ে অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষের জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক সেঁজুতি বড়–য়া বলেন, আমরা এখানে সুপার ডাইকের ভেতরে ২০০ একর জমিজুড়ে একটি সরোবর গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে লেকের ওপর ভ্রাম্যমাণ ফুড কর্নারসহ ভ্রমণ পিপাষুদের জন্য দৃষ্টিনন্দন ও প্রকৃতিবান্ধব নান্দনিক ব্যবস্থাপনা থাকবে। যারা সৈকতে আসবে, তারা সৈকত উপভোগ করার পাশাপাশি এখানে লেকের স্বচ্ছ টলমলে জলের পাশে তাদের প্রয়োজনীয় খাবার ও পানীয় গ্রহণ করতে পারবেন। যেহেতু সৈকতের দর্শনার্থী বাড়ছে সেহেতু আমরা শীঘ্রই ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে এ বিষয়ে উদ্যোগের প্রস্তাবনা পাঠানোর আলোচনা চলছে।
উল্লেখ্য যে, ১০১০ সালে বাস্তবায়ন হওয়া বাংলাদেশের বৃহত্তম এই অর্থনৈতিক অঞ্চল ইতোমধ্যে অনেক সফলতার পথে। ৩০,০০০ একর জমিতে নির্মিত এই জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বেজা দ্বারা পরিচালিত। বর্তমানে এখানে ১৪টি বিদেশি এবং স্থানীয় কোম্পানি তাদের কারখানা চালু করেছে। প্রক্রিয়াধীন আরও অনেক দেশি-বিদেশি কারখানা।