alt

টাঙ্গাইলে কৃষকের রোপা আমন চাষে সাফল্য

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল : শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

টাঙ্গাইলে রোপা আমন ধান চাষে সাফল্য ধরা দেওয়ায় কৃষকের চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। ভালো বীজ ও আধুনিক কৃষিযন্ত্রের ছোঁয়া এবং অনুকূল পরিবেশের ফলে বিঘা প্রতি ২ থেকে ৪ মণ ধান উৎপাদন বেশি হওয়ায় কৃষকের আনন্দ পরিবার থেকে পাড়া-গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা বাজারে আমন ধানের ভালো দাম প্রত্যাশা করেছে।

এদিকে অগ্রহায়নের শুরু থেকে জেলার চাষিরা আমন ধান কেটে ঘরে তোলা শুরু করেছে। এলাকাভেদে পর্যায়ক্রমে রোপা আমন ধান কেটে ঘরে তুলছে কৃষকরা। ইতোমধ্যে জেলায় উৎপাদনের প্রায় ৬৩ শতাংশ জমির ধান কাটা সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি ধানগুলো ক্ষেত থেকে কেটে-মাড়াই করে ঘরে তুলতে নানা কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত এখন কৃষক-কিষাণীরা।

টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ১২টি উপজেলায় রোপা আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এক লাখ দুই হাজার হেক্টর। সরকারি প্রণোদনা ও কৃষকদের উচ্চফলনশীল জাতের বীজ দেওয়ায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এক লাখ ৪ হাজার ৫৮৩ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

এরমধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে, চাষ করা হয়েছে ৫ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে। বাসাইলে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৯০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ৩৯২ হেক্টরে। কালিহাতীতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৩০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ৮ হাজার ৪৬৫ হেক্টরে। ঘাটাইলে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ হাজার ৪০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৪৯০ হেক্টরে। নাগরপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৫১০ হেক্টরে, চাষ করা হয়েছে ৩ হাজার ২০১ হেক্টর। মির্জাপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে, চাষ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৪৮ হেক্টর। মধুপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ১৩ হাজার ২ হেক্টরে। ভূঞাপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ২৩০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ৬ হাজার ১০৫ হেক্টরে। গোপালপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৯০০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ১৩ হাজার হেক্টরে। সখীপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ২৬০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ১৭ হাজার ২৬৫ হেক্টরে। দেলদুয়ারে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৪৩০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ৩ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে এবং এবং ধনবাড়ী উপজেলায় রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমিতে, আবাদ করা হয়েছে ৯ হাজার ৯ শত ৫০ হেক্টর জমিতে।

সরেজমিনে জেলার কালিহাতী উপজেলার সহদেবপুর ইউনিয়নের দিগর গ্রামে দেখা যায়, মাঠেজুড়ে চলছে রোপা আমন ধান কাটার উৎসব। কৃষকরা ব্যাপক উৎসাহ ও আনন্দ নিয়ে আধুনিক যন্ত্র (কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন) ব্যবহার করে ধান কাটা ও মেশিনে মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে ভালো খড় পেতে প্রায় ৮০-৮৫ ভাগ কৃষক হাতে ধান কেটে মেশিনে মাড়াই করছেন। কৃষকের উঠানে ইতোমধ্যে নতুন ধানের স্তুপ জমতে শুরু করেছে। রোপা আমন উঠতে কিষাণীরাও দম ফেলার ফুসরত পাচ্ছে না।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত বছরগুলোতে বিঘা প্রতি তারা ১৪-১৬ মণ হারে রোপা আমন উৎপাদিত হতো। এ বছর বিঘা প্রতি ১৮-২০ মণ হারে ধান পাচ্ছেন। ভালো বীজ বপণ ও জমি প্রস্তুত থেকে মাড়াই পর্যন্ত আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে আবাদ করায় উৎপাদন বেড়েছে বলে মনে করছেন তারা। অধিক ফলন পাওয়ায় কৃষকদের হাসি-আনন্দ পরিবার থেকে পাড়া-গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। কৃষকরা জানায়, বাজারে রোপা আমন ধানের দাম আশানুরূপ পেলে তারা এ মৌসুমে লাভের মুখ দেখবেন। আর বাজার যদি কম থাকে তবে ফসল উৎপাদনের ইচ্ছাশক্তি অনেকটা মৃয়মান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কালিহাতীর সহদেবপুর ইউনিয়নের দিগর গ্রামের কৃষক রায়হান আলী, রকিবুদ্দিন, আবু বক্কর, আব্দুর জব্বার, আমজাদ আলী, নওশের হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ তুলনামূলকভাবে কম হলেও হয়নি বলা যাবে না। তাই ধানে কিছুটা চিটা হওয়ায় ফলন অনেকটা কম হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় ধানের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে ক্ষেতের ধানগুলো জমিতে নেতিয়ে পড়েছিল- এজন্য অনেক ধানের চিটা হয়েছে। সার, বীজ, কীটনাশ প্রয়োগের খরচের পর এবার আগের তুলনায় বিঘাপ্রতি ২ থেকে ৪ মণ ধান বেশি পাওয়া যাচ্ছে। বাজার ভালো পেলে নতুন ধান বিক্রি করে লাভবান হওয়ার আশা করছেন তারা।

টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আশেক পারভেজ জানান, মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ, আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষে প্রশক্ষিণ ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহ, রোগবালাই নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা এবং বীজ ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনার ফলে এবার রোপা আমন ধান চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। কৃষকরা বাম্পার ফলন পেয়ে অনেক খুশি।

তিনি জানান, ইতোমধ্যে জেলার এক লাখ ৪ হাজার ৫৮৩ হেক্টর জমিতে উৎপাদিত ধানের মধ্যে প্রায় ৬২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির ধান কর্তন শেষ হয়েছে। যা জেলায় উৎপাদিত রোপা আমনের প্রায় ৬৩ শতাংশ। ধান কাটার পাশাপাশি দ্রুতগতিতে চলছে মাড়াইয়ের কাজও। জেলার এ বছর হাইব্রিড ও উফশী জাতের আমনের চারা রোপণ করা হয়েছিল। কিছু কিছু এলাকায় স্থানীয় জাতের আমনের চাষও হয়েছে। রোগবালাই কম থাকায় সব জাতেরই আশানুরূপ ফলন হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে জেলায় রোপা আমন ধান কাটা শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ছবি

শেরপুরে দইয়ের বাজার মন্দা, বিপাকে খামারীরা

ছবি

ডিমলায় নাশকতার ঘটনায় মামলা না হওয়ায় উত্তেজনা

ছবি

গঙ্গাচড়ায় ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক আটক

ছবি

শিমুলিয়া ঘাটে পোর্ট অফিসারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে আটকে মারধরের অভিযোগ

ছবি

শিমুলিয়া ঘাটে পোর্ট অফিসারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে আটকে মারধরের অভিযোগ

ছবি

ঝালকাঠিতে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

ছবি

বেগম জিয়া দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে সমান জনপ্রিয় -ড. মঈন খান

ছবি

সরবরাহ বাড়লেও সীমার বাইরে শীতকালীন সবজির দাম

ছবি

বরেন্দ্রের লাল মাটিতে টমেটো বিপ্লব স্বাবলম্বী হাজারো কৃষক

ছবি

শেরপুরে ২৪ ঘণ্টায় ৩টি মোটরসাইকেল চুরি

ছবি

তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে জেগে উঠা ডুবোচর

ছবি

তারাগঞ্জে সার সংকট গুজব, ডিলারের বিশ হাজার জরিমানা

ছবি

শীতে গরম জিলাপির ঘ্রাণে মুখর চরফ্যাসন বিক্রি বাড়ছে কয়েকগুণ

ছবি

মহম্মদপুর আদিবাসী পল্লীতে মতুয়া সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ছবি

রৌমারতে শীতার্ত মানুষের মাঝে বস্ত্র বিতরণ

ছবি

দুমকিতে জনবল সংকটে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কার্যক্রম ব্যাহত

ছবি

সাপাহারে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ

ছবি

জয়পুরহাটে ৪৫ ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়ন নেই ২৭টির

ছবি

বদলি- প্রশিক্ষণে শূন্য চুনারুঘাট, থমকে আছে জরুরি সেবা

ছবি

বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবীতে প্রতিবাদ সভা

ছবি

তরমুজের লোভে বন উজাড়, ভেঙে পড়ছে উপকূলের সবুজ বেষ্টনী

ছবি

মহম্মদপুরে ঘোপ বাঁওড়ে অতিথি পাখির বিচরণে মুখরিত

ছবি

বেতাগীতে শীতবস্ত্রের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে

ছবি

গাইবান্ধা হানাদার মুক্ত দিবস আজ

ছবি

আজ বেগমগঞ্জ মুক্ত দিবস

ছবি

নরসিংদীতে গাঁজাসহ আটক ২

ছবি

দেলদুয়ারে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও শীতবস্ত্র বিতরণ

ছবি

মাগুরায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে পেট্রোল বোমা হামলায় দলিলপত্র পুড়ে ছাই

ছবি

রূপগঞ্জে প্রবাসীর ছেলের ডাকাতির নাটক, ৩ কিশোর গ্রেপ্তার

ছবি

জগন্নাথপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১০ দোকান পুড়ে ছাই

ছবি

খুলশীতে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ছবি

কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রিতে, ঠাণ্ডায় নাকাল জনজীবন

ছবি

ফরিদপুরে নির্মাণাধীন ভবন ধসে ২০ কোটি টাকার ক্ষতি

ছবি

ডিমলায় বুড়ি তিস্তা খননের প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মশাল মিছিল

ছবি

রাজশাহীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বাড়ি থেকে ৪৪৪ বস্তা সার জব্দ

বড়াইগ্রামের দুই স্থানে মোটরসাইকেল আরোহী ২ যুবকের মৃত্যু

tab

টাঙ্গাইলে কৃষকের রোপা আমন চাষে সাফল্য

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

টাঙ্গাইলে রোপা আমন ধান চাষে সাফল্য ধরা দেওয়ায় কৃষকের চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। ভালো বীজ ও আধুনিক কৃষিযন্ত্রের ছোঁয়া এবং অনুকূল পরিবেশের ফলে বিঘা প্রতি ২ থেকে ৪ মণ ধান উৎপাদন বেশি হওয়ায় কৃষকের আনন্দ পরিবার থেকে পাড়া-গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা বাজারে আমন ধানের ভালো দাম প্রত্যাশা করেছে।

এদিকে অগ্রহায়নের শুরু থেকে জেলার চাষিরা আমন ধান কেটে ঘরে তোলা শুরু করেছে। এলাকাভেদে পর্যায়ক্রমে রোপা আমন ধান কেটে ঘরে তুলছে কৃষকরা। ইতোমধ্যে জেলায় উৎপাদনের প্রায় ৬৩ শতাংশ জমির ধান কাটা সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি ধানগুলো ক্ষেত থেকে কেটে-মাড়াই করে ঘরে তুলতে নানা কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত এখন কৃষক-কিষাণীরা।

টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ১২টি উপজেলায় রোপা আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এক লাখ দুই হাজার হেক্টর। সরকারি প্রণোদনা ও কৃষকদের উচ্চফলনশীল জাতের বীজ দেওয়ায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এক লাখ ৪ হাজার ৫৮৩ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

এরমধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে, চাষ করা হয়েছে ৫ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে। বাসাইলে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৯০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ৩৯২ হেক্টরে। কালিহাতীতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৩০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ৮ হাজার ৪৬৫ হেক্টরে। ঘাটাইলে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ হাজার ৪০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৪৯০ হেক্টরে। নাগরপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৫১০ হেক্টরে, চাষ করা হয়েছে ৩ হাজার ২০১ হেক্টর। মির্জাপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে, চাষ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৪৮ হেক্টর। মধুপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ১৩ হাজার ২ হেক্টরে। ভূঞাপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ২৩০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ৬ হাজার ১০৫ হেক্টরে। গোপালপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৯০০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ১৩ হাজার হেক্টরে। সখীপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ২৬০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ১৭ হাজার ২৬৫ হেক্টরে। দেলদুয়ারে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৪৩০ হেক্টর, চাষ করা হয়েছে ৩ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে এবং এবং ধনবাড়ী উপজেলায় রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমিতে, আবাদ করা হয়েছে ৯ হাজার ৯ শত ৫০ হেক্টর জমিতে।

সরেজমিনে জেলার কালিহাতী উপজেলার সহদেবপুর ইউনিয়নের দিগর গ্রামে দেখা যায়, মাঠেজুড়ে চলছে রোপা আমন ধান কাটার উৎসব। কৃষকরা ব্যাপক উৎসাহ ও আনন্দ নিয়ে আধুনিক যন্ত্র (কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন) ব্যবহার করে ধান কাটা ও মেশিনে মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে ভালো খড় পেতে প্রায় ৮০-৮৫ ভাগ কৃষক হাতে ধান কেটে মেশিনে মাড়াই করছেন। কৃষকের উঠানে ইতোমধ্যে নতুন ধানের স্তুপ জমতে শুরু করেছে। রোপা আমন উঠতে কিষাণীরাও দম ফেলার ফুসরত পাচ্ছে না।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত বছরগুলোতে বিঘা প্রতি তারা ১৪-১৬ মণ হারে রোপা আমন উৎপাদিত হতো। এ বছর বিঘা প্রতি ১৮-২০ মণ হারে ধান পাচ্ছেন। ভালো বীজ বপণ ও জমি প্রস্তুত থেকে মাড়াই পর্যন্ত আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে আবাদ করায় উৎপাদন বেড়েছে বলে মনে করছেন তারা। অধিক ফলন পাওয়ায় কৃষকদের হাসি-আনন্দ পরিবার থেকে পাড়া-গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। কৃষকরা জানায়, বাজারে রোপা আমন ধানের দাম আশানুরূপ পেলে তারা এ মৌসুমে লাভের মুখ দেখবেন। আর বাজার যদি কম থাকে তবে ফসল উৎপাদনের ইচ্ছাশক্তি অনেকটা মৃয়মান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কালিহাতীর সহদেবপুর ইউনিয়নের দিগর গ্রামের কৃষক রায়হান আলী, রকিবুদ্দিন, আবু বক্কর, আব্দুর জব্বার, আমজাদ আলী, নওশের হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ তুলনামূলকভাবে কম হলেও হয়নি বলা যাবে না। তাই ধানে কিছুটা চিটা হওয়ায় ফলন অনেকটা কম হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় ধানের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে ক্ষেতের ধানগুলো জমিতে নেতিয়ে পড়েছিল- এজন্য অনেক ধানের চিটা হয়েছে। সার, বীজ, কীটনাশ প্রয়োগের খরচের পর এবার আগের তুলনায় বিঘাপ্রতি ২ থেকে ৪ মণ ধান বেশি পাওয়া যাচ্ছে। বাজার ভালো পেলে নতুন ধান বিক্রি করে লাভবান হওয়ার আশা করছেন তারা।

টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আশেক পারভেজ জানান, মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ, আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষে প্রশক্ষিণ ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহ, রোগবালাই নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা এবং বীজ ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনার ফলে এবার রোপা আমন ধান চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। কৃষকরা বাম্পার ফলন পেয়ে অনেক খুশি।

তিনি জানান, ইতোমধ্যে জেলার এক লাখ ৪ হাজার ৫৮৩ হেক্টর জমিতে উৎপাদিত ধানের মধ্যে প্রায় ৬২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির ধান কর্তন শেষ হয়েছে। যা জেলায় উৎপাদিত রোপা আমনের প্রায় ৬৩ শতাংশ। ধান কাটার পাশাপাশি দ্রুতগতিতে চলছে মাড়াইয়ের কাজও। জেলার এ বছর হাইব্রিড ও উফশী জাতের আমনের চারা রোপণ করা হয়েছিল। কিছু কিছু এলাকায় স্থানীয় জাতের আমনের চাষও হয়েছে। রোগবালাই কম থাকায় সব জাতেরই আশানুরূপ ফলন হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে জেলায় রোপা আমন ধান কাটা শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

back to top