হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসিল্যান্ডনা থাকায় প্রশাসনিক ও ভূমিসংক্রান্ত সেবা কার্যক্রমে চরম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। নামজারি, ভূমিউন্নয়ন কর প্রদান, জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি, উত্তরাধিকার সনদ, চারিত্রিক সনদ সহ জরুরি সেবা নিতে এসে কয়েকদিন ধওে ঘুরেও কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, গত সোমবার চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে ঢাকায় বদলি করা হয়। তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, ভূমি অফিসসহ মোট চারটি দপ্তরের কার্যক্রম তদারকি করতেন। অপর দিকে, সদ্য যোগদান করা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা যোগদানের মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় ছয় মাসের প্রশিক্ষণে চলে যান। ফলে দীর্ঘদিনধরেইউএনওএকাইএকাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের কাজ সামাল দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তিনিও বদলি হয়ে চলে যাওয়ায় বর্তমানে উপজেলার চারটি দপ্তর কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী স্থানীয়রা জানান, কখন কর্মকর্তা আসবেন বা কবে থেকে স্বাভাবিক ভাবে কাজ শুরু হবে এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এতে করে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ বাড়ছে। সেবা গ্রহীতা মোজাম্মেল হক জানান, “নাম জারির জন্য তিনবার অফিসে এসেছি, কিন্তু প্রতিবারই শুনি স্যার নেই, পরে আসেন। এত দূর থেকে এসে সময় ও টাকা দুইটাই নষ্ট হচ্ছে। একই অভিযোগ করেছেন সদও ইউনিয়ন থেকে আসা রহিমা বেগম। তিনি বলেন, আমার ছেলে বিদেশে যাবে, জরুরি একটি সনদ দরকার। কিন্তু অফিসে এসে দেখি কেউ সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো নেই। এদিকে, সাময়িকভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদ বিন কাশেমকে। তবে তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করায় মাধবপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তাকে ভারপ্রাপ্ত ভাবে কাজ চালাতে বলা হয়েছে। চুনারুঘাটের চারটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্ব ওই কর্মকর্তাকে দেওয়া হবে কিনা ইউএনও জাহিদ ঢাকা থেকে ফিরলে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা মো. মুজিবুল ইসলাম বলেন, আমাদের ইউএনও স্যার সাময়িক দায়িত্বে আছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করায় আপাতত মাধবপুরের দপ্তরের দায়িত্ব দেখা হচ্ছে। সামনে তিনি এলে চুনারুঘাটের বিষয়টি নির্ধারণ করা হবে। তবে মাধবপুরের ইউএনও মো. জাহিদ বিন কাশেমের সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। স্থানীয়দেও অনেকেই মনে করছেন, একজন কর্মকর্তা দিয়ে দুই উপজেলার অন্তত আটটি দপ্তরের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা প্রায় অসম্ভব। বিশেষ কওে মাধবপুর থেকে চুনারুঘাটের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার হওয়ায় যাতায়াতেই অধিকাংশ সময় চলে যাবে, ফলে কাজের গতি আরও ধীর হয়ে পড়বে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চুনারুঘাটের সাধারণ মানুষ দ্রুত একজন পূর্ণাঙ্গ ইউএনও ও এসিল্যান্ড পদায়নের দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, জরুরি ভিত্তিতে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ না করলেজন ভোগান্তি আরও বাড়বে এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়বে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসিল্যান্ডনা থাকায় প্রশাসনিক ও ভূমিসংক্রান্ত সেবা কার্যক্রমে চরম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। নামজারি, ভূমিউন্নয়ন কর প্রদান, জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি, উত্তরাধিকার সনদ, চারিত্রিক সনদ সহ জরুরি সেবা নিতে এসে কয়েকদিন ধওে ঘুরেও কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, গত সোমবার চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে ঢাকায় বদলি করা হয়। তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, ভূমি অফিসসহ মোট চারটি দপ্তরের কার্যক্রম তদারকি করতেন। অপর দিকে, সদ্য যোগদান করা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা যোগদানের মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় ছয় মাসের প্রশিক্ষণে চলে যান। ফলে দীর্ঘদিনধরেইউএনওএকাইএকাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের কাজ সামাল দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তিনিও বদলি হয়ে চলে যাওয়ায় বর্তমানে উপজেলার চারটি দপ্তর কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী স্থানীয়রা জানান, কখন কর্মকর্তা আসবেন বা কবে থেকে স্বাভাবিক ভাবে কাজ শুরু হবে এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এতে করে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ বাড়ছে। সেবা গ্রহীতা মোজাম্মেল হক জানান, “নাম জারির জন্য তিনবার অফিসে এসেছি, কিন্তু প্রতিবারই শুনি স্যার নেই, পরে আসেন। এত দূর থেকে এসে সময় ও টাকা দুইটাই নষ্ট হচ্ছে। একই অভিযোগ করেছেন সদও ইউনিয়ন থেকে আসা রহিমা বেগম। তিনি বলেন, আমার ছেলে বিদেশে যাবে, জরুরি একটি সনদ দরকার। কিন্তু অফিসে এসে দেখি কেউ সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো নেই। এদিকে, সাময়িকভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদ বিন কাশেমকে। তবে তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করায় মাধবপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তাকে ভারপ্রাপ্ত ভাবে কাজ চালাতে বলা হয়েছে। চুনারুঘাটের চারটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্ব ওই কর্মকর্তাকে দেওয়া হবে কিনা ইউএনও জাহিদ ঢাকা থেকে ফিরলে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা মো. মুজিবুল ইসলাম বলেন, আমাদের ইউএনও স্যার সাময়িক দায়িত্বে আছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করায় আপাতত মাধবপুরের দপ্তরের দায়িত্ব দেখা হচ্ছে। সামনে তিনি এলে চুনারুঘাটের বিষয়টি নির্ধারণ করা হবে। তবে মাধবপুরের ইউএনও মো. জাহিদ বিন কাশেমের সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। স্থানীয়দেও অনেকেই মনে করছেন, একজন কর্মকর্তা দিয়ে দুই উপজেলার অন্তত আটটি দপ্তরের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা প্রায় অসম্ভব। বিশেষ কওে মাধবপুর থেকে চুনারুঘাটের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার হওয়ায় যাতায়াতেই অধিকাংশ সময় চলে যাবে, ফলে কাজের গতি আরও ধীর হয়ে পড়বে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চুনারুঘাটের সাধারণ মানুষ দ্রুত একজন পূর্ণাঙ্গ ইউএনও ও এসিল্যান্ড পদায়নের দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, জরুরি ভিত্তিতে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ না করলেজন ভোগান্তি আরও বাড়বে এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়বে।