ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাট সংলগ্ন রানি গাঁও মৌজার মালিকানাধীন চরভূমি রক্ষাকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই জমিতে স্থাপিত পিলার ও গাছপালা উপড়ে ফেলার সময় ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে দুই স্কুলছাত্রকে মারধর এবং তাদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে শিমুলিয়া ঘাটের পোর্ট অফিসার নেওয়াজ মোহাম্মদ খানের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রানি গাঁও মৌজায় খতিয়ানভুক্ত জমিগুলো দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়দের বসতভিটা ও চাষাবাদের জমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শিমুলিয়া ঘাট নির্মাণের সময় নৌপথের প্রয়োজনে খনন কার্যক্রম চললেও তখন জমির মালিকরা কোনো বাধা দেননি। তবে পদ্মা সেতু চালুর পর নৌপথে চাপ কমে যাওয়ায় তারা আবার এসব জমি বসবাস ও চাষাবাদের উপযোগী করে তোলেন। হালনাগাদ খাজনাসহ সকল বৈধ কাগজপত্র তাদের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় একটি বালু ও ভূ-দস্যু সিন্ডিকেটের স্বার্থে পোর্ট অফিসার নেওয়াজ মোহাম্মদ খান নতুন টার্মিনাল চ্যানেল খনন এর নামে শতাধিক একর মালিকানাধীন জমি ড্রেজার দিয়ে কেটে মাটি বিক্রির পাঁয়তারা করছেন। এতে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।
গত বৃহস্পতিবার জমির পিলার ও গাছ উপড়ে ফেলার সময় ঘটনাস্থলে ভিডিও ধারণ করছিলেন কাজির পাগলা এটিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ শামীম (১৪) এবং হলদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের একই শ্রেণির ছাত্র নুর জালাল (১৬)। অভিযোগে বলা হয়, পোর্ট অফিসার নিজেই তাদের আটক করে মারধর করেন এবং মোবাইল ফোন জব্দ করেন। পরে রাতে মোবাইল ফেরত দেওয়া হলেও এতে ধারণ করা সব ভিডিও মুছে ফেলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মামলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হুমকি দেওয়া হয় বলেও ছাত্রদের পরিবার দাবি করেছে।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে পোর্ট অফিসার নেওয়াজ মোহাম্মদ খান মারধর এবং হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তিনি শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন জব্দ করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
ঘটনার পরপরই এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। জমির মালিকরা বিআইডব্লিউটিএ’র প্রধান কার্যালয়, জেলা প্রশাসন ও লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাদের শত বছরের বসতভিটা কোনোভাবেই ধ্বংস হতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে মানববন্ধনসহ বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা ববি মিতু ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন এবং শিক্ষার্থীদের নির্ভয় থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাট সংলগ্ন রানি গাঁও মৌজার মালিকানাধীন চরভূমি রক্ষাকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই জমিতে স্থাপিত পিলার ও গাছপালা উপড়ে ফেলার সময় ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে দুই স্কুলছাত্রকে মারধর এবং তাদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে শিমুলিয়া ঘাটের পোর্ট অফিসার নেওয়াজ মোহাম্মদ খানের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রানি গাঁও মৌজায় খতিয়ানভুক্ত জমিগুলো দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়দের বসতভিটা ও চাষাবাদের জমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শিমুলিয়া ঘাট নির্মাণের সময় নৌপথের প্রয়োজনে খনন কার্যক্রম চললেও তখন জমির মালিকরা কোনো বাধা দেননি। তবে পদ্মা সেতু চালুর পর নৌপথে চাপ কমে যাওয়ায় তারা আবার এসব জমি বসবাস ও চাষাবাদের উপযোগী করে তোলেন। হালনাগাদ খাজনাসহ সকল বৈধ কাগজপত্র তাদের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় একটি বালু ও ভূ-দস্যু সিন্ডিকেটের স্বার্থে পোর্ট অফিসার নেওয়াজ মোহাম্মদ খান নতুন টার্মিনাল চ্যানেল খনন এর নামে শতাধিক একর মালিকানাধীন জমি ড্রেজার দিয়ে কেটে মাটি বিক্রির পাঁয়তারা করছেন। এতে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।
গত বৃহস্পতিবার জমির পিলার ও গাছ উপড়ে ফেলার সময় ঘটনাস্থলে ভিডিও ধারণ করছিলেন কাজির পাগলা এটিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ শামীম (১৪) এবং হলদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের একই শ্রেণির ছাত্র নুর জালাল (১৬)। অভিযোগে বলা হয়, পোর্ট অফিসার নিজেই তাদের আটক করে মারধর করেন এবং মোবাইল ফোন জব্দ করেন। পরে রাতে মোবাইল ফেরত দেওয়া হলেও এতে ধারণ করা সব ভিডিও মুছে ফেলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মামলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হুমকি দেওয়া হয় বলেও ছাত্রদের পরিবার দাবি করেছে।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে পোর্ট অফিসার নেওয়াজ মোহাম্মদ খান মারধর এবং হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তিনি শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন জব্দ করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
ঘটনার পরপরই এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। জমির মালিকরা বিআইডব্লিউটিএ’র প্রধান কার্যালয়, জেলা প্রশাসন ও লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাদের শত বছরের বসতভিটা কোনোভাবেই ধ্বংস হতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে মানববন্ধনসহ বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা ববি মিতু ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন এবং শিক্ষার্থীদের নির্ভয় থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।