পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন থেকে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীন লাঠিখেলা বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পপৗছে গেছে। ৮০ দশকে গ্রামাঞ্চলে গ্রামীন সংস্কৃতির অন্যতম জনপ্রিয় লাঠিখেলা দেখার জন্য কৃষক থেকে শুরু করে সাধারন মানুষ বড় মাঠে ছুটে যেত। লাঠিখেলার দিন বড় মাঠের চারপাশ উৎসুক জনতার ভিড় লেগে যেত। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়া এবং নতুন প্রজন্মের আগ্রহ কমে যাওয়ায় ঐতিহ্যবাহী এই লাঠিখেলা গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। উপজেলায় বিগত সময়ে প্রায় ৮-১০টি লাঠিখেলার দল ছিল। সময়ের আবর্তে এখন আর কোন দলের তেমন অস্তিত্ব নেই। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে এক সময়ে গ্রামীন মেলা, উৎসব ও বিশেষ বিশেষ দিনে বাদ্যের তালে তালে লাঠিখেলা চলতো। বাদ্যের তালে তালে লাঠিখেলার সময় একপক্ষ অন্যপক্ষের আঘাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে পাল্টা আঘাত করতো। এতে দুই পক্ষই লাঠিতে আঘাত এবং ডাক চিৎকার করে উৎসুক জনতাকে আনন্দ দিতো। প্রত্যেকটি দল প্রশিক্ষনের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করেই দুইপক্ষ একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করতো। গ্রামের ফসলি জমি থেকে নতুন ধান কেটে ঘরে নেয়ার পর খোলা মাঠে লাঠিখেলার আয়োজন করা হতো। মাঠজুড়ে উৎসব মুখর লাঠিখেলায় ঢাকঢোল বাজিয়ে লাঠিয়ালদের খেলা দেখতে শত শত মানুষ তা উপভোগ করতো। লাঠিখেলায় দুইপক্ষের প্রতিযোগিতা শেষে বিচারকরা একটি দলকে বিজয়ী ঘোষনা করতো। বিজয়ী দলকে পুরস্কার দেয়ার পর আনন্দ ও উল্লাস আরও বেড়ে যেত। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় লাঠিখেলা গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার তরুন প্রজন্ম লাঠিখেলার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে এই খেলা দেখার জন্য আগ্রহ থাকলেও আর্থিক সমস্যার কারনে আয়োজন করা বেশ কঠিন হয়ে পরে। তবে সরকারি কিংবা বেসরকারি উদ্যোগে লাঠিখেলার আয়োজন করা হলে গ্রামীন লোকজ ঐতিহ্য লাঠিখেলা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।