চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে এক যুগ আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা ভবনগুলোর বেশির ভাগই এখনও ব্যবহৃত হচ্ছে। সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে দেশজুড়ে আতঙ্ক থাকলেও তালিকাভুক্ত এসব ভবন সরিয়ে নিতে কিংবা বন্ধ করতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে ঢাকার সাভারে রানা প্লাজা ধসের পর সারা দেশে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন শনাক্তের নির্দেশ দেয় সরকার। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী মীরসরাই পৌর কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে ১৩টি ভবন ও মার্কেটকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে কে এইচ জামান মঞ্জিল, মোমিনটোলার মীর হাউজিং, ছাদেক বিল্ডিং, ওহিদুনবীর দুই তলা মার্কেট, নুরুল হুদা মার্কেট, নূরনবী মার্কেট, রেনু মিয়া মার্কেট, ফজল ভবন, মীরসরাই তহসিল অফিসসহ বেশ কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন।২০১৭ সালের ১১ জুন ভবন মালিকদের মীরসরাই পৌরসভা চিঠি দিয়ে ভবনগুলোতে বসবাসরতদের সরিয়ে নেওয়া এবং ঝুঁকিপূর্ণ অংশ ভেঙে অপসারণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু নির্দেশনা মানা হয়নি। ফলে দুয়েকটি ভবন ছাড়া বাকি সবগুলোতেই আজও চলছে ব্যবসা-বাণিজ্য, কোথাও বা বসবাস করছেন মানুষ। সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্ব পাশে অবস্থিত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষিত বেশ কয়েকটি ভবনে ফার্মেসি, সিমেন্ট দোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। কোর্ট রোডের কে এইচ জামান মঞ্জিল এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ছাদেক বিল্ডিংয়েও এখনো বসবাস করছে অনেকে।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, যদি ৬ বা ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, এসব পুরোনো ও ক্ষতিগ্রস্ত ভবন মুহূর্তেই ধসে পড়ে বড় ধরণে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয়দের মতে, দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় বড় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। তারা দ্রুত এসব ভবন অপসারণ এবং বসবাসকারী মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে মীরসরাই পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী প্রদীপ চৌধুরী বলেন, আমি তালিকা প্রণয়নের কয়েক বছর পরে পৌরসভায় যোগদান করেছি। এখন তালিকা পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোমাইয়া আক্তার বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে ভূমিকম্পপ্রবণ সময়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসবাস করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়া উচিত।