প্রতিনিধি, হিলি (দিনাজপুর)

মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে সিংড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র

image

ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে সিংড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র

মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, হিলি (দিনাজপুর)

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ৩নং সিংড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি একসময় মাতৃস্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার অন্যতম ভরসাস্থল ছিল। কিন্তু বরাদ্দ সংকট, নজরদারির অভাব, দীর্ঘদিনের অবহেলা ও অনিয়মের কারণে এটি এখন সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রায়, পরিত্যক্ত এবং জনমানবশূন্য ভবনে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, ভবনের প্রতিটি দরজা ও জানালা ভেঙে পড়েছে বা চুরি হয়ে গেছে। ফ্রেম, কাঠ ও লোহার অংশ নেই। ভাঙা দেয়ালে বড় বড় ফাটল, ছাদের পলেস্তারা খসে গেছে এবং ইট বেরিয়ে গেছে। ভবনের ভিতরে আগাছার জঙ্গল এমনভাবে উঠেছে যে দূর থেকে ভবনটি পরিত্যক্ত ভুতুড়ে স্থাপনার মতো মনে হয়।

ভিতরে প্রবেশ করলে দেখা যায়, মেঝে জুড়ে প্লাস্টিক, ছেঁড়া কাগজ, ভাঙা কাঁচ, পশুর বিষ্ঠা, শুকনো পাতা এবং দীর্ঘদিন জমে থাকা ময়লার আস্তরণ। একটিও চেয়ার, টেবিল বা চিকিৎসার সরঞ্জাম নেই। টয়লেটগুলো অকার্যকর, পানির লাইন নষ্ট, কোথাও নেই আলো বা নিরাপত্তা। স্থানীয়রা জানান, রাত নামলেই ভবনটি মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়, যা এলাকায় নতুন ধরনের অশান্তি সৃষ্টি করছে।

স্থানীয় নারী রাবেয়া খাতুন বলেন, এই ভবনটি চালু থাকলে গর্ভবতী মা, শিশুর চিকিৎসা ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা হাতের নাগালেই পেতাম। এখন দূরে উপজেলা হাসপাতালে যেতে হয়। সাধারণ মানুষের কষ্ট কেউ বুঝে না।

উপজেলার রানীগঞ্জ সরকারি স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক মনোরঞ্জন মোহন্ত ভুট্টু ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ৩ নং সিংড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের এই অবস্থা শুধু একটি পরিত্যক্ত ভবনের গল্প নয়—এটি গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার বর্তমান বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভবনটি একসময় সম্পূর্ণ ধসে পড়বে এবং জনগণের মূল্যবান একটি সেবা কেন্দ্র হারিয়ে যাবে।

স্থানীয়রা জানান, পরিত্যক্ত ভবনটি এখন এলাকায় উদ্বেগের নতুন কারণ। ভবনটি ভেঙে পড়ার শঙ্কা রয়েছে, রাতে এখানে অসামাজিক কর্মকান্ড চলে, পরিবেশ দূষণ ও দুর্গন্ধ বেড়ে গেছে। শিশু-কিশোররা ঝুঁকিপূর্ণ অংশে খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় থাকে।

স্থানীয়দের একটাই দাবি, যত দ্রুত সম্ভব ভবনটি সংস্কার করে পুনরায় স্বাস্থ্যসেবা চালু করতে হবে। কারণ এই কেন্দ্র সচল হলে গর্ভবতী মা, শিশু স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, টিকাদান ও সাধারণ প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রামাঞ্চলে সহজলভ্য হবে। স্থানীয়দের ভাষ্য, এখন ভবনটি স্বাস্থ্যসেবার কেন্দ্র না হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য ও অসামাজিক কর্মকান্ডের স্থান হিসেবে পরিচিত।

উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন জানান, আমরা বহুবার উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরে ভবন সংস্কারের আবেদন করেছি। কিন্তু পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি। ভবনটি এখন পুরোপুরি ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, উপযুক্ত সংস্কার, আসবাব, জনবল ও সরঞ্জাম পেলে কেন্দ্রটি আবার সচল করা সম্ভব। এলাকাবাসীর জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. সোলায়মান মেহেদী হাসান জানান, আমরা কেন্দ্রটির জরাজীর্ণ অবস্থার ব্যাপারে অবগত। এধরনের সংস্কার বা পুনঃনির্মানের কাজ মূলতঃ হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট (এইচইডি) এর মাধ্যমে হয়ে থাকে। তবে বরাদ্দ অনুমোদন ও নতুন জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। বিষয়টি ইতোমধ্যে তারা অবগত আছেন। আমরাও বারবার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

» মানিকগঞ্জে পাঁচ অদম্য নারীকে সম্মাননা

» সুন্দরবনের ৭২ কেজি হরিণের মাংসসহ আটক ৪

» সিলেটে সরকারি চাকরি ছাড়ার হিড়িক

» বাগেরহাট কারাগার থেকে মুক্ত ৪৭ ভারতীয় জেলে

» বাহুবলে ব্যারিকেড দিয়ে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা

» হবিগঞ্জে দুই পক্ষে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২৫

» গজারিয়ায় জয় হত্যাকান্ডের দুই সপ্তাহে গ্রেপ্তার নেই

» ঠাকুরগাঁওয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত

» লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ এখন কালের স্বাক্ষী

» সিরাজগঞ্জে ট্রাকচাপায় ব্যবসায়ী নিহত

» নাইক্ষ্যংছড়িতে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত

» সিলেটে আসামি ধরতে গিয়ে সিআইডি কর্মকর্তা আহত

» ডিমলায় বেগম রোকেয়া দিবসে র‌্যালি ও আলোচনা সভা

» দামুড়হুদায় খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যাস্ত গাছি

» সিরাজগঞ্জে বিদেশি ফল প্যাশন (আনারকলি) চাষে কৃষক জহুরুলের সাফল্য

» রাণীশংকৈলের মোশাররফ এখন বিদেশি পাখির সফল খামারি,

» শেরপুরে আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক

» প্রসূতীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুর

» কিশোরগঞ্জে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দিবস পালিত

» দশমিনায় সুগন্ধি কালোজিরা ধান বিলুপ্তির পথে