সিরাজগঞ্জে বিদেশি ফল আনারকলি (প্যাশন) ফল নামে পরিচিত চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন এক কৃষক জহুরুল ইসলাম। এছাড়াও ফলটি ট্যাংক হিসেবেও পরিচিত। এক মৌসুমেই তিনি এ থেকে খরচ বাদে ৬ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন। তিনি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেপলার পাগলা বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি নানা ধরনের অর্থকারী ফল,ফসল এবং সবজি চাষ করে আসছেন বলে জানা গেছে। দক্ষিণ আমেরিকা ও ব্রাজিলে এই জনপ্রিয় ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষক জহুরুল ইসলাম। জানা যায়, গত বছর তার ভাতিজা কক্সবাজার বেড়াতে যান। সেখানে তিনি প্যাশন ফল খান এবং কয়েকটি বাড়িতে নিয়ে আসেন। সেই ফল খেয়ে চাষাবাদে আগ্রহ জাগে জহুরুলের। পরে ভাতিজার সহযোগীতায় ২শ’ টাকা দরে সেখান থেকে দশটি ফলের চারা সংগ্রহ করে গ্রামে নিজের ফসলি জমিতে লাগান। এর মধ্যে ৫ টি চারা মরে যায় বাকি পাঁচটি গাছে ১০ থেকে ১২ কেজি করে ফল ধরে। যা তিনি পাঁচ শত টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। লাভ পেয়ে বড় পরিসরে এই ফল চাষাবাদের আগ্রহ জন্মে। পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ওই গাছ থেকে কলম পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করেন জহুরুল।
গত বছরের নভেম্বরে দিকে ৬৫ শতক জমিতে মাচা পদ্ধতিতে তৈরি করা চারা রোপন করেন তিনি। সেই চারা থেকে চলতি বছরের মে মাস থেকে ফল তোলা শুরু হয়। এখন তার পুরো জমির মাচার নিচে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে প্যাশন ফল। প্রতিদিন গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করছেন। তার প্যাশন ফল বাগানের মাচার একেকটি গাছে ৮০ থেকে ৯০ টি করে ফল ধরেছে। যার ওজন প্রকারভেদে ১শ’৫০ প্রাম থেকে ২শ’গ্রাম পর্যন্ত হয়েছে। এই ফল গাছ থেকে টানা ৮ মাস পর্যন্ত ফল তুলে বিক্রি করা যায়।
ফলটি স্থানীয় বাজারসহ সারা দেশে অনলাইনে ৪শথেকে ৫ শ’টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে নতুন ধরনের এই টক এবং মিষ্টি জাতীয় ফলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাগান থেকেই বিক্রি হচ্ছে। এই পুরো চাষাবাদে কৃষক জহুরুলের খরচ হয়েছে প্রায় লাখ টাকা। আর এ থেকে তিনি এক মৌসুমেই ছয় লাখ টাকা লাভের আশা করছেন। পাশাপাশি এই গাছগুলি থেকে কলম দিয়ে চারা তৈরি করে বিক্রি করেও বাড়তি আয় করছেন। নতুন করে তিনি আরো ৫৬ শতক জমিতে এ ফলের চাষাবাদের পরিধি বৃদ্ধি করেছেন। একই জমির ভিতর তিনি সাথী ফসলের চাষাবাদও করে বাড়তি আয় করেছেন। তার এমন সফল্য এলাকার অন্য কৃষকদেরও এ ফল চাষাবাদে আগ্রহী করে তুলেছে।
কৃষক জহুরুল ইসলাম জানান, স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরার্মশ এবং সার্বিক সহযোগীতায় তিনি এই সাফল্য পেয়েছেন। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিদিন বাগানে আসছেন। তিনি আশা করছেন এই জমির ফল গাছ থেকে যে চারা উৎপাদন করেছেন তা দিয়ে স্থানীয়সহ দেশের কৃষকরা এ ফল চাষাবদ করে ভাল লাভবান হতে পারবেন। কম খরচে এ ফল চাষাবাদে রোগ বালাইয়ের তেমন আক্রমন হয় না। ফলে অনেক টাকা আয় করা যায়।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুর্বণা ইয়াসমিন সুমি জানান,জহুরুল ইসলাম উপজেলার একজন সফল চাষী। বছরজুড়ে তিনি উচ্চমূল্যের নানা ধরনের ফল,ফসল চাষাবাদ করেন। নতুন করে তার এই প্যাশন ফল চাষবাদে আমরা কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের পরার্মশ ও সহযোগী দিচ্ছি। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে উপজেলার কৃষকদের সব সময় উচ্চ ফলনশীল এবং আয় বর্ধক ফল,ফসল চাষে সব রকমের সহযোগীতা দিচ্ছি। অন্য কৃষকরা প্যাশন চাষ করতে চাইলে তাদেরও সহযোগীতা করা হবে।
আন্তর্জাতিক: ভারতের বৃহত্তম এয়ারলাইনে যেভাবে ধস নামলো
সারাদেশ: সিলেটে সরকারি চাকরি ছাড়ার হিড়িক