আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় যৌথভাবে উপজেলার পাঁচজন ‘অদম্য নারী’কে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার, (০৯ ডিসেম্বর ২০২৫) সকাল ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘নারী ও কন্যাশিশু সহিংসতা বন্ধে একজোট হই, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করি’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত হয় এই বিশেষ অনুষ্ঠানে তাদের এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান, সফল জননী, শিক্ষা ও চাকুরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন, দুঃস্বপ্ন মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু এবং অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী এই পাঁচটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জেসমিন আক্তারের সঞ্চালনায় অদম্য ওই পাঁচ নারীদের অসাধারণ জীবনযুদ্ধের জন্য ‘অদম্য নারী পুরস্কার’ তুলে দেওয়া হয়।
১. মোসা. লিপি আক্তার (সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান): সাটুরিয়া ইউনিয়নের ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য মোসা. লিপি আক্তার বাল্যবিবাহের শিকার হওয়া সত্ত্বেও সমাজের হাল ধরেছেন। ব্যক্তিগত সংগ্রাম সত্ত্বেও তিনি জনসেবামূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেন এবং এলাকার মানুষের ভালোবাসায় পরপর দুইবার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। ইউপি সদস্য হিসেবে তিনি এলাকার রাস্তা মেরামত, কালভার্ট নির্মাণসহ হত-দরিদ্র ও দুঃস্থ মানুষের জন্য সরকারি বিভিন্ন ভাতা ও সহায়তা নিশ্চিত করেছেন।
২. আলেয়া আক্তার (সফল জননী নারী): সংসার থেকে বিতাড়িত হয়েও আলেয়া আক্তার বাবার বাড়িতে থেকে সরকারি চাকুরি শুরু করেন এবং একাই তাঁর তিন সন্তানকে লালন-পালন করেন। প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তার তিনজন সন্তানই ভালো রেজাল্ট করে উচ্চশিক্ষা লাভ করেছেন এবং বর্তমানে তারা শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। অবসর জীবন পার করা এই সফল জননী তার তিন সন্তানের সাফল্যে আজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত।
৩. শাহীনা আক্তার (শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী): চরতিল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহীনা আক্তার পারিবারিক চাপ ও বেকার স্বামীর নির্যাতনের মতো কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে শিক্ষাক্ষেত্রে নিজের স্থান করে নিয়েছেন। ১৯৯৮ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকুরি পাওয়ার পর তিনি নিজের কর্মজীবনকে সফল করে তুলেছেন। তিনি ২০১৪ ও ২০১৬ সালে মানিকগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা নির্বাচিত হন এবং সরকারিভাবে ইন্দোনেশিয়া সফরের সুযোগ পান।
৪. বিলকিস আক্তার (দুঃস্বপ্ন মুছে ফেলে নতুন উদ্যোমে জীবন শুরু করেছেন যে নারী): মাত্র আঠারো বছর বয়সে বিয়ে, স্বামীর মাদকাসক্তি এবং এক বছর বয়সী সন্তানসহ তালাকপ্রাপ্ত হয়ে অসহায় হয়ে পড়েন বিলকিস আক্তার। বাবা-মাকে হারানোর পর কঠিন পরিস্থিতিতেও তিনি থেমে যাননি। তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করা এবং পরে পিতলের কাজ শিখে নিজের ও সন্তানের জীবন পরিচালনা করেন। তার কঠোর সংগ্রামের ফলস্বরূপ, তার ছেলে বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর গর্বিত সদস্য।
৫. লাল কিস্পার (অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী): আর্থিক সংকটের মুখে লাল কিস্পার উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রথমে ক্রিস্টাল সোপিস ও ডেকোরেটেড ক্যান্ডেল মেকিং এবং পরে সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি লোন নিয়ে সেলাই মেশিন কিনে ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনা করছেন এবং হোমিওপ্যাথিক কোর্সও শেষ করার পথে। বর্তমানে তিনি মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে অনেকের কর্মসংস্থানে সহায়তা করছেন।
আন্তর্জাতিক: পাকিস্তানকে আরও ১২০ কোটি ডলার ঋণ দিল আইএমএফ
আন্তর্জাতিক: মদ বিক্রি শুরু করলো সৌদি আরব
আন্তর্জাতিক: ভারতের বৃহত্তম এয়ারলাইনে যেভাবে ধস নামলো