image
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

সোনাইমুড়িতে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ

বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, চাটখিল ও সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার নদনা বাজার নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, অগ্নিকান্ড, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এবং মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত নদনা বাজারে চলা এই সহিংসতায় ১৫/১৬টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট হয়। সংঘর্ষের সময় একটি মোটরসাইকেল ও একটি ভ্যান গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতেও হামলা চালানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। পরে সেনাসদস্যরা পৌঁছালে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে উভয় পক্ষের মধ্যে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নদনা বাজারের উত্তরে (উত্তর শাকতলা) এবং দক্ষিণে (দক্ষিণ শাকতলা) গ্রাম অবস্থিত। দুই গ্রামের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কিশোর-তরুণ মাদকসহ কিশোর গ্যাং তৈরি করে বিভিন্ন অপরাধ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত এবং বাজার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় সেই উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। প্রথমে উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় বাজারে ইটপাটকেল ছোড়া ও প্রতিপক্ষের দোকানে হামলার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, দুই দিনের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের সাত আটজন আহত হয়েছেন। তাদের অনেকে আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন, বর্তমানে বিএনপির সঙ্গে যুক্ত হলেও স্থানীয়দের দাবি সংঘর্ষ রাজনৈতিক নয়; কিশোর-তরুণেরা কারও কথা শোনে না এবং আধিপত্য দেখাতেই এ ধরনের সহিংসতায় জড়াচ্ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সংঘর্ষের সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও ‘অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকতে’ দেখা গেছে।

সোমবারের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আবারও দুই পক্ষ বাজারে মুখোমুখি হলে নতুন করে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপে পুরো বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় আরও কয়েকটি দোকান লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাত নয়টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। টানা দুই দিনের সংঘর্ষে বাজারের তিন শতাধিক দোকানের ব্যবসা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন জানান, ঘটনার মূল কারণ বাজারকেন্দ্রিক আধিপত্য বিস্তার; এটি রাজনৈতিক কোনো ইস্যু নয়। দুষ্কৃতকারীরা মোটরসাইকেল ও ভ্যানগাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে, একাধিক দোকান ভাঙচুর করেছে এবং ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা করেছে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে পুলিশ কঠোরভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

সম্প্রতি