image
দশমিনা (পটুয়াখালী) : উপজেলার চরাঞ্চলে কৃষিতে নতুন করে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হতে চলছে -সংবাদ

দশমিনায় চরাঞ্চলে কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা কৃষকদের নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন

বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, দশমিনা (পটুয়াখালী)

পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা দশমিনার তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর মাঝে জেগে উঠা চরাঞ্চলে কৃষিতে নতুন করে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হতে চলছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উদ্যোগে ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরে বাংলাদেশের চর এলাকায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারন প্রকল্পের(১ম সংশোধিত) আওতায় কৃষক ও কিষানীদেরকে প্রশিক্ষন দেয়া হয়। প্রশিক্ষন শেষে চর এলাকায় কৃষি বিপ্লব ঘটাতে বিভিন্ন প্রদর্শনীর জন্য কৃষি উপকরন বিতরন করার পর কৃষকরা ফসলি জমিতে নেমে পড়েছে। নদীর বুকে জেঁগে উঠা চরে বানিজ্যিকভাবে তরমুজ,বাদাম শসা,কুমড়াসহ শীতকালীন ফসলের চাষ শুরু করেছে। উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় অর্ধ শতাধিক চর রয়েছে। চরাঞ্চলগুলোকে কৃষিকাজের আওতায় নেয়া হলে কৃষকরা নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখবে।

উপজেলার নদী বেষ্টিত চরগুলোতে জমি উর্বর থাকায় ফসলের বাম্পার ফলন হয়ে থাকে। তবে বিস্তীর্ন চরাঞ্চলে তরমুজের আবাদ সবচেয়ে বেশী হয়। তরমুজ চাষের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন, মরিচসহ আরও কয়েকটি কৃষি পন্য কৃষকরা আবাদ করেছে। বিশাল বিশাল চরে কৃষকরা সারি সারি করে বীজ বপন করার পর পানি ও জৈব সার প্রয়োগ করছে। উপজেলার প্রত্যেকটি চরে প্রতি বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হয়ে থাকে। চলতি বছর কৃষকরা আগাম জাতের তরমুজ চাষ শুরু করে দিয়েছে। কৃষকরা মাঠ ভরা শীতকালিন সবজির চাষে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে। উপজেলায় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে কৃষকরা লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করেছে।

উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে শীতকালিন সবজির মহা সমারোহ বিরাজ করছে। এক সময়ে অত্র উপজেলায় সবজি দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে সরবরাহ করা হতো। কৃষি জমিতে পানি থাকায় চাষাবাদ করতে পারতো না। ফলে স্থানীয়রা চাহিদা মিটাতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সবজি নিয়ে আসা হতো। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং স্থানীয় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা নিজেরাই সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছে। স্থানীয়রা আগাম চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন চরের কৃষকরা লাউ,কুমড়া, সিম, বরবটি, লালশাক,পুঁইশাক চাষ করে পুষ্টির চাহিদা মিটানেরা চেষ্টা করছে। স্থানীয়দের চাহিদা মিটাতে কৃষকরা পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ শাক-সবজি বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। উপজেলায় দফায় দফায় বন্যা ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের ফলে কৃষকরা বার বার লোকসানে পড়লেও চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলে আগাম শীতকালিন সবজি চাষাবাদ করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চেষ্টা করছে। উপজেলার নদী বিধৌত চরাঞ্চলে বহুমুখী ফসলের চাষের এই উদ্যাগটি কৃষি বিপ্লবে নতুন সম্ভাবনার সূচনা করবে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের কর্ম পরিকল্পনায় বাংলাদেশের চর এলাকায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারন প্রকল্পের(১ম সংশোধিত) আওতায় কৃষকরা ফলন লাভবান হলে অর্থনীতিতে সাফল্যের নতুন অধ্যায় সংযুক্ত হবে। নদীর পানি কমে যাওয়ায় জেগে উঠা বিশাল বিশাল চরে আগাম তরমুজের চাষ শুরু হয়ে গেছে। তরমুজ চাষের পাশাপাশি শসা, লালশাক, পুঁইশাক, পেঁয়াজ, রসুনসহ অন্যান্য ফসল চাষ করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জাফর আহমেদ বলেন, উপজেলার চর এলাকায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারন প্রকল্পের(১ম সংশোধিত) আওতায় এই বছর চরাঞ্চলগুলোকে কৃষিকাজের আওতায় নেয়া হয়। চরের জমি বেশ উর্বর এবং অল্প সময়ের মধ্যেই ভাল ফলন পাওয়া যায়। উপজেলার চরাঞ্চলসহ ফসলি জমিতে চাষ শুরু হওয়ায় কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা ও কৃষি বিপ্লব হওয়ার সাথে সাথে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করছি।

সম্প্রতি