যশোরের কেশবপুরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজা অর্চনার একটি বটগাছ টেন্ডার ছাড়াই কেটে মজিদপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে অন্যের জমি জবর দখল করার অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার বাউশলা ও মজিদপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের পিছনে হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি পূজা অর্চনার বটগাছ ছিল। স্থানীয় হিন্দু ধর্মালম্বরা একটিকে মানিক গাছ বলে এরনিচে বিভিন্ন সময়ে পূজা অর্চনা করতো। দীর্ঘদিন আগে ওই ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভবনটি ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়ে। ফলে সরকার ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নতুন ভবন নির্মাণে প্রায় ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। গত ৮ ডিসেম্বর প্রধান অতিথি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন এর নবনির্মিত ভবনের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন। এসময় তার সাথে ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরিফ নেওয়াজ, উপজেলা প্রকৌশলী নজিবুল হক প্রমুখ।
এদিকে, গত ১০ ডিসেম্বর ইউনিয়ন ভূমি অফিস কর্তৃপক্ষে ভবন নির্মাণের কথা বলে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা অর্চনার বটগাছটি কাটা শুরু করে। প্রতাপপুর ওয়ার্ড মেম্বার আজিবার রহমান বলেন, গাছ কাটায় আমার কোনো হাত নেই। শুনেছি উপরিমহলের নির্দেশে ইউপি চেয়ারম্যান বটগাছটি কাটছেন।
মজিদপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দাতা গাজী গোলাম সরোয়ার বলেন, ১৯৭৯ সালে আমার পিতা মাদার গাজী ১৪ শতক জমির মধ্যে ১৩ শতক জমি ভূমি অফিসের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়। ওই জমিতে আমাদের একটি রাইস মিল ছিল। অবশিষ্ট ১ শতক জমিতে দোকান ঘর নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করা হতো। কিন্তু ভূমি অফিস আমাদের জমিসহ পেছনের বটগাছটি টেন্ডার ছাড়াই কেটে নিচ্ছে। ফলে ওই বটগাটিকে ঘিরে হিন্দু ধর্মালম্বরা যে পুজা অর্চনা করতো, তা বন্ধ হয়ে যাবে।
এ ব্যাপরে মজিদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর পলাশ বলেন, এসিল্যান্ড স্যার গাছটি আমাকে কেটে রেখে দিতে বলেছে। যে কারণে কাটা হচ্ছে।
বাউশলা ও মজিদপুর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ভবন নির্মাণের স্বার্থে গাছটি কাটা হচ্ছে। তবে বিক্রির জন্য নয়। তাছাড়া জমি দাতা গাজী গোলাম সরোয়ার যে অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়। তারা দীর্ঘদিন খজনা না দেয়ায় ওই ১ শতক জমি জেলা প্রশাসকের নামে রেকর্ড হয়ে যায়। তারা যদি মামলা করে কোনোকালে জমি ফিরে পায় তখন মালিকানা দাবি করতে পারবে।