ডেঙ্গু: আরও ৪১১ জন ভর্তি, মৃত্যু ৩

মোট হাসপাতালে ভর্তি ৯৯,৪৯৩ জন, মৃত্যু ৪০৪ জন

বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

ডেঙ্গুতে আরও ৪১১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৯৯ হাজার ৪৯৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৫০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬১ জন, ঢাকা বিভাগে ৫৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৯৯ জন, ঢাকা দক্ষিণে ৭০ জন, খুলনা বিভাগে ২৬ জন, ময়মনসিংহে ২০ জন, রাজশাহী বিভাগে ২১ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন ও সিলেট বিভাগে ৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

ভর্তিকৃতদের মধ্যে ৫ বছর বয়সের ২৪ শিশু, ৬-১০ বছর বয়সের ১৬ জন, ১১-১৫ বছর বয়সের ১৮ জন, ১৬-২০ বছর বয়সের ৪১ জন, ২১-২৫ বছর বয়সের ৭১জন,২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সের ৫৪ জন, ৩১-৩৫ বছর বয়সের ৫২ জন, ৩৬-৪০ বছর বয়সের ৩৯ জন, ৪১-৪৫ বছর বয়সের ২৩ জন ও ৭৬-৮০ বছর বয়সের ১ জনসহ বিভিন্ন বয়সের ৪১১ জন বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এখনও সারাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১৪৩৬ জন ভর্তি আছেন।

কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশারের দেয়া তথ্য মতে, ডেঙ্গু বাংলাদেশের জন্য একটি অন্যতম জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন,অপতিল্পিত নগরায়ন এবং জনসচেতনতার অভাবের ফলে এডিস মশাবাহিত এ রোগের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে।

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে যা জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করে। আগাম ব্যবস্থা না নেয়ায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেছে। ২০০০ সালের দিকে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ প্রথম ধরা পড়ে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এর প্রকোপ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

বর্তমানে ডেঙ্গু শুধু ঢাকায়ই সীমাবদ্ধ নেই বরং সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ডেঙ্গুর জন্য দায়ী মূলত এডিস এজিপ্টি এবং এডিস অ্যালবোপিক্টাস প্রজাতির মশা। এগুলো সাধারণত দিনের বেলায়, বিশেষ করে সকাল ও সন্ধ্যার সময় মানুষকে কামড়ায়। এখন ডেঙ্গু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাতেও কামড়ায়।

এডিস মশা সাধারণত পরিষ্কার জমে থাকা পানিতে ডিম পাড়ে। যেমন- ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের পাত্র, ফ্রিজের ট্রে, এসির পানির জমানো স্থানেও ডিম পাড়ে। অপরিকল্পিত নগরায়ন ও ছোট শহরে অধিক জনসংখ্যার কারণে প্রচুর পরিমাণে ছোট-বড় পাত্র তৈরি হয়, যার মধ্যে পানি জমা হয়ে মশার বংশবৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করছে।

প্লাস্টিকের প্রচুর ব্যবহারের ফলে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের প্লাস্টিকের পাত্র। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- প্লাস্টিকের বোতল, কাপসহ ইত্যাদি। এসব পাত্রের বৃষ্টি হলেই কম-বেশি পানি জমা হয় এডিস মশার প্রজননের জন্য আদর্শ জায়গা তৈরি করে।

বাংলাদেশের গ্রাম থেকে শহরে প্রায় সব জায়গায় অপকিল্পিত নগরায়ন ও দুর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের অভাবে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকে, যা মশার বংশবৃদ্ধির ক্ষেত্র তৈরি করে। শহরে উঁচু ভবন ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আলো-বাতাস চলাচলে কম হওয়ায় মশার সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে তাপমাত্রা ও আদ্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে যা ডেঙ্গু সংক্রমণের জন্য অত্যন্ত সহায়ক পরিবেশ তৈরি করছে।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

» চাকরি স্থায়ী হচ্ছে না চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্মচারীদের, কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ

» পীরগঞ্জে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিশুর মৃত্যু

» র‌্যাব কর্মকর্তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে স্বর্ণালঙ্কার লুট

» পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নেমেছে ৮ ডিগ্রিতে, বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ

সম্প্রতি