image

দামুড়হুদায় মাঠ জুড়ে সরিষার ফুলের পেখম

শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, দামুড়হুদা ( চুয়াডাঙ্গা)

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার গ্রামীণ জনপদে চোখ মেলেছে হলুদ রং এর চির চেনা সরিষার ফুলের কুঁড়ি। বিভিন্ন মাঠে সরিষার হলুদ ফুল ফুটে পেখম মেলেছে। সরিষা ক্ষেতে হলুদ আর হলুদ রঙের মাখামাখি। হলুদ রঙের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরে ওঠে মন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরিষা আবাদ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে মৌসুমী মৌমছিদের তৎপরতা।

এছাড়া সরিষা চাষে রয়েছে দিগুণ লাভ। জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধির জন্য এর ফুল ও পাতা ঝড়ে তৈরি করা হয় জৈব সার। গ্রামীণ জনপদের গেরস্তরা সারা বছরের ভৈজ্য তেলের জোগান দিতে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি সরিষা চাষের দিকে ঝুকে পড়ে উপজেলার শিবপুর গ্রামের রেজাউল বলেন, গত বছর সরিষা আবাদ করে সরিষার ফলন ভাল পেয়েছি এবং বাজার দরও ভাল ছিল। প্রতিবছর সরিষা চাষ করি নিজেদেও ভৈজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে। কার্তিক মাসে সরিষা বুনানী করেছি।

আগাম বুনানীর কারণে সরিষায় ফুল আসা শুরু হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহওয়া অনুকুলে থাকলে সরিষার ফলন ভালো হবে এই আশায় বুক বেঁধেছি। আরো বেশি লাভের আশা করছি। জয়রামপুর গ্রামের ছাঁওার বলেন, মৌসুমের শুরুতেই ভালো বীজ শনাক্ত করে সঠিক সময়ে বীজ রোপণ করে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে রোগ নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন প্রকার সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করে আগাম ফলন ফলিয়ে তা বাজার জাত করতে পারলে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে অধিক লাভ করা সম্ভব হবে। এক বিঘা সরিষা চাষ করতে খরচ হয় এক থেকে দেড় হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে বিঘায় ৪-৫ মণ সরিষা উৎপাদন হয়। অন্যান্য ফসল চাষ করে প্রতি বিঘায় যে পরিমাণ লাভ হয় তার চেয়ে ওই পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ করে দিগুণ লাভ করা যায়। হলুদ ফুলে ভরতে শুরু করেছে আগাম বুনানী করা সরিষা ক্ষেত। হলুদ ফুলে মৌমাছির আনা গোনা বেড়েছে।

মৌমাছিরা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। তবে এলাকার সচেতন একাধিক সরিষা চাষীরা বলেন, দেশের অনান্য স্থানে সরষে ফুল থেকে বিশেষ কায়দায় মধু সংগ্রহ করে না কেউ। সংগৃহীত এই মধু রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়ে থাকে। বছরের নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সরষে ফুল থেকে মধু সংগ্রহ হয়। এ সময়ে মৌচাষি এ জন পদেও বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতি মধু আহরণ করতে পারেন। চলতি বছর উপজেলার বিভিন্ন মাঠে সরিসার ফুল পুটতে শুরু করেছে। মৌচাষিরা সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করলে সরিসা ফুলে দ্রুত পরাগায়ান ঘটে। যা সরিষার ফলনে বৃদ্ধি করে। এ জনপদে সরষে মাঠে মৌ চাষিরদের আনা গোনা না থাকার কারনে প্রতিবছর প্রাকৃতিক ভাবে মৌমাছির দল মধু নিয়ে ঝোপ ঝাড়ে বাসা বেঁধে তাদের বংশ বিস্তার করে। আর মাঠে ঘাটে নিয়মিত চলা ফেরা করা রাখালরা তা থেকে মধু সংগ্রহ কওে মাঠে বসেই তা সবাই মিলে সাবাড় করে দেয়। তারা মধু সংগ্রহে পারদর্শি না হওয়ায় মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে সিংহ ভাগ মধু নষ্ট করে ফেলে আর সেই সাথেও চাকের মৌমাছি মেওে ফেলে। এলাকার জমি বেলে, দোআশ হওয়ায় পানি ধারণের ক্ষমতা কম। পানি ধারণ ক্ষমতার জন্য জমিতে জৈব সারের প্রয়োজন। সরিষা চাষ করলে খাবার তৈলের চাহিদা পূরণসহ পাতা ও ফুল পড়ে জৈব সার তৈরি করে জমির উর্বও শক্তি বৃদ্ধি করে। মৌমাছি ফুলে আসলে ফলন যেমন বৃদ্ধিপায়। মৌমাছি শুধু মধুই সংগ্রহ করে না ফসলের জন্য ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ মেরে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষকদের সহয়তা করে থাকে। ফলে অনেক কৃষকেরা এখন ধান ও অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি সরিষা চাষের দিকে ঝুকে পড়ছে। সরিষা দিচ্ছে তৈল, সঙ্গে দিচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দয সরিষা উঠলে নাতি- নাতনির জন্য প্রতিবছর খাঁটি সরিষার তেল ভওা খাওয়া জন্য ও শরীরে মাখার জন্য ব্যবাহার কওে আসছি। সরিষার খাঁটি তেলের প্রকৃত সাধই আলাদা

সরিষা চাষীদের দাবী যুগ যুগ ধরে গ্রামীণ জনপদের গেরস্তরা প্রতিবছর তাদের পরিবারের ভৈজ্য তেল ও সংসারের স্বচ্ছতা ধরে রাখতে সরিষার আবাদ তাদের কাছে জনপ্রিয়তার কোন কমতি নেই। দেশে খাঁটি সরিষার তেল উৎপাদনে ও দেশ গড়তে সরিষা চাষীরা আগ্রনী ভ’মিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে। এ আবাদে চাষীদের আরও উৎসাহ দিলে সারা বছর পাওয়া যাবে খাঁটি ভৈজ্য তেল আর মধুর অফুরন্ত ভান্ডার।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি