আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার রহিমাপুর চাকলা গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র বর্মন ও তার স্ত্রী সুবর্না রানীকে জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করার ঘটনার প্রধান আসামি মোরছালিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কুড়াল ও ছোড়া উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে ঘাতক মোরসালিন শুক্রবার, (১২ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকেলে রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জান্নাতুন নেছার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। টাকার জন্যই দু’জনকে হত্যা করা হয়েছে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা দম্পতিকে হত্যার পর ফেলে যাওয়া স্যান্ডেলের সূত্র ধরে পুলিশ টাইলস মিস্ত্রি মোরছালিনকে তারাগঞ্জ উপজেলার আলমপুর খিয়ারের জুম্মা গ্রামে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাবার নাম রুহুল আমিন। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক মোরসালিন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এরপর আসামিকে নিয়ে তার দেখানো স্থানে নিয়ে যাওয়ায় পর পানির নিচ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কুড়াল ও ছোড়া উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, আসামি মোরছালিন মুক্তিযোদ্ধা দম্পতির বাসায় টাইলস্ লাগানোর কাজ করাকালীন বাড়িতে অনেক টাকা আছে ভেবে প্রথমে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সুবর্না রানী ও পরে মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্রকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে।
এদিকে রংপুরের পুলিশ সুপার আসামি মোরছালিনকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধার অভিযান তদারকি করতে ওই এলাকায় যান। সেখানে স্থানীয় জনসাধারণের সহায়তায় খালের পানিতে ফেলে দেয়া কুড়াল ও ছোড়া উদ্ধার করার পর সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। তিনি বলেন, গত ৬ ডিসেম্বর রাতে হত্যাকান্ডের পর পুলিশ খুনিদের চিহ্নিত করার জন্য ব্যাপকভাবে অভিযান চালায়। মাত্র ৬ দিনের মধ্যেই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা মোরসালিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে রংপুরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা কালে সে অকপটে হত্যা করার বিষয়টি স্বীকার করে জানায়, টাকার জন্য তাদের হত্যা করা হয়। কিন্তু হত্যা করার পর আলমারি ভেঙে টাকা পয়সা পাওয়া যায়নি বলে দাবি করলেও পুরো বিষয় আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, আসামি মুক্তিযোদ্ধা দম্পতিকে হত্যা করার পর ভেবেছিল যেহেতু কেউ দেখেনি আর সে যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা কেউ কোনোদিন জানতেই পারবে না। সে কারণে হত্যা করার পর তার বাড়িতেই অবস্থান করছিলো। পুলিশ সুপার জানান, আপাতত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মোরসালিন জড়িত ছিলো, সেই মুক্তিযোদ্ধা দম্পতিকে হত্যা করেছে। তারপরও আরও অনুসন্ধান ও তদন্ত অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য গত ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা দম্পতি যোগেশ চন্দ্র ও তার স্ত্রী সুবর্না রানীর জবাই করা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে শোভন বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করে।