গাজীপুরের শ্রীপুরে গজারি বন থেকে অজ্ঞাত নারীর লাশের পরিচয়সহ হত্যাকারী রাসেলকে (২৪) গ্রেপ্তার এবং হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। শুক্রবার, (১২ ডিসেম্বর ২০২৫) সন্ধ্যা ৬টায় শ্রীপুর থানার ওসি নাসির আহমদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের পাচুলটিয়া (গুপ্তবাইদ) গজারি বাগানের বুলু সরকারের আবাদী জমি থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। অজ্ঞাত ওই নারীর লাশ উদ্ধারের সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম, গলায় উড়না পেঁচানো এবং ডান পায়ের মাংস বিহীন হাড় ছিল, নাক ও কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। পরনের বোরখার কাপড় দিয়ে মুখের ওপর আগুনে পোড়া দাগ ছিল।
ভিকটিম নারী সুমা আক্তার (২৫) নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার কচুয়ারচর গ্রামের মৃত বাবুল মিয়ার মেয়ে। সে শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া (ফখরুদ্দিন মোড়) আমান উল্লাহর বাড়িতে ভাড়া থেকে বৈরাগীরচালা এলাকার ঢাকা গার্মেন্টস পোশাক কারখানায় চাকরি করতো।
গ্রেপ্তার রাসেল শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের পাচুলটিয়া কামাল হোসেনের ছেলে। সেও বৈরাগীরচালা এলাকার ঢাকা গার্মেন্টস পোশাক কারখানায় চাকরি করতো। শুক্রবার, দুপুরে তাকে আদালতে উঠানো হলে সে নারী পোশাক শ্রমিককে হত্যার কারণসহ হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
শ্রীপুর থানার ওসি নাসির আহমদ বলেন ভিকটিম নারী পোশাক শ্রমিক সুমা আক্তার তিন মাস আগে শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া (ফখরুদ্দিন মোড়) আমান উল্লাহর বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় বৈরাগীরচালা এলাকার ঢাকা গার্মেন্টস পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়। আসামি রাসেল ও ভিকটিম সুমা আক্তার একই পোশাক কারখানায় চাকরি করায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে তাদের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হলে ভিকটিম কনসেপ্ট হয়। রাসেলকে বিয়ের কথা বললে সে বিয়ে করবে বলে সময় পার করে। এর মধ্যে গত রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সুমা আক্তারকে গোসিংগার পাচুলটিয়া (গুপ্তবাইদ) গজারি বাগানে নিয়ে গেলে তাদের মধ্যে বিয়ে নিয়ে তর্ক হয়। একপর্যায়ে আসামি রাসেল সুমা আক্তারকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল, ঘুষি, লাথি মেরে এবং গলায় উড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিমের মা মমতা বেগম (৭০) শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ আসামি রাসেলকে গ্রেপ্তার করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করে। গত রোববার সন্ধ্যা ৭টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার মধ্যে যে কোনো সময় আসামি পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ ওই স্থানে ফেলে রাখে এবং আলামত গোপন করার জন্য পরনের বোরখার কাপড় দিয়ে মুখ আগুনে পুড়িয়ে দেয়।