শীত মৌসুম এলেই সৈয়দপুরে রেললাইন জুড়ে পুরাতন গরম কাপড়ের মার্কেট বসে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সব শ্রেনির ক্রেতারা ভীড় করে কেনাকাটা করেন। এতে করে ট্রেন চলাচলের সময় ঘটতে পারে প্রাণহানির ঘটনা। অভিযোগ রয়েছে, রেলওয়ে ষ্টেশনের অসাধু কর্মচারীরা অর্থ আদায় করায় ঝুঁকি থাকলেও তা আমলেই নিচ্ছেন না। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই চলছে গরম কাপড়ের পুরাতন মার্কেট।
শহরের পৌর মার্কেটের ব্যবসায়ী মনোয়ার ইকবাল বলেন, শীত মৌসুম শুরু হলেই শহরের রেললাইন সংলগ্ন এলাকায় অনেক মানুষ পুরাতন গরম কাপড় বিক্রয় শুরু করেন। এতে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের সমাগমও ঘটে প্রচুর। শীতের তিব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রেললাইনের পাশে দোকানীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে। দোকানের ভিড়ে রেললাইনই হয়ে ওঠে মার্কিন। এ অবস্থায় যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার বিষয়টি ভেবে দেখছেন না কেউ। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ও দুর্ঘটনা এড়াতে রেললাইন সংলগ্ন সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানান তিনি। রেললাইন মার্কটের দোকানিরা বলেন, রেললাইনের পাশে দোকান বসানো আসলেই ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু সংসারের কথা ভেবে ঝুঁকির মাঝেও দোকান বসানো হয়েছে। তাছাড়া বাজারে এক একটি দোকানের ভাড়া ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। সেখানে রেললাইনের পাশে দোকান বসালে রেলওয়ে স্টেশন কর্মচারীদের খুশি করলেই ব্যাবসা করা যায়। তাই পেটের তাগিদে ব্যাবসা করছি।
ট্রেনচালক মো. সবুজ বলেন, সৈয়দপুর শহরের ১নং রেল গুমটি থেকে রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাতে হয়। রেললাইনের দুপাশ ঘেঁষে গড়ে উঠেছে পুরাতন গরম কাপড়ের মার্কেটসহ হোটেল-রেস্তোরা ও প্লাস্টিক সামগ্রীর কয়েক শত দোকান। পার্বতীপুর থেকে সৈয়দপুর রেলপথে যে গতিতে ট্রেন চলাচল করার কথা তা চালানো সম্ভব হচ্ছে না। কারণ দুর্ঘটনা এড়াতে ধীরগতিতে ট্রেন চলাতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রেললাইন সুরক্ষায় লাইনের দুপাশে বেড়িয়ার দিয়েছেন রেলকর্তৃপক্ষ। কিন্তু দোকানিরা সেই বেড়িয়ার ঘেঁসেই দোকান ঘর নির্মাণ করেছেন। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি। সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ওবায়দুল ইসলাম রতন বলেন, যারা স্টেশন মাস্টারের কথা বলে অবৈধভাবে বসা দোকানিদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে তা তার জানা নেই। তবে ট্রেন চলাচলের সুবিধা নিশ্চিত ও দুর্ঘটনা এড়াতে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদের করতে উপর মহলকে অবগত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুন্নবী বলেন, রাজনৈতিক কিছু নেতার দাপট দেখিয়ে দোকানিরা রেললাইন ঘেঁষে দোকানপাট গড়ে তুলেছেন। যা ট্রেন চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটতে পারে জেনেও দোকানিরা দোকান বসিয়েছেন। রেলওয়ের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলে অবৈধ সব দোকানপাট গুড়িয়ে দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।