সিংগাইরে বিষের বোতল নিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, অর্থ ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎসহ প্রতারণার অভিযোগ তুলে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করছেন এক তরুণী। এর মধ্যে অভিযুক্ত ওই তরুণের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক কারবারে জড়িত থাকার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এসেছে।
অভিযুক্ত তরুণ উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের প্রবাসী কাউছারের ছেলে জিসান (২০)। ভুক্তভোগী তরুণীর বাড়ি পার্শ্ববর্তী গ্রামে বলে জানা গেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জিসান ওই তরুণীকে স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে টানা ৭ মাস একত্রে ঘর সংসার করে। এরপর সে তার কাছ থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করে সটকে পড়ে।
ভুক্তভোগী তরুণী জানান, প্রতারিত হয়ে গত ৯ নভেম্বর সকাল থেকে তিনি বিয়ের দাবিতে জিসানের বাড়িতে অবস্থান করছেন। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভিকটিম ধল্লা লক্ষ্মীপুর গ্রামের ওই বাড়িতেই আছেন। শুরু থেকেই প্রেমিকের বাড়িতে তিনি বিষের বোতল সঙ্গে নিয়ে অবস্থান করছেন বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছেন।
এদিকে, অভিযুক্ত জিসানের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র ও ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগও সামনে ওঠে এসেছে। ভুক্তভোগী তরুণীর দাবি, জিসানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে থাকা মেসেঞ্জার কথোপকথনে (ক্ষুদে বার্তায়) ইয়াবা লেনদেন এবং আগ্নেয়াস্ত্র (পিস্তল) বিক্রির প্রস্তাবের তথ্য পাওয়া গেছে। অন্য এক বার্তায় ‘ফয়সাল’ নামের জনৈক ব্যক্তির কাছে এক লাখ ২০ হাজার টাকায় পিস্তল বিক্রির প্রস্তাব দেওয়ার কথাও বার্তায় দেখা গেছে বলে তিনি দাবি করেন।
তরুণীর অভিযোগ, বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও অর্থ আত্মসাতের পরও তিনি আইনগত বা সামাজিক কোনো সহায়তা পাননি। কোনো স্বেচ্ছাসেবী বা সামাজিক সংগঠনও তার পাশে দাঁড়ায়নি বলে তিনি দাবি করেন। বর্তমানে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান।
ভুক্তভোগী তরুণী জিসানের বাড়িতে অবস্থান নেয়ার পর থেকেই তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানান। সেইসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় ওয়াজুদ্দিন নামের এক কথিত রাজনৈতিক নেতা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযুক্ত জিসান ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা আক্তার বলেন, ভিকটিম আমাদের কাছে কোনো আইনি সহায়তা চাইলে সাপোর্ট দিব।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার নলেজে নাই। অফিসার পাঠিয়ে ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে ব্যাপারটি খতিয়ে দেখা হবে।
