সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। জাহাজ মালিকদের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব জাহাজের টিকেট আগাম বিক্রি হয়ে গেছে। প্রতিদিন অন্তত তিন হাজার পর্যটক যেতে আগ্রহী হলেও সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দৈনিক সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক বহনের অনুমতি রয়েছে। বর্তমানে কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন ছয়টি জাহাজে প্রায় দুই হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন যাচ্ছেন। গত ১৩ দিনে অন্তত ২১ হাজার পর্যটক দ্বীপটি ভ্রমণ করেছেন।
নভেম্বর মাসে রাতযাপনের অনুমতি না থাকায় পর্যটক কম ছিল। তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাতযাপনের সুযোগ থাকায় পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। জাহাজ মালিকদের সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন, কিছু জাহাজের টিকেট জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত বিক্রি হয়ে গেছে।
পরিবেশ সুরক্ষায় সরকারের ১২ দফা নির্দেশনা অনুযায়ী কিউআর কোডযুক্ত টিকেট ছাড়া কাউকে জাহাজে উঠতে দেয়া হচ্ছে না। প্লাস্টিক ও পলিথিন বহন নিষিদ্ধসহ দ্বীপে শব্দদূষণ, মোটরচালিত যান চলাচল ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ যাতায়াত, নিরাপত্তা ও পরিবেশ সংরক্ষণে নজরদারি করছে।
জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ‘৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো জাহাজের টিকেট অবিক্রিত নেই। এমভি কর্ণফুলী জাহাজের টিকেট আগামী ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। অন্য পাঁচটি জাহাজের প্রায় ৫০ শতাংশ টিকেটও ইতোমধ্যে বিক্রি হয়েছে।’
পরিবেশ অধিদফতরের কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা বলেন, দ্বীপ ভ্রমণে সরকারের ১২ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কিউআর কোড সংযুক্ত টিকিট ছাড়া কাউকে জাহাজে উঠতে দেয়া হচ্ছে না। দৈনিক দুই হাজারের বেশি পর্যটক যেতে পারবেন না। যাত্রীরা প্লাস্টিক বা পলিথিন বহন করছেন কিনা, তা জাহাজে ওঠার আগেই তদারকি করা হচ্ছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, সেন্টমার্টিন যাতায়াত ও দ্বীপে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণেও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন অনুযায়ী, দ্বীপসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।