image
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

মোরেলগঞ্জে ইংরেজ শাসন আমলের স্মৃতি ঐতিহাসিক কুঠিবাড়ি সময়ের দাবি সংরক্ষণের

মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ইতিহাস ঐতিহ্যের ইংরেজ শাসন আমলের রবার্ট মোড়েলের স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়িটি কালের বিবর্তে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। এ জনপদের মানুষের সময়ের দাবি সরকারিভাবে বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য এখুনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের একটি টিম ইতোমধ্যে সরজমিন পরিদর্শন করলেও পরবর্তীতে হয়নি কোনো ব্যবস্থা।

সরেজমিনে জানা গেছে, ইংরেজ শাসন আমলে প্রায় ৩শ’ বছর পূর্বে ১৮৫৭ সালে সিপাই বিপ্লবকে দমন করে ইংরেজ শাসকরা এ দেশে তাদের শাসন দৃঢ় করার লক্ষে যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করে তার মধ্য এ কুঠিভিত্তিক শাসনব্যবস্থা ছিল অন্যতম। এরি অংশ হিসেবে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে গড়ে তোলা হয় কুঠিবাড়ি এ ভবনটি। ১৮৪৯ সালে ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির প্রতিনিধি রবার্ট মোরেলের মৃত্যুর পরে তার স্ত্রী মিসেস মোড়েল তার ২ ছেলে রবার্ট মোরল ও হেংড়ি মোরলকে নিয়ে সুন্দরবন পরগোনার পানগুছি নদীর পশ্চিম পাড়ে তীরবর্তি জমি বন্দোবস্থ নিয়ে শুরু করে নীল চাষি। আর এ নীল চাষি প্রজাদের থেকেই শুরু হয় তাদের জমিদারি প্রথা এবং কুঠিবাড়ি ভবন নির্মাণ করে সেখানে আদায় করা হতো প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা। নির্মিত এ ভবনের কুঠিবাড়ি তলদেশে একাধিক কক্ষে অর্শশালা, গোপন সুরঙ্গ থেকে সরাসরি নামা যেত। অর্শশালা কুঠিবাড়ি অর্ভান্তরে আনন্দকক্ষ বা নাছঘর, গুদামঘর, নির্যাতন কক্ষ ও লাঠিয়াল বাহিনীর জন্য পৃথক পৃথক কক্ষ ছিল। মূল ভবনটির পাশে ছিল কাচারীঘর, অবাধ্য শ্রমিক নীল চাষিদের বেঁধে রাখার ঘর ও কৃষি কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ রাখার ঘর এরকম একাধিক কক্ষ ছিল কুঠিবাড়ীর ভবনটিতে। তৎকালীন রবার্ট মোরলের নাম করনের ওপরে মোরেলগঞ্জ বন্দর পরবর্তীতে মোলেরগঞ্জ উপজেলায় রূপান্তিত হয়। এ উপজেলার প্রাচীনতম ইতিহাস ঐতিয্যের স্মৃতি বিজরিত কুঠিবাড়ি ভবনটি যুগের পর যুগ ধরে জড়াজীর্ণ অবস্থায় এ ভবনের বিভিন্ন স্থানের পলেস্তরা খসে পড়ে ছাদ ভেঙে পড়েছে অনেক জায়গা থেকে। বর্তমানে এ ভবনটি ভূমিকম্পে ধসে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রয়েছে স্থানীয়রা। শুধুমাত্র কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে রয়েছে কুঠিবাড়ীর এ ভবন। স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের দাবি কুঠিবাড়ি এ ভবনটি সংস্কার করে সংরক্ষণের জন্য পাশাপাশি জাদুঘর নির্মাণ করা হলে একদিকে সরকারিভাবে বছরে রাজস্ব আয় হবে, অন্যদিকে এ অঞ্চলে ইতিহাস ঐতিয্যেকে পরবর্তী প্রজন্মের নিকট ধরে রাখতে এখন-ই পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন অভিজ্ঞজনরা।

এ সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল্লাহ বলেন মোরেলগঞ্জ উপজেলার কুঠিবাড়ি একটি ঐতিহাসিক স্থান এবং এখানে একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন আছে। এটা দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে অবহেলায় পড়ে রয়েছে এক কথায় বলা যেতে পারে পরিত্যক্ত অবস্থায়। এ ঐতিহাসিক নিদর্শনকে সংরক্ষণের জন্য ইতোমধ্যে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চিঠি লেখা হয়েছে, আশা করি শিঘ্রই এটি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

» আগামী নির্বাচন শুধু ক্ষমতার পালা বদল নয়, বাংলাদেশের আগামী ১শ বছরের রূপরেখা -চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক

সম্প্রতি