image
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান -সংবাদ

রাবির দ্বাদশ সমাবর্তন উৎসবের আড়ালে অসন্তোষ

বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

তিনটি ব্যাচের প্রায় ছয় হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দ্বাদশ সমাবর্তন। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে শোভাযাত্রা, জাতীয় সংগীত ও আনুষ্ঠানিক আয়োজনে শুরু হওয়া এই সমাবর্তনে ক্যাম্পাসজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।

তবে সাবেক শিক্ষার্থীদের একাধিক দাবি অগ্রাহ্য করা এবং প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা নিয়ে দিনভর উঠেছে অভিযোগ।

সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ মাঠ থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর ঘুরে স্টেডিয়ামে গিয়ে শেষ হয়।

পরে অতিথিদের আসন গ্রহণ, জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। স্বাগত বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান।

সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদ ও ইনস্টিটিউটের মোট ৫ হাজার ৬৬৯ জন শিক্ষার্থীর ডিগ্রি উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট ডিনরা। সমাবর্তনের সভাপতি ও শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) শিক্ষার্থীদের হাতে ডিগ্রি তুলে দেন। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এস এম এ ফায়েজ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. মাঈন উদ্দিন এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মতিয়ার রহমান।

দুপুর আড়াইটায় আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।

সভাপতির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে এমন শিক্ষক দরকার, যারা শুধু পেশাগত দক্ষতায় নয়, বরং সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য দায়বদ্ধ নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে, সততার সঙ্গে নেতৃত্ব দিতে হবে।

তিনি শিক্ষার্থীদের পরিবার ও শিক্ষকদের অবদানের কথাও স্মরণ করেন।

সমাবর্তন বক্তা ইউজিসি চেয়ারম্যান এস এম এ ফায়েজ স্নাতকদের উদ্দেশে বলেন, অস্থিরতা ও চ্যালেঞ্জের মাঝেও চিন্তাভাবনা করে এগোতে হবে। প্রতিটি পরিস্থিতিকে সুযোগ হিসেবে নিতে হবে।

উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, জীবনের পথ সবসময় মসৃণ হবে না। ব্যর্থতা ও সন্দেহ আসবে, তবে এখান থেকে পাওয়া শিক্ষাই আপনাদের ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।

শিক্ষকদের পদচারণায়

উৎসবমুখর ক্যাম্পাস

সমাবর্তন ঘিরে স্টেডিয়ামের গ্যালারি, প্যারিস রোড ও বিভিন্ন একাডেমিক ভবনে গাউন ও মর্টারবোর্ড পরা স্নাতকদের পদচারণায় উৎসবমুখর হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। দীর্ঘদিন পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা, স্মৃতিচারণ ও ছবি তোলায় ব্যস্ত ছিলেন অনেকে।

পাঁচ বছর পর সমাবর্তনে দেখা হয় আবদুল্লাহ আল হাদি ও মোহাইমিনুল ইসলামের। হাদি পদার্থবিজ্ঞান এবং মোহাইমিনুল ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। একসময় তারা একই হলে পাশাপাশি কক্ষে থাকতেন।

ফাঁকা চেয়ার,

‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান

মূল ভেন্যু স্টেডিয়ামে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ আসনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই ছিল ফাঁকা। যখন বিভিন্ন জনের হাতে সনদ তুলে দেয়া হচ্ছিল তখন উপস্থিত স্নাতকদের একাংশ ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেয়।

একাধিক শিক্ষার্থী জানান, অতিথি নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে অসন্তোষ থেকে তারা মূল অনুষ্ঠান বর্জন করেন। স্নাতক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা অতিথি পুনঃবিবেচনাসহ একাধিক দাবি জানিয়েছিলাম। দাবি না মানায় সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠান বর্জন করেছি।

সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ না

দেয়ার অভিযোগ

সমাবর্তনে সাংবাদিকদের জন্য কোনো আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। যমুনা টেলিভিশনের রাজশাহী ব্যুরো প্রধান শিবলী নোমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে এমন পরিস্থিতি প্রথমবার দেখছেন।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি