সন্তান হিসেবে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের খোঁজখবর নেয়াতে কি কোনো অপরাধ হয়েছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তার মেয়ে খাদিজা ইয়াসমিন বিথী। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকার মহানগর হাকিম সারাহ্ ফারজানা হকের আদালতে রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। হাতিরঝিলে যুবদল নেতা আরিফ হত্যা মামলায় এদিন বিথীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আসামির রিমান্ড আবেদন বাতিল চেয়ে জামিন চান তার আইনজীবী বাদল মিয়া।
তিনি বলেন, ‘এজাহারে ৪৫ লাইনের পূর্ণাঙ্গ অভিযোগ উল্লেখ আছে। ১০ জনকে মামলায় আসামি করা হয়। এজাহারের ১৭ (নম্বর) লাইন থেকে ভিকটিমের পরিচয়। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শত্রুতার জেরে খুনের ঘটনা।’ এজাহারের বেশিরভাগ অংশ পড়ে শুনিয়ে আইনজীবী বাদল বলেন, ‘এতোবড় এজাহার বলার অর্থ কে কী করেছে, উল্লেখ আছে। ভদ্র মহিলার বাবাও এ মামলায় রিমান্ড খেটেছে। রিমান্ডে নেয়ার কারণ হিসেবে বলেছে, অস্ত্র উদ্ধার, সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামিদের গ্রেপ্তার ও মামলার সুষ্ঠু তদন্ত।
‘কে অস্ত্র সরবরাহ করেছে, কে ব্যবহার করেছে, ব্যবহার করে কার কাছে অস্ত্র রিটার্ন দিয়েছে সবই জানা গেছে। বাবা গ্রেপ্তার হয়ে জেলে আছেন। মেয়ের কাছে বাবা যাবে। বাবা অসুস্থ, ৬২ বছর বয়স। ওষুধ লাগবে কিনা। এ হচ্ছে তার অপরাধ। ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত নন। রিমান্ড বাতিল করে জামিন প্রার্থনা করছি।’
রিমান্ড আবেদনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন রাষ্ট্রপক্ষে কৌঁসুলি সৈয়দ গোলাম মর্তুজা ইবনে ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সুব্রত বাইন একাধিক মামলার আসামি। ফ্যামিলির কাছে শেয়ার কওে কোথায় যান, কাকে কিলিং করেন। ফ্যামিলি একটা অ্যাকাডেমি। ‘হত্যাকা-ের সঙ্গে মেয়ে কোনো না কোনোভাবে জড়িত। বাবার মত মেয়েও অপরাধী। রিমান্ডের যৌক্তিকতা আছে। ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’
জবাবে আসামির আইনজীবী বাদল মিয়া বলেন, ‘সুব্রত বাইন ২০২২ সালের ২৭ মে থেকে আয়নাঘরে অন্তরীণ। গত বছরের ৬ আগস্ট রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে মেয়ের কাছে আসে।’
এরপর কথা বলার অনুমতি চান বিথী। অনুমতি দিলে তিনি বলেন, ‘যেই মামলায় বাবাকে রিমান্ডে নেয়, আমাকেও ডাকা হয়। ৫ দিন কল করে ডিবি পুলিশ ডেকে নেয়। সেখানে কাগজে লিখিত জবানবন্দি দিয়ে আসছি। বাবা নিখোঁজ হন। ৬ আগস্ট (গত বছরের) তাকে পায়।’
একদশক ধরে ভারতের কারাগারে অবস্থান করা সুব্রত বাইনকে আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দিকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তুলে দেয় বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর আসে। খবরে বলা হয়, এরপর থেকে তিনি বাংলাদেশের গোপন কারাগারে ছিলেন, যা আয়নাঘর নামে পরিচিত।
৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর আয়নাঘর থেকে মুক্তি পান সুব্রত বাইন। এরপর গত ২৭ মে তাকে কুষ্টিয়া থেকে গ্রেপ্তারের খবর দিয়েছিল আইএসপিআর।
শুনানিতে আসামি বিথী বলেন, ‘১৫ ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি।