তিস্তা সেচ প্রকল্পনাধীন শুস্ক মওসুমে বোরো ধান ক্ষেতে পানি সরবরাহের জন্য সৈয়দপুরে ইরিগেশন সেচনালা নির্মাণ করা হচ্ছে। এ কাজ বাস্তবায়ন করছে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ড পওর (পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষণ) বিভাগ।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, এসফাইভডি (ঝউ) ক্যানেলের টি১, টি২, টি৩ ও টি৪ নামে চারটি সেচনালার কাজ চলছে। এসব সেচনালার লাইনিং প্লাস্টার, লাইনিং কাস্টিং ও মেঝে ঢালাই করা হচ্ছে।
টি৩ এস৫ডি ইরিগেশন সেচনালা নির্মাণের কাজ সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লাইনিং প্লাস্টার করার কথা ১২ মিলিমিটার। কিন্তু সেখানে ঢালাই করা হয়েছে ৮ মিলিমিটারের কাছাকাছি। লাইনিং কাস্টিং ৭৫ মিলিমিটার করার নির্দেশনা সিডিউলে থাকলেও সেখানে করা হচ্ছে ৬০ মিলিমিটারের একটু বেশি। মেঝে ঢালাইয়েও একই অবস্থা। বিশেষ করে লাইনিং প্লাস্টার করা হচ্ছে বালুতে যৎসামান্য সিমেন্ট মিশিয়ে। এতে করে হাতের আঙ্গুলের চাপে লাইনিং প্লাস্টার খুলে যাচ্ছে। পলিথিন ব্যবহার করা হয়েছে সবচেয়ে নি¤œমানের। একই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে টি১, টি২ ও টি৪ ইরিগেশন সেচনালা নির্মাণেও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রকৌশল বিজ্ঞান মতে টেকসই সেচনালা নির্মাণ করতে হলে ঢালাই কাজে ২.৫ মিলিমিটার আয়তন, গাঁথুনিতে ২.২ মিলিমিটার আয়তন ও প্লাস্টারে ১.০৮ আয়তনের বালু মেশাতে হবে সিমেন্টের সাথে। এক্ষেত্রে মাটি মিশ্রিত একেবারে চিকন বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। এদিকে কর্তৃপক্ষের দেয়া নিয়ম মতে ঢালাইয়ে পৌনে এক ইঞ্চি ক্রাশিং পাথর ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সেখানে মাটি মিশ্রিত অধৌত গোল ও ভুতুভাঙ্গা পাথর ঢালাইয়ে দেয়া হচ্ছে। আর ঢালাইয়ে সিমেন্টের পরিমাণও অনুপাত মতো দেয়া হচ্ছে না বলে একাধিক এলাকাবাসী অভিযোগে বলেছে। সেচনালার দুই পাশের মাটিও কমপ্যাক্ট করা হচ্ছে না। ফলে বর্ষা মওসুমে বৃষ্টির পানির তোড়ে সেচনালা ভেঙ্গে জমিতে মিশে যাবে বলে এলাকাবাসী আশংকা প্রকাশ করেছে।
ওইসব ইরিগেশন সেচনালা নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৬০ কাটি টাকার কাছাকাছি। কিন্তু কাজের মান নি¤œমানের হওয়ায় সরকারের পুরো টাকা জলে যেতে বসেছে। সাইকা বিল্ডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওইসব কাজ করছে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্র জানায়।
কাজের অনিয়ম বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে কথা হয় নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রেজার সঙ্গে। তিনি মুঠোফোনে বলেন, অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।