চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে শিমের থোকা থোকা বেগুনি রঙের ফুলে সেজেছে রাস্তার দুই পাশ। যা অপরূপ সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। এসব ফুলের সৌন্দর্য তুলে ধরছে আবহমান গ্রাম বাংলার এক অন্যরকম দৃশ্যকে। পৌষের হিমেল বাতাসে শিমের সবুজ পাতা ও বেগুনি রঙের ফুলের সঙ্গে দুলছে কৃষাণীর স্বপ্ন।
বাংলার প্রকৃতিতে বইছে এখন তীব্র শীতের আমেজ। এর মধ্যেই মাঠে মাঠে দেখা যায় নানা প্রকার শাকসবজীর সমারোহ। তবে বেগুনি রঙের মনোমুগ্ধকর ফুলগুলো নজর কাড়বে যে কারো।
গতকাল শনিবার বিকালে উপজেলার জৈষ্টপুরা গ্রামের বড়ুয়া পাড়া থেকে সূর্যব্রত বিল হয়ে বয়ে যাওয়া আমুচিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তার দুই পাশ জুড়ে দেখা গেছে শিম গাছের ডাল পালায় মাচাং ভরে গেছে। গাছগুলোয় শোভা পাচ্ছে হালকা বেগুনি রঙের থোকা থোকা ফুল। চলার পথে যে কেউ থমকে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছেন শীম ফুলের বেগুনি রঙের আভা। পাপড়ির নমনীয় কোমলতা, দৃষ্টিনন্দন বর্ণচ্ছটা নিয়ে প্রকৃতিকে যেন আরও সুন্দর করে রাঙিয়ে তুলেছে ফুলগুলো। এমন অনিন্দ্যসুন্দর মনকাড়া দৃশ্য কতই না চমৎকার! চোখ জুড়ানো ফুলগুলোও যেন পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
সবুজের সমারোহ ভেদ করে চলতি পথে দেখা হয় জৈষ্টপুরা গ্রামের গৃহবধূ মুন্নী মহাজন নামের এক কৃষাণীর সাথে। এবার রাস্তার পাশে ৭০-৮০ টি মাদায় শীম স্থানীয় জাতের শীম লাগিয়েছেন তিনি।
পরন্ত বিকালে শীম ক্ষেতে পরিচর্যা করতে আসা মুন্নী মহাজন বলেন, প্রতিবছর জুলাই মাসের শুরুতে বাজার থেকে বীজ কিনে রাস্তার পাশে মাদা করে বপন করা হয়। ও-ই বীজ থেকে চারা গজিয়ে গাছে রূপান্তরিত হয়ে ডালপালায় পরিপূর্ণ হয়ে ফুলে ফুলে ভরে গেছে মাচা। এর মধ্যেই কিছু কিছু গাছে শিম ধরতে শুরু করেছে। কয়েক দিনের মধ্যেই শিম উঠানো শুরু করব। শিম চাষে অন্য ফসলের চেয়ে খরচ কম হয়। আশা করছি ভালো ফলন পাওয়া যাবে। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে এই এলাকার অনেকেই।
তিনি আরো বলেন, এ অঞ্চলের দেশীয় জাতের শীম মানুষের কাছে খুব জনপ্রিয়। সাধারণত এই শীম মানুষ শুটকি দিয়ে রান্না করে খেয়ে থাকে। বিচিওয়ালা শীম নিরামিশ রান্নাও খুব জনপ্রিয়। যে কোনো মাছের সাথেও শীম তরকারী রান্না করা যায়। এছাড়া শীমের বিচিতে উচ্চ মানের প্রোটিন থাকায় ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য খুবই উপযোগী। শীতের সকালে পিয়াজ দিয়ে কচি শীমের ভর্তা একটি মুখরোচক খাবার।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে সবজির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে শীমের আবাদ ৩৫-৪০ হেক্টর।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহানুর ইসলাম বলেন, বোয়ালখালীর বিভিন্ন এলাকা শিম চাষের জন্য বেশ সম্ভাবনাময়ী। কৃষকেরা অন্যান্য সবজির পাশাপাশি জমিতে এবং রাস্তার দ্বারে পরিকল্পিত ভাবে শীম চাষ করলে লাভবান হওয়া যাবে। এটা শীতকালীন সবজি হলেও এখন প্রায় সব মৌসুমেই চাষ করা যায়। ভালো উৎপাদনের জন্য কৃষকদের সব ধরণের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। শিম চাষে এগিয়ে আসলে এ অঞ্চলের কৃষি ও অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে কৃষকেরা।
অর্থ-বাণিজ্য: অধিকাংশ শেয়ারে দাম বাড়লেও পতন থামেনি শেয়ারবাজারে
সারাদেশ: শিমের বেগুনি ফুলেই কৃষাণীর স্বপ্ন
সারাদেশ: মহানন্দা নেশাজাতীয় সিরাপ জব্দ