image

প্রবাসীর লাশ রেখে পালালেন বাবা মা ভাই

সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, মাদারগঞ্জ (জামালপুর)

জামালপুরের মাদারগঞ্জ পৌর এলাকাশ এক প্রবাসীর লাশ ১৯ দিন পর দেশে ফিরে এলে জানাযার সময় লাশ রেখে বাবা মা ভাই পালানোর ঘটনা ঘটেছে। সূদুর দুবাইয়ে কনস্ট্রাকশনের কাজ করতে গিয়ে মাথায় নির্মাণসামগ্রী পড়ে মারা যান যুবক আনোয়ার হোসেন (৩৮)। তার মৃত্যুর ১৯ দিন পর গত শনিবার রাতে মরদেহ গ্রামের বাড়ি জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার গাবেরগ্রামে আসে।গতকাল রোববার সকালে নিহত যুবকের বাবা, সৎমা ও সৎভাইয়েরা সেই লাশ ফেলে পালিয়ে যান।

প্রবাসী আনোয়ার হোসেন পৌর এলাকার গাবেরগ্রাম চৌরাস্তা মোড় শাজাহান প্রামাণিক ওরফে সাজা বাঘার ছেলে। জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে আনোয়ার হোসেন সূদুর দুবাই যান। সেখানে তিনি কনস্ট্রাকশনের কাজ করতেন। গত ৩ ডিসেম্বর দুপুরে ভবন নির্মাণের কাজ করার সময় ওপর থেকে নির্মাণসামগ্রী পড়ে আনোয়ার ঘটনাস্থলেই মারা যান। প্রায় ১৯ দিন পর তার মরদেহ শনিবার রাতে নিজ বাড়িতে আনা হয়। স্থানীয়রা সংবাদ কে বলেন, আনোয়ার হোসেনের বাবা শাজাহান প্রামাণিক দুটি বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর সন্তান আনোয়ার হোসেন। শাহজাহানের দ্বিতীয় স্ত্রীর তিন সন্তান। আনোয়ার হোসেনের ছোট দুটি সন্তান রয়েছে। তাদের নামে জমি দিতে হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিতে হবে ভয়ে শাজাহান, তার স্ত্রী ও ছোট ছেলে সাগর বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। বড় ছেলে সবুজ আহমেদ আগে থেকেই বাড়িতে ছিলেন না। এমন ঘটনায় হতবাক ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে গাবেরগ্রাম এলাকার আশরাফুল সংবাদ কে বলেন, আনোয়ার হোসেন ছোট থেকেই কষ্ট করে বড় হয়েছেন। তার বাবা শাজাহান দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই ঘরে তিন ছেলেমেয়ে হয়। তাদের নামে জমি লিখে দেন শাজাহান। বড় ছেলে আনোয়ার হোসেনের নামে কোনো জমিজমা দেননি। ছেলের লাশ রেখে পালিয়ে যাওয়ার কারণ, তাদের ভয় ছিল আনোয়ারের দুটি ছোট ছেলেমেয়ে রয়েছে। তাদের নামে যদি জমি লিখে দিতে হয়! এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেনের চাচা জাহিদুল সংবাদ কে বলেন, আমার বড় ভাই তার দ্বিতীয় দিকের ছেলেমেয়েদের জমি লিখে দিয়েছে অনেক আগেই। জানাজায় না আসার কারণ আনোয়ারের দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে।

তাদের তো কিছুই নেই। জানাজায় লোকজন যদি বলে আনোয়ারের ছেলেমেয়েদের নামে জমি লিখে দিতে হবে, এ ভয়েই তারা পালিয়ে গেছেন। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।

এ বিষয়ে আনোয়ারের সৎ ভাই সবুজ আহমেদ সংবাদ কে বলেন, আমার বাবা যদি আমার মৃত ভাইয়ের ছেলে মেয়ে ও স্ত্রীকে জমি লিখে না দেন, তাহলে আমার মামারা সবাই মিলে আমার বাবাকে আক্রমণ করবেন। এ আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সবাই পালিয়ে যায়। ভবিষ্যতে কেউ যেন মৃত ব্যক্তির লাশকে পুঁজি করে কোনো দাবি আদায় করতে না পারে, এ কাজের বিরোধিতা করার জন্যই জানাজায় অনুপস্থিত ছিলাম। এ বিষয় টি এলাকায় জনসাধারণের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় এলাকার মানুষ ও তার আত্মীয় স্বজনরা নিন্দা জানান।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি