image
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

নবীগঞ্জে শীতের আগমনে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ

শীতের আগমনী বার্তা পেতে শুরু করেছে নবীগঞ্জ। অগ্রহায়ণের বিদায়ে পৌষের শীত নামতেই চারদিকে কুয়াশার চাদর আর ঠান্ডা হাওয়ায় বদলে গেছে প্রকৃতির রূপ। সকাল-বিকেল রাস্তাঘাট, বাজার, অলিগলি-সব জায়গায়ই শীত নিবারণে গরম কাপড়ের ব্যবহার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ফুটপাতের দোকানে গরম পোশাক কেনায় ভিড় বাড়ছে, আর বিছানায় উষ্ণতা পেতে লেপ-তোষকের দোকানে উপচে পড়ছে ক্রেতাদের চাপ।

শীত নিবারণে লেপ-তোষক, কম্বল, কাঁথার গুরুত্ব নতুন নয়। গ্রামবাংলার প্রচলিত প্রবাদ: ‘বামনের গাই বেচে কাঁথা কেনা’ এখনও শোনা যায় মানুষের মুখে। শীত এলেই গ্রাম-গঞ্জের মানুষ লেপ-তোষকের দোকানে ছুটে আসেন নতুন লেপ-তোষক বানাতে বা পুরোনো লেপের তুলা ঝেড়ে নতুন করে তৈরি করতে।

সরেজমিনে দেখা যায় উপজেলার নবীগঞ্জ বাজার, ওসমানী রোড, হসপিটাল রোড, থানার মোড়, আউশকান্দি, জনতার বাজার, টুকেরবাজার, মিলনগঞ্জ, ইমামবাড়ী বাজারসহ অনেক জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে: লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা। দোকানের সামনে বড় চাটাই বা মাদুর বিছিয়ে তার ওপর কাপড় মেপে নিচ্ছেন কারিগররা; এরপর তুলা ছড়িয়ে শুরু হচ্ছে সুই ফুটিয়ে সেলাইয়ের কাজ। এক থেকে দেড় ঘণ্টায় তৈরি হয়ে যাচ্ছে একটি লেপ বা তোষক।

নবীগঞ্জ পৌর এলাকার ওসমানী রোডের আল-বারাকা বেডিং স্টোর এর মালিক মোঃ ছালিক চৌধুরী জানান, “সারা বছরই লেপ-তোষক বানানোর কাজ থাকে, তবে শীতে চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। অনেকেই আগেই অর্ডার দিয়ে রাখেন। তিনি আরো জানান এখন দৈনিক ৭-৮টি লেপ বানাতে হচ্ছে।”

লেপ কিনতে আসা চাঁনপুর গ্রামের রিপন মিয়া বলেন, “৪ হাত বাই ৫ হাত সাইজের একটি লেপ ভালোমানের কাপড় দিয়ে ৩,৫০০ টাকায় তৈরি করালাম। শীত বাড়ায় দোকানে প্রচুর ভিড়।” দাম বৃদ্ধি, মজুরিও বেড়েছে।

দোকানদার ও কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে: ৫-৭ ফিট জাজিম বানাতে মজুরি: ৪০০-৪৫০ টাকা, ৬-৭ ফিট জাজিম: ৫০০-৫৫০ টাকা, ৪-৫ হাত লেপ: ৩৫০ টাকা, ৫দ্ধ৫ হাত লেপ: ৪৫০ টাকা, ৬দ্ধ৭ ফিট তোষক: ৪০০ টাকা।

এ ছাড়া লাল শালুর ভালো মানের গজ পাওয়া যাচ্ছে ৬০ টাকা, মাঝারি মানের ৪৫-৫০ টাকা, তোষকের কাপড় বেড়ে হয়েছে প্রতি গজ ১-২ টাকা বেশি, আর জাজিম কাপড় বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা।

নবীগঞ্জের লেপ-তোষক কারখানার মালিক জাকারিয়া আহমেদ জানান, “উপকরণের দাম বেড়েছে, ফলে লেপ-তোষকের দামও কিছুটা বেড়েছে। শীত পুরোপুরি শুরু হলে অর্ডার আরও কয়েকগুণ বাড়বে।”

কারিগররা বলছেন, বর্তমানে প্রতিদিন ৪-৫টি লেপের অর্ডার মিলছে, আর পূর্ণ মৌসুমে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১৫-২০টি পর্যন্ত। ক্রেতারা বলছেন, দাম বাড়লেও শীতের সময় লেপ-তোষক কেনা ছাড়া উপায় নেই।

শীতের শুরুতেই নবীগঞ্জের লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে কারিগর ও ক্রেতাদের ব্যস্ততা যেন শীতের আগমনের স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে।

সম্প্রতি