image
আত্রাই (নওগাঁ) : আত্রাইয়ে আড়তে মাছ কেনাবেচা -সংবাদ

আত্রাইয়ে আড়তে ষাট লাখ টাকার মাছ বেচাকেনা

সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, আত্রাই (নওগাঁ)

মাছের ভান্ডার নামে পরিচিত নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলা। যেখানে শুধু আত্রাই উপজেলা নয়,পাশ্ববর্তী অনেক উপজেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় থেকে দেশী-বিদেশী প্রজাপতি মাছ নিয়ে আসেন এই আত্রাই মৎস্য আড়ৎতে। প্রতিদিন আড়ৎতে মাত্র কয়েক ঘন্টায় হাঁক-ডাকের মাধ্যমে প্রায় ষাট লক্ষ টাকার মাছ বেচাকেনা হয়ে থাকে। বেচাকেনা সময় আড়ৎ গুলোতে চলে ব্যপক কর্ম ব্যস্ততা,ক্রেতা-বিক্রেতার কণ্ঠে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো আড়ৎ বাজার। এখানে কেজি দরে মাছ বিক্রি হয়। সব মিলিয়ে এ আড়ৎকে মাছের ভা-ার বলা যায়। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চলে মাছের কেনাবেচা। আত্রাই মৎস্য অফিসের তথ্য মতে,এই উপজেলায় বাৎসরিক মাছের চাহিদা রয়েছে ৪হাজার ৫৪০ মেট্রিক টন। এবং উৎপাদন হচ্ছে ১২হাজার ৩৫৯ মেট্রিক টন। উদ্বৃত্ব মাছ দেশের নওগাঁ, নাটোর, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, কুরিগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তনি হয়ে থাকে।

রুই, কাতলা, মৃগেল,টেংরা, শিং, কৈ, বোয়াল, আইড়, টাকি, পুঁটি, মাগুর, চিংড়ি, গুলশা, শৌলসহ নানা প্রজাতির মাছ আড়ৎতে আসে। পাইকাররা দল বেঁধে অংশ নেন ডাক প্রতিযোগিতায়। ন্যায্য মূল্য দিয়ে তাদের পছন্দনীয় মাছ ক্রয় করে থাকেন। সেই মাছ ট্রাক বা ট্রেনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয় করে থাকেন পাইকাররা।

মাছ বাজারের মেসার্স জননী মৎস্য আড়ৎতের মালিক আলমগীর হোসেন জানান,অতিরিক্ত শীতের কারণে বাজারে মাছ কম আসছে। এতে করে মাছের দাম কিছুটা বাড়তি। এক সময় উপজেলার নদ-নদীতে প্রচুর দেশীয় মাছ পাওয়া গেলেও চায়না দুয়ারি জাল, সুতি জাল, বিষক্রিয়াসহ নানা কারণে এখন মাছের সরবরাহ কমেছে। তাই চায়না জাল বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে ধিরে ধিরে মাছ শূন্য হয়ে যাবে বলছেন তারা।

আড়ৎ মালিক মানিক ও আব্দুল কুদ্দুস জানান,প্রতিদিন এই আড়ৎতে প্রায় ষাট লক্ষ টাকার মাছ কেনাবেচা হয়। ছোট-বড় অনেক পাইকাররা এসে এখান থেকে পাইকারি দাম মাছ কিনে থাকে। আমাদের আড়ৎতে আসার ভালো কোন রাস্তা নেই। একটা ভালো রাস্তার প্রয়োজন। নাটোর থেকে আসা মাছ ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন ও শাজাহান আলী জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরে এই আড়ৎ থেকে মাছ কিনে আমাদের স্থানীয় বাজারে বিক্রি করি, এখানে কম দামে ভালো মাছ পাওয়া যায়। জয়পুরহাট থেকে আসা জামাল নামে এক ব্যবসায়ী জানান,এই আড়ৎতে অনেক ধরনের দেশি প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। এবং রুই কাতলা সহ বিভিন্ন ধরনের বড় বড় বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায়। তবে যাতায়াতের পথ দূরে হাওয়ার কারণে মাছ নিয়ে যেতে মাঝেমধ্যে ঝামেলাই পড়তে হয়। বাগমারা গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী জানান,”অনেক সময় পুকুর থেকে মাছ উঠাতে এবং আড়ৎতে নিয়ে আসতে দেরি হলে আমরা মাছের ন্যায় মূল্য পাইনা। কারণ মাছ কেনার গ্যাহক থাকেনা,বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করতে হয় মাছ। তবে যদি এখানে একটি সংরক্ষণাগার (হিমাগার) থাকতো তাহলে মাছ হিমাগারে রেখে সময় মত মাছ ব্যবসায়ীরা বেশি দামে মাছ বিক্রি করতে পাড়তো। এছাড়া আরো অনেক সুবিধা পেত মাছ ব্যবসায়ীরা। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাকছুদুর রহমান বলেন,উপজেলায় চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি মাছ উৎপাদন হয়। এই আড়ৎগুলো শুধু স্থানীয় অর্থনীতি নয়,হাজারো মানুষের জীবিকার স্থান। এখান থেকে মাছ চলে যায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। চাষিরা মাছ বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। তিনি বলেন, মাছ কেনাবেচা থেকে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় হচ্ছে।

সম্প্রতি