সঙ্গে থাকা নারী সঙ্গী পলাতক, ফ্ল্যাট থেকে মাদক সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম উদ্ধার

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের নেতা মোতালেব শিকদারকে গুলি

সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

খুলনায় এনসিপির সহযোগী সংগঠন শ্রমিক শক্তির খুলনা বিভাগীয় প্রধান মোতালেব শিকদারকে গুলির ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা এক নারী সঙ্গীকে খুঁজছে পুলিশ। ঘটনার পর যে ফ্ল্যাটে তিনি অবস্থান করছিলেন, সেখান থেকে মাদক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সোমবার দুপুরে নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় মোতালেব শিকদারকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, তিনি শঙ্কামুক্ত রয়েছেন।

খুলনা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ওই ফ্ল্যাটে মোতালেব ও তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন। নিজেদের মধ্যে কোন্দল থেকেই গুলির ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মোতালেব শিকদার (৪২) নগরীর সোনাডাঙ্গা শেখপাড়া পল্লী মঙ্গল স্কুল এলাকার বাসিন্দা এবং মৃত মোসলেম শিকদারের ছেলে। তিনি জাতীয় শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সংগঠক।

পুলিশ জানিয়েছে, আল আকসা মসজিদ স্মরণির ১০৯ নম্বর রোডের মুক্তা হাউজের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে এই গুলির ঘটনা ঘটে। সোনাডাঙ্গা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শনিবার রাত থেকে টানা ওই ফ্ল্যাটেই অবস্থান করছিলেন মোতালেব শিকদার।

সোনাডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) অনিমেষ মণ্ডল বলেন, ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন মোতালেবকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তার মাথার সিটি স্ক্যান করানোর জন্য সিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেওয়া হয়।

তিনি জানান, গুলিটি মোতালেবের বাম কানের চামড়া ভেদ করে বের হয়ে গেছে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, মোতালেবের মাথার বাম পাশে গুলি লেগেছে। হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের ড্রেসিংরুমে তার প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত রয়েছেন।

এদিকে, যে ফ্ল্যাটে গুলির ঘটনা ঘটেছে, সেখান থেকে পুলিশ মাদক সেবন ও ব্যবহারের বিভিন্ন উপকরণ উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছে। পুলিশের ধারণা, এই ঘটনায় আরও একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে।

মুক্তা হাউজের মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার সাংবাদিকদের জানান, প্রায় এক মাস আগে তন্বী নামের এক তরুণী নিজেকে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে একজনের সঙ্গে নিয়ে নিচতলার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন। তিনি নিজেকে এনজিওকর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেন এবং প্রায়ই বাসার বাইরে থাকতেন।

তিনি আরও বলেন, ওই ফ্ল্যাটে একাধিক পুরুষের নিয়মিত আসা-যাওয়া ছিল। পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে তার অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়ে জানার পর চলতি মাসে তাকে বাসা ছাড়ার নোটিস দেওয়া হয়। নোটিস কার্যকর হওয়ার আগেই এই গুলির ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর থেকেই তন্বী নামের ওই নারী পলাতক রয়েছেন। তাকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

খুলনা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, উদ্ধার করা আলামত ও মোতালেব শিকদারের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের নাম জানা যাবে। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে, এনসিপি খুলনা মহানগরের সংগঠক সাইফ নেওয়াজ দাবি করেন, মোতালেব শিকদারকে খুব কাছ থেকে মাথায় গুলি করা হয়েছে। তিনি বলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই খুলনায় একটি বিভাগীয় শ্রমিক সমাবেশ আয়োজনের কথা ছিল এবং মোতালেব সেই প্রস্তুতির কাজে ব্যস্ত ছিলেন।

সম্প্রতি