জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী সংগঠন শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক এবং খুলনা বিভাগীয় প্রধান মোতালেব শিকদারকে (৪২) প্রকাশ্যে গুলি করা হয়েছে।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে নগরের সোনাডাঙ্গা এলাকায় তার মাথা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয় বলে সোনাডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) অনিমেষ মণ্ডল জানান।
তিনি নগরের সোনাডাঙ্গা শেখপাড়া পল্লী মঙ্গল স্কুল এলাকার মৃত মোসলেম শিকদারের ছেলে।
পুলিশ কর্মকর্তা অনিমেষ বলেন, নগরের সোনাডাঙ্গা এলাকায় গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেছন দিকের একটি বাসার মধ্যে তাকে গুলি করা হয়েছে। উপস্থিত জনতা তাকে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে তার মাথার সিটি স্ক্যান করার জন্য সিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। গুলিটি তার বাম কানের চামড়া ভেদ করে বের হয়ে গেছে। এতে রক্তক্ষরণ হলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
তিনি এখন শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান।
তিনি জানান, তার মাথার বাম পাশে গুলি লেগেছে। হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের ড্রেসিংরুমে তার প্রাথমিক চিকিৎসা হয়েছে।
এনসিপির খুলনা মহানগরের একজন সংগঠক সাইফ নেওয়াজ বলেন, তাকে খুব কাছ থেকে মাথায় গুলি করা হয়েছে। মোতালেব শিকদার এনসিপির শ্রমিক সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক ও খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক। কিছুদিনের মধ্যে খুলনায় দলের একটি বিভাগীয় শ্রমিক সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। সেটা নিয়ে তিনি কাজ করছিলেন।
সোনাডাঙ্গা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি নগরের সোনাডাঙ্গা থানার আল আকসা মসজিদ স্মরণীর ১০৯ নম্বর রোডের মুক্তা হাউজের নিচ তলায় ঘটেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, এনসিপি নেতা মোতালেব শিকদার ও তার নারীসঙ্গী তন্বীসহ আরও ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সোনাডাঙ্গা এলাকায় ওই বাসায় থাকতেন। সেখান থেকে মাদক ও অনৈতিক কার্যক্রমের আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। নিজেদের মধ্যে বিরোধের জেরে সহযোগীদের কেউ একজন তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনি রিকশাযোগে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। ঘটনার পর থেকে ওই ফ্ল্যাটের ভাড়াটে তন্বীর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
মুক্তা হাউজের মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার বলেন, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তন্বী নামে এক তরুণী এক মাস আগে নিচ তলার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন। তিনি নিজেকে এনজিওকর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেন এবং প্রায়ই বাড়ির বাইরে থাকতেন। তার কক্ষে একাধিক পুরুষের আসা-যাওয়া ছিল। পরে অন্যদের মাধ্যমে তার অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি জানতে পেরে এ মাসে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেয়া হয়। ছাড়ার আগেই এ ঘটনা।
কেএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ওই ফ্ল্যাট থেকে মাদকের বিভিন্ন উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে, তারা এখানে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন এবং নিজেদের মধ্যে কোন্দলের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, এ ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত। মোতালেবকে জিজ্ঞাসাবাদে বাকিদের নাম জানা যাবে। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।