image
পঞ্চগড়: ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা মেলেনি -সংবাদ

পঞ্চগড় ও চুনারুঘাটে কনকনে ঠান্ডা, জেঁকে বসেছে শীত

মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, পঞ্চগড় ও চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ)

পৌষের শুরুতে পঞ্চগড় ও চুনারুঘাটে জেঁকে বসেছে শীত। শিরশিরে হিমেল হাওয়া,ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

কমে এসেছে দিনের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যবধানও।

পঞ্চগড়ে মঙ্গলবার, (২৩ ডিসেম্বর ২০২৫) বেলা ১টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। ভোর থেকে ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে বিভিন্ন ধরণের যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

এদিন, সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ।

গতকাল সোমবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। সেদিনও সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা বিরাজ করে। দুপুরের দিকে সূর্যের দেখা মিললেও ঠান্ডার অনুভূতি ছিল। সোমবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ, দিনের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যবধান ছিল মাত্র ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে শিরশিরে হিমেল হাওয়া, ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। সকালে অনেকেই কাজে যেতে বিপাকে পড়েন। শীত নিবারণের জন্য বিভিন্ন স্থানে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে ছিন্নমূল মানুষদের।রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঝরে কুয়াশা বৃষ্টি । শিরশিরে হিমেল হাওয়া, ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে বয়স্ক ও শিশুদের ওপর প্রভাব বেশি পড়ছে। চন্দনবাড়ি এলাকার অটোরিকশাচালক রশিদ বলেন, কুয়াশার কারণে সকালে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হয়েছে। এরপরও সামনে ঠিকমতো দেখা যাচ্ছিল না। ঠান্ডার কারণে যাত্রীও কম।”

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি শীত মৌসুমে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গত ১১ ডিসেম্বর। সেদিন তাপমাত্রা নেমে যায় ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা এ মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা দেখা যায়। ডিসেম্বরের শেষ দিকে তেঁতুলিয়াসহ উত্তরাঞ্চলের ওপর মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

চুনারুঘাটে ঘন কুয়াশায় বাড়ছে শীত : হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে ঘন কুয়াশায় শীত বাড়ছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬ টায় উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৫.৭ ডিগ্রিসেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ, যার ফলে ভোর থেকেই চারপাশে ঘন কুয়াশা দেখা যায়। এ উপজেলায় তাপমাত্রা কমতে শুরু করায় মানুষের দৈনন্দিন জীবনে শীতের প্রভাব স্পষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষক, দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ যারা ভোরে কাজে বের হন, তারা সবচেয়ে বেশি শীত অনুভব করছেন। রাস্তাঘাটে সকাল থেকে গাড়ি চলাচলে কমে যায় গতি, কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা যায় যানবাহনগুলোকে। এদিকে সকালে বাজারে গরম কাপড়ের দোকানে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। শ্রমজীবী মানুষরা শীত উপেক্ষা করেই কাজে বের হলেও ঠান্ডার কারণে কষ্টবেড়ে গেছে। পৌর এলাকার মো. সুমন মিয়া নামে এক রিক্সা চালকের সাথে দেখা হয়। তিনি বলেন, ভোরে কাজে বের হতে খুব কষ্ট হচ্ছে। কুয়াশায় রাস্তাও ঠিকমতো দেখা যায় না। তবুও পেটের দায়ে বের হতে লাগে। অন্যদিকে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরাও শীতের প্রভাব অনুভব করছে। দক্ষিণা চরণ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ঐশী বৈদ্য বলেন, সকালে কুয়াশার জন্য ঠান্ডা লাগে খুব। স্কুলে কোচিং ক্লাসে যেতে কষ্ট হয়, তবে স্কুল বন্ধ, কোচিং ক্লাস চালিয়ে যাওয়া লাগে। এসএম মেডিকেল হল এর হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ডা: কালীপদ আচার্য্য বলেন, এই আবহাওয়ায় বয়স্ক, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তিদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। ভোরের দিকে রাস্তায় কুয়াশা বেশি থাকে, তাই চালক এবং পথচারী উভয়কেই সাবধানতার সঙ্গে চলাফেরা করা উচিত। চুনারুঘাট হাসপাতালের সাবেক মেডিকেল অফিসার ডা: সুরঞ্জন রায় বলেন, এ সময় সর্দি-কাশি, হাঁপানি ও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই গরম কাপড় ব্যবহার, ভোরের ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলা এবং ছোট শিশুদের বাইরে কম নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি