নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার জাগলার চর এলাকায় চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
হাতিয়া কোস্টগার্ডের মিডিয়া লে. কমান্ডার আবুল কাশেম ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, জাগলার চরের জমি সরকার এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে বন্দোবস্ত দেয়নি। এই অবস্থার সুযোগ নিয়ে গত ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী চরের বেশ কিছু জমি বিক্রি করতে শুরু করে। পরবর্তীতে সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনীও ওই চরের জমি দখল ও বিক্রির জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং তারা আরও বেশি দামে কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর থেকে উভয় গ্রুপ আলাদাভাবে চরের জমি বিক্রির চেষ্টা চালায়।
স্থানীয় অভিযোগ অনুযায়ী, চর দখলের কাজে জড়িত ডাকাত আলাউদ্দিন সুখচর ইউনিয়নের বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগের একজন নেতা (নিজাম মেম্বার) এবং বিএনপির আরেক নেতা নবীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তারা কোপা সামছু বাহিনীকে চর এলাকা থেকে উচ্ছেদ করে জমি দখল করতে আলাউদ্দিন বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে দুটি গ্রুপের মধ্যে আগে থেকেই উত্তেজনা ও একাধিকবার বিরোধের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে চরের জমি দখল নিয়ে কোপা সামছু ও আলাউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে চূড়ান্ত সংঘর্ষ বেধে যায়। উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে আলাউদ্দিনসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত অবস্থায় আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এভাবে মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এই অভিযোগ সম্পর্কে সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
হাতিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম জানান, ঘটনায় একটি মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে এবং বাকি চারটি মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকাটি দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় পুলিশ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।