image
বোয়ালখালী, (চট্টগ্রাম) : বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে ফুলকপি -সংবাদ

বোয়ালখালীর বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সবজি ফুলকপি চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা

বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, বোয়ালখালী, (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে মাঠ জুড়েই এখন শোভা পাচ্ছে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, বেগুন, মুলা, সরিষা, টমেটা, পালংশাক, কপিশাক, লালশাকসহ রকমারি শীতকালীন শাক সবজি। তবে ফুলকপি চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন প্রান্তিক চাষিরা অল্প সময়ে অধিক লাভের জন্য অনেকেই করেছেন ফুলকপি চাষ। বর্তমান বাজারে ফুলকপির ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা।

মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার কয়েকটি এলাকায় বিভিন্ন ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন বিভিন্ন সবজিতে মাঠ ভরে গেছে। এসব ফসল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। ভোরে কোদাল, নিড়ানি, বালতি, স্প্রে মেশিন ইত্যাদি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন ক্ষেত পরিচর্যায়। বিকেল অবধি মাঠে থেকে সবাই বাড়ি ফিরছেন তারা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বোয়ালখালীতে শীতকালীন সবজির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ২৫ হেক্টর জমিতে ফুলকপি ২০ হেক্টরে বাঁধাকপি চাষ করেছেন কৃষকেরা।

সাধারণত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে বাজারে শীতকালীন সবজি উঠলেও এবার কৃষকরা আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে মৌসুমের শুরুতেই সবজি বাজারে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৌমিত্র দে।

তিনি বলেন, চাষিরা এখন জমি থেকে ফুলকপি তুলে বাজারে বিক্রি করছেন। তাদের উৎপাদিত ফুলকপি স্থানীয় বাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। এবছরে ফুলকপির বাম্পার ফলন ও ন্যায্য দাম পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন চাষিরা। কেউ অল্প অল্প করে ফুলকপি বাজারে বিক্রি করছেন। কেউ আবার চুক্তিভিত্তিতে ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

খরণদ্বীপ এলাকার কৃষক রূপক দে বলেন, এবার অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ৩৮ শতক জমিতে আগাম মন্টিন (জাপানি) জাতের ফুলকপি লাগিয়েছেন তিনি। সাথী ফসল হিসেবে লাগানো হয়েছে কোরিয়ান জাতের মিষ্টি কুমড়া । এক মাসের মধ্যে ফলন আসবে বলে জানান তিনি।

সবকিছু মিলিয়ে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। জমির সব ফুলকপি পাইকারি ৮৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি। খরচ বাদে আড়াই মাসে ৫৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।আর ১০-১৫ দিন পর বিক্রির উপযুক্ত হবে হাইব্রিড স্নো-বক্স জাতের ফুলকপি ও এটলাস-৭০, এবং গ্লোরী- ১ জাতের বাঁধাকপি। এরপর আসবে

স্নো-ওয়াইট জাতের ফুলকপি। যা মৌসুমের শুরু, মাঝামাঝি ও শেষ সময়ে বাজারে বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়া যাবে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে খরচ বাদে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

ফুলকপি বিক্রি করে আবার অন্য ফসল লাগানো হবে বলে জানান তিনি। ফুল কপি চাষে লাভবান হওয়ার কথা জানিয়েছেন একই এলাকার কৃষক সুবল দে, ঝুন্টু দে, করলডেঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল হালিম, মো জামাল উদ্দিন, জৈষ্টপুরা গ্রামের কৃষক মো ইছাকসহ অনকেই। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো শাহানুর ইসলাম বলেন বোয়ালখালীতে এবার শীতকালীন ২৫ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড মন্টিন ( জাপানি), স্নো বক্স, স্নো ওয়াইড, ওয়াইড কুইন জাতের ফুলকপি চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে এ অঞ্চলের মানুষ আধুনিক সবজি চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। এছাড়া কৃষকদের আধুনিক চাষাবাদে রাসায়নিক সারের পাশাপাশি জৈব সার ব্যবহারে ও কীটনাশক নিয়ন্ত্রণে পরামর্শ প্রদানে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠে রয়েছেন।

চাষিরা শীতকালীন ফুলকপি চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। তারা ফুলকপি চাষ করে দাম ও ফলন দুটোই ভালো পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি