হবিগঞ্জের মাধবপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের ৬.৬৬ একর আয়তনের একটি সরকারি জলমহাল বিধিমালা ও মৎস্য আইন লঙ্ঘন করে ব্যক্তি নামে লিজ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রশাসনকে প্রভাবিত করে আক্তার কাজী নামের এক ব্যক্তি ৫ বছরের জন্য ২০২৮ পর্যন্ত জলমহালটি লিজ গ্রহণ করেছেন, যা মৎস্য আইন ২০০৯-এর সরাসরি লঙ্ঘন।
জানা গেছে, জলমহালটি নিয়ে স্থানীয় গোয়ালনগর সাহারা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ইতোমধ্যে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছে (রিট নং–১৪১৮৫/২৪)। তবে রিট বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় ভূমি অফিসের তহশিলদার সোহেল রানার দেওয়া একটি বিতর্কিত ও ভুয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ বিন কাশেম আক্তার কাজীকে লিজ প্রদান করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় একাধিক মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। হাইকোর্টে রিটকারী সংগঠন গোয়ালনগর সাহারা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি বিমল চন্দ্র দাস বলেন, মোটা অংকের কমিশনের বিনিময়ে প্রহসনের মাধ্যমে ব্যক্তি নামে অবৈধভাবে জলমহাল লিজ দেওয়া হয়েছে। এটি এক ধরনের পুকুর চুরি এবং ভয়াবহ দুর্নীতি। এর ফলে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের ন্যায্য অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষতা মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অনতিবিলম্বে তদন্ত করে এই অবৈধ লিজ বাতিল করে জলমহালটি প্রকৃত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কাছে হস্তান্তর করা জরুরি।
এ বিষয়ে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ বিন কাশেম বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। হাইকোর্টে রিটের বিষয়টি এক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ওই পক্ষও রিট করেছে। যা হয়েছে আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক হয়েছে ।
স্থানীয় মৎস্যজীবীদের আরও অভিযোগ, উচ্চ আদালতের নির্দেশ ও বিদ্যমান বিধিমালা উপেক্ষা করে ঘরোয়া পদ্ধতিতে এমন বিধিবহির্ভূত লিজ প্রদানের ফলে সরকার অন্তত ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা রাজস্ব ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জরুরি অনুসন্ধান প্রয়োজন বলে তারা দাবি করেন।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, লিজগ্রহীতা আক্তার কাজী চুক্তিনামা লঙ্ঘন করে মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে তিনটি পাম্প বসিয়ে জলমহালটির পানি নিষ্কাশন করছেন। এতে পরিবেশ ও জলজ জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা অবিলম্বে এই কার্যক্রম বন্ধে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা দুদকের উপ-পরিচালক এরশাদ আলী বলেন, সরকারি রাজস্ব ক্ষতির কোনো আলামত পাওয়া গেলে এটি একটি ভয়ঙ্কর দুর্নীতির ঘটনা হিসেবে গণ্য হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজন হলে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে তদন্তের জন্য নোট দেওয়া হবে।
সারাদেশ: নরসিংদীতে গাঁজাসহ আটক ৪
সারাদেশ: সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন
সারাদেশ: তারাগঞ্জে গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার