image
গাইবান্ধা : শীতে কাতর শ্রমিক -সংবাদ

শীতে কাহিল উত্তরের জনজীবন

বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, গাইবান্ধা

কনকনে শীত ও হিমেল বাতাসে কাহিল হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা গাইবান্ধার জনজীবন। গত তিন দিন ধরে তীব্র শীতের প্রভাবে চরাঞ্চলসহ শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। শীত নিবারণের জন্য পর্যাপ্ত মোটা কাপড়ের অভাবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।

দিনের বেলায় সূর্যের সামান্য উঁকি-ঝুঁকিতে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও বিকেলের পর থেকেই ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় তা দ্রুত কমে যাচ্ছে। ফলে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে আসে এবং মানুষজনকে আগেভাগেই ঘরে ফিরতে হচ্ছে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এ জেলার তাপমাত্রা ১৮ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে।

শীতের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নিম্নআয়ের মানুষজন। দোকানপাট, কৃষিকাজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজকর্ম ব্যাহত হওয়ায় তাদের আয়-উপার্জনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

তবে চলতি শীতে অসহায় মানুষের জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যাপ্ত উদ্যোগ না থাকায় শীতজনিত দুর্ভোগ আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ ছিন্নমূল মানুষের। সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের কুমারপাড়া চরের বাসিন্দা আশরাফ আলী বলেন, “গত চার দিন ধরে শীতের তীব্রতা বাড়ছেই। এতে শীত নিবারণ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।” গাইবান্ধা শহরের রিকশাশ্রমিক আবুল কালাম জানান, শীতের কারণে সকালে যাত্রী পাওয়া যায় না। একই উপজেলার কুন্দেরপাড়া চরের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, “সরকারিভাবে প্রায় ২০০ পরিবারকে কম্বল দেওয়া হয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। শীতে বয়স্ক নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে।”

অন্যদিকে, শীতের প্রভাবে ইরি-বোরো চাষাবাদেও কিছুটা ব্যাঘাত ঘটছে। শ্রমিকরা জমিতে নামতে দেরি করছেন। গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, “জীবন আগে বাঁচাতে হবে, তারপর কাজ। এত ঠান্ডায় জমিতে নামা খুবই কঠিন।”

এদিকে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণ উন্নয়ন কেন্দ্র (জিইউকে)-এর নির্বাহী প্রধান এম. আবদুস সালাম। তিনি বলেন, “দরিদ্র মানুষের পক্ষে শীত পার করা অত্যন্ত কষ্টকর, কারণ শীত মোকাবেলার মতো প্রয়োজনীয় মোটা কাপড় তাদের কাছে নেই।” তিনি আরও বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শীতার্ত দরিদ্র মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে শীতবস্ত্র বিতরণ করা প্রয়োজন।

গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা: তাহেরা আকতার মনি জানান, শীতে শিশু ও বয়স্কদের সুরক্ষায় বাড়তি যত্ন নেওয়া উচিত। শিশুদের বাইরে নিয়ে গেলে ধুলাবালি ও ঠান্ডা এড়িয়ে চলতে হবে। কুয়াশায় কোনোভাবে শিশুদের বের করা ঠিক হবে না।

অসহায় ও দরিদ্র শীতার্ত মানুষের পাশে সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিত্তবানরা এগিয়ে আসবেন—এমনটাই প্রত্যাশা এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

» মহেশপুরে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ৫

» সিরাপ জব্দ, আটক ১

» সাঘাটায় কাবিখা প্রকল্পের মাধ্যমে শিমুল তাইড় কবরস্থানে মাটিভরাট কাজ সম্পন্ন

সম্প্রতি