নোয়াখালীতে চর দখলের সংঘর্ষে নিহত আরেকজনের মরদেহ উদ্ধার

বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
জেলা বার্তা পরিবেশক, নোয়াখালী

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার মেঘনাবেষ্টিত জাগলার চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে বিবদমান তিনটি সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় নিহত আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম শামছুদ্দিন ওরফে কোপা শামছু (৫৫)। তিনি ‘সন্ত্রাসী’ শামছু বাহিনীর প্রধান হিসেবে পরিচিত।

বৃহস্পতিবার, (২৫ ডিসেম্বর ২০২৫) সন্ধ্যায় চরের বনের ভেতর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। হাতিয়া থানার ওসি মো. সাইফুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ জানায়, নিহত শামছুদ্দিন হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হলো। নিহত অন্য পাঁচজন হলেন ‘সন্ত্রাসী’ আলাউদ্দিন বাহিনীর প্রধান আলাউদ্দিন, মোবারক হোসেন, আবুল কাশেম, হক সাব ও কামাল উদ্দিন। তাদের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল বুধবার রাতে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় বৃহস্পতিবার, সকালে হাতিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত শামছুদ্দিনের ছোট ভাই আবুল বাশার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে একই ঘটনায় নিহত অপর বাহিনী প্রধান আলাউদ্দিনের পরিবারের কেউ এখনও মামলা করতে থানায় যাননি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

হাতিয়া থানার ওসি মো. সাইফুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে এরই মধ্যে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।

গত মঙ্গলবার হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮নং ওয়ার্ড সংলগ্ন মেঘনায় জেগে উঠা নতুন জাগলার চরের দখল নিয়ে তিনটি সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। বাহিনীগুলো হলো কোপা শামছু, আলাউদ্দিন ও ফরিদ কমান্ডারের নেতৃত্বাধীন দল। সংঘর্ষে তিন পক্ষের লোকজনই কমবেশি হতাহত হন। খবর পেয়ে ওইদিনই বিকেলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কোপা শামছুর ছেলে মোবারক হোসেনসহ আবুল কাশেম, হক সাব ও কামাল উদ্দিনের লাশ উদ্ধার করে। এছাড়া আলাউদ্দিনের লাশ জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করা হয়। অজ্ঞাতনামা লোকজন তাকে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চরের জমি বাণিজ্যিক উদ্দেশে দখলের প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর। প্রথমে হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা শামছু বাহিনী জমি দখলে নিয়ে বিক্রি শুরু করে। পরে সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনীও ওই চরে জমি দখল করে বিক্রিতে নামে। একপর্যায়ে তারা জাগলার চরের খাসজমিও বিক্রি করতে শুরু করে। বাহিনীর সদস্যরা প্রতি একর জমি ২০-২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে আসছিলেন। কয়েকমাস আগে এই দুই বাহিনীর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় যুক্ত হয় ফরিদ কমান্ডারের বাহিনী। এরপর থেকেই তিনটি বাহিনীর মধ্যে দখল নিয়ে বিরোধ ও সংঘর্ষ চলছিল। সর্বশেষ ঘটনায় দুই বাহিনীর দুই প্রধানসহ মোট ছয়জন নিহত হয়েছেন।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

» সারাদেশে ঘন কুয়াশার আভাস, ব্যাহত হতে পারে সড়ক-নৌ যোগাযোগ

» সোনারগাঁয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়িতে ডাকাতি, মোবাইল ও টাকা লুট

» সাগরে বিপুল পরিমাণ সিমেন্ট ও বাংলাদেশি পণ্যসহ ২২ পাচারকারী আটক

» বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে যুবলীগ নেতা আটক

» ধূমপান নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশের অনুমোদন: ই-সিগারেট নিষিদ্ধের প্রস্তাব

সম্প্রতি