image
বোয়ালখালী চট্টগ্রাম : সরিষা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার প্রান্তিক কৃষকেরা -সংবাদ

বোয়ালখালীতে সরকারি প্রণোদনায় বাড়ছে সরিষার আবাদ

শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, বোয়ালখালী চট্টগ্রাম

সরকারি প্রণোদনা পেয়ে সরিষা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার প্রান্তিক কৃষকেরা। গত বছরের তুলনায় এবার অধিক পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। শীতের হিমেল হাওয়ায় কৃষকের স্বপ্ন দুলছে সরিষার মাঠে, চোখ জুড়ানো সরিষা ফুলের অপরূপ দৃশ্য দেখে যে কারোই মন জুড়িয়ে যায়।

এ বছর সরকারি প্রণোদনা নিয়ে প্রথম বারের মতো ৪০ শতক জমিতে বীণা-২০ সরিষা চাষ করেছেন আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়নের শারীরিক প্রতিবন্ধী কৃষক মো. জামাল উদ্দিন।

তিনি বলেন, নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে সরিষার বীজ বপন করেছি। এতে ঘেরা বেড়া, শ্রমিকসহ খরচ হয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকা। এখন ফুলে ফুলে ভরে গেছে মাঠ। জানুয়ারিতে ফসল তোলা যাবে। তিনি আশা করছেন এ মৌসুমে তার জমিতে ৭-৮ মন সরিষা হবে। বাজারদর ভালো থাকলে এ চাষে তিনি লাভবান হবেন। এছাড়া সরিষা চাষে সময় ও সেচের প্রয়োজন কম। আবার বীজের কোনো সমস্যা হয় না। সময় এবং খরচ কম হওয়ায় গত বছর যারা সরিষা চাষ করেছেন, তারা ভালো লাভবান হয়েছেন। আগামীতে সরিষার আবাদ আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে মাঠে গিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সরিষা চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রচলিত দেশি সরিষার চেয়ে উচ্চ ফলনশীল, জাতের বারি-১৪ ও বারি-১৭ ফলন বেশি হওয়ায় চাষিরা আগ্রহী। চাষিরা প্রতি কানি জমি থেকে ৬-৭ মণ সরিষা উৎপাদনের আশা করছেন।

আমুচিয়া ইউনিয়নের কৃষক মো আবদুল জলিল বলেন, আমন ধান কাটার পর জমি ফেলে না রেখে ৬০ শতক জমিতে বারি-১৭ সরিষা চাষ করেছেন। কয়েক দিনের মধ্যে সরিষা উঠে যাবে। এরপর আবার বোরো ধান রোপণ করবেন তিনি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালখালীতে এবার সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪৫ হেক্টর জমিতে।

যা গত বছর ছিল ৪০ হেক্টর। এর মধ্যে ১৫০ জন কৃষককে দেওয়া হয়েছে সরিষার প্রণোদনা। পৌরসভাসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের বারি সরিষা- ১৪, বারি- ১৭, বারি-১৮ ও বীণা সরিষা ২০ এর ২৫ টি প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। এর বাইরেও নিজস্ব উদ্যেগে অনেক কৃষক সরিষার আবাদ করেছেন। এতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শাহানুর ইসলাম। তিনি বলেন, সরিষা একটি লাভ জনক ফসল। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সরিষা চাষ ঝুঁকিমুক্ত। তবে প্রতি বছর সরিষা চাষের আবাদ বাড়ছে। আবাদ বৃদ্ধি করতে কৃষকদেরকে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করে আসছে কৃষি বিভাগ । তৈল জাতীয় শস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরিষা চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে যাওয়াসহ বিদেশ থেকে ভোজ্য তেলের আমদানি কমাতে সরকার বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করেছে কৃষকদের মধ্যে। আবাদ বাড়লে এর সুফল

পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি । করলডেঙ্গা ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন,করলডেঙ্গায় আগে কখনো সরিষা করা হয়নি। এবার ২ হেক্টর জমিতে প্রথম বারের মতো সরিষা চাষ করেছেন এ এলাকার কৃষকেরা। সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়াতে ১০ জনকে প্রণোদনা, ৫ জনকে বীজ সহায়তা ও ১ জন কৃষককে প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শসহ নানাভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি