রংপুর সহ পুরো বিভাগের ৮ জেলায় হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সে সঙ্গে প্রচণ্ড ঘন কুয়াশার চাদরে পুরো বিভাগ ঢেকে গেছে। কুয়াশার ঘনত্ব এতটাই প্রকট যে, কাছের জিনিসও দেখা যাচ্ছে না।
তাপমাত্রা নেমে যাবার পাশাপাশি হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতাকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে দৈনন্দিন জীবন অচল হয়ে পড়েছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাসা থেকে বের হচ্ছে না।
এদিকে প্রচণ্ড শীত এবং ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ জন মারা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের সর্দার অফিসের আজমল হোসেন।
রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার,(২৬ ডিসেম্বর ২০২৫) রংপুর বিভাগের নীলফামারীর ডিমলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। এছাড়াও রংপুরে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১১ ডিগ্রি, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি, দিনাজপুরে ১২ ডিগ্রি, ঠাকুরগাঁওয়ে ১১ দশমিক ১ ডিগ্রি, লালমনিরহাটে ১২ ডিগ্রি এবং গাইবান্ধায় ১২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রংপুর আবহাওয়া সূত্রে জানা গেছে, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার তীব্রতাও বাড়ছে, যা সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকছে। গত ৩ দিন ধরে সূর্যের মুখ অল্প সময়ের জন্য দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে হিমেল বাতাসে গত দু’দিন ধরে সন্ধ্যার পর থেকে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে, রাত যতো গভীর হয় তাপমাত্রা ততই কমতে থাকে। তবে দিনভর রংপুর বিভাগে হিমেল বাতাস প্রবাহিত হবার কারণে শীতের তীব্রতা মারাত্মক বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত ৩ দিন ধরে এ অঞ্চলের মানুষ সূর্যের মুখ দেখতে পারেনি। শুক্রবার বেলা ১১টার পর সূর্য একটু উকি দিলেও পরে তা হারিয়ে যায় মেঘের মধ্যে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানান, তাপমাত্রা এখন প্রতিদিনই কমবে। বছরের শেষ কয়েকটা দিনে শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে। সেই সঙ্গে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে রংপুর বিভাগীয় প্রশাসকের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় শীতার্ত মানুষের জন্য কম্বল সহ শীত বস্ত্র এসেছে যা বিতরণ শুরু হয়েছে।
এদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ভাইরাস জ্বর, নিউমোনিয়া, কোল্ড ডায়রিয়া, সর্দি জ্বর, শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন রোগবালাই বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ চিকিৎসা কেন্দ্র রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন শত শত ঠান্ডাজনিত রোগী চিকিৎসা নিতে ভিড় করছে।
এ ব্যাপারে বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শহীদুল ইসলাম জানান, এবার শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। শিশুদের গরম পোশাক পড়িয়ে রাখা, প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না করা এবং ঠান্ডা যেন না লাগে সেদিকে দৃষ্টি রাখার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
অপরাধ ও দুর্নীতি: লক্ষ্মীপুর নির্বাচন অফিসে আগুন লাগানোর ঘটনায় যুবক গ্রেপ্তার
অপরাধ ও দুর্নীতি: হাদি হত্যা: ফয়সালকে ভারতে পালাতে সহায়তাকারীসহ দুইজন কারাগারে
অর্থ-বাণিজ্য: শীতের সবজির দাম কমলেও বাড়তি মাছের দাম