image

চাঁদপুরে দুই লঞ্চের সংঘর্ষে ৪ জন নিহত, ৪ কর্মীসহ ‘অ্যাডভেঞ্চার-৯’ আটক

শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, চাঁদপুর

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা ও হরিণা এলাকার মাঝামাঝি স্থানে মেঘনা নদীতে ঢাকাগামী দুই লঞ্চের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এখন পর্যন্ত ৪ জন নিহত এবং কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক দুইটার দিকে মেঘনা নদীর চাঁদপুরের হাইমচর সীমন্তবর্তী নীলকমল বাংলা বাজার এলাকায় ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাকির সম্রাট-৩ ও বরিশালগামী অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে জাকির সম্রাট লঞ্চের অনেকাংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। অল্পের জন্য ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা পায় বলে লঞ্চটির ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান।

দুর্ঘটনার পর আহত নিহত যাত্রীসহ অন্যান্য যাত্রীদের নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লঞ্চটি চাঁদপুর না ভিড়িয়ে সরাসরি ঢাকা চলে যায়। শুক্রবার,(২৬ ডিসেম্বর ২০২৫) সকালে নিহতদের মরদেহ লঞ্চ থেকে নামিয়ে নৌ-পুলিশ ঢাকা মিডফোর্ড হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাট কর্মকর্তা বাছির আলী জানিয়েছেন। এ ঘটনায় অ্যাডভেঞ্চার লঞ্চসহ চারজন স্টাফকে আটক করেছে নৌ-পুলিশ। নৌ-পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার জানান, অ্যাডভেঞ্চার লঞ্চটি ঝালকাঠি ঘাটে জব্দ করা হয়েছে।

ঘটনায় এমভি জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চের যাত্রীদের মধ্যে নিহতরা হলেন- আ. গনি (৩৮) পিতা সিরাজুল বেপারী, মো. সাজু (৪৫) পিতা মো. কালু খা, সাং কাজিরাবাদ থানা, লালমোহন, জেলা, ভোলা, মো. হানিফ (৬০) পিতা আমির হোসেন, সাং আহমেদপুর থানা, চরফ্যাশন, জেলা, ভোলা ও রিনা বেগম (৩৫),পিতা মৃত মোক্তার হোসেন, স্বামী মিলন সাং কচুখালি, গজারিয়া, থানা লালমোহন, জেলা ভোলা।

অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের আটকৃত চারজন স্টাফ হলেন- মো. মিন্টু (২৮), মো. সোহেল (৪০), মহিন হাওলাদার (২৫) ও মো. মনিরুজ্জামান(৪০)।

শুক্রবার দুপুরে নৌ-পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের চাঁদপুর নৌ-থানার ওসি এএসএম ইকবাল ও সদর ঘাট নৌ-থানার ইনচার্জ সোহাগ রানা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

হতাহতদের জন্য অনুদান

নৌ-উপদেষ্টার

নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার রাজধানীর সদরঘাটে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত লঞ্চ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। এ সময় বস্ত্র ও পাট এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আজকের ঘটনাটি দুঃখজনক।

তিনি বলেন, সব ধরনের পরিবহনের মধ্যে নদীপথ তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। তারপরও এ ধরনের দুর্ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। আমি নিজেও নিয়মিত নদীপথে যাতায়াত করি। লক্ষ্য করেছি, অনেক সময় রাতে লঞ্চ চলাচলের সময় লাইট ব্যবহার করা হয় না।

উপদেষ্টা জানান, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই লঞ্চের দায়িত্বপ্রাপ্তদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে কয়েকটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রাতে কুয়াশার মধ্যে কোনো লঞ্চ চলাচল করতে পারবে না। রাতে কোথাও দাঁড়ালে অবশ্যই লাইট ব্যবহার করতে হবে। এ মৌসুমে বাল্কহেড সকাল ৮টার আগে চলাচল করতে পারবে না। এসব নির্দেশনা অমান্য করলে সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার করা হবে।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি