image

দর্শনায় পরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে ফুল চাষের নতুন ঠিকানা

শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা)

নতুন এই ফুল বাগানে লাল, নীল, সাদা হলুদ, গোলাপিও খয়েরি রঙের ফুলের ছড়াছড়ি। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। সেখানে শুধু ফুল চাষই হচ্ছে না, গড়ে উঠেছে ফুল বাগানেএক চমৎকার পর্যটন কেন্দ্র। দেখা দিয়েছে অর্থণীতির বিপুল সম্ভবনার নতুন দিগন্তের হাত ছানি । চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা গোপালখালী মাঠেএখানে পরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠেছে ফুল চাষের নতুন ঠিকানা। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল এই ফুল বাগান।এই বাগান দেখতে উপচে পড়া ভীড়।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা-মুজিবনগর সড়ক ধরে মেমনগর গ্রামের সীমানা পেরুলেই সামনে মুল সড়কের ডান দিকে তাকালেই দেখা মিলবে গোপালখালী মাঠ এই মাঠে নোয়াখালী রোজ গার্ডেন। আর এই বাগানে চন্দ্র মল্লিকা, মাব, গ্রীন নানা জাতের লাল, নীল, সাদা, হলুদ আর বেগুনি রংয়ের ফুলের চাষ শুরু হয়েছে।

এরই পাশে রয়েছে নতুন শেটে পরিকল্পিত জিপসি, জাববালা, গোলাপ, লিলিয়াম জাতের ফুল চাষের নতুন ঠিকানা । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রীতিমত ভাইরাল হয়ে গেছে ফুল বাগানটি । ফুল প্রেমিরা ফুল বাগান দেখতে প্রতিদিন ভীড় জমাচ্ছে। গড়ে উঠেছে এক চমৎকার পর্যটন কেন্দ্র। প্রচুর পরিমান ফুলখুরচা বিক্রি হচ্ছে।

বাগানটির পরিচালক চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনার রামনগর গ্রামে শাকিল হোসেন বলেন, গোপালখালী মাঠেনোয়াখালী রোজ গার্ডেন নাম দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে পরিকল্পিত ফুল বাগান। ১ বিঘা জমিতে চন্দ্র মল্লিকা, মাব, গ্রীন নানা জাতের ফুল।প্রাথমিক ভাবে ১ বিঘা জমিতে ১৯টি বেড়ে মোট ১৯ হাজার চন্দ্র মল্লিকা, মাব, গ্রীন জাতের ফুল রয়েছে । ইতো মধ্যে লাল, নীল , সাদা, হলুদ আর বেগুনি রংয়ের ফুল ফুটেছে। সাথে রয়েছে নতুন সেটে ২ বিঘা জমিতে পরিকল্পিত জিপসি, জাববালা, গোলাপ, লিলিয়াম জাতের ফুল চাষের নতুন ঠিকানা । উদেশ্য বাণিজ্যিক ভাবে নিজেরাই ফুল চাষ করে ব্যবসা করা ।ফুল চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ফুলের চাহিদা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাড়ছে। ফলে স্থানীয় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। পাশাপাশি ফুল চাষ কেন্দ্রিক নতুন কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন গ্রামে গড়ে ওঠা ফুল বাগান এখন শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নয়। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির উৎসও হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ১ বিঘা জমিতে ১৯টি বেড়ে ১৯ হাজার চন্দ্র মল্লিকা, মাব, গ্রীন জাতের ফুল ঢাকার শাহাবাগ, আগরগাঁও বিক্রি শুরু করেছে । বর্তমান পাইকারি ২ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি করেছি। তা ছাড়া প্রতিদিন দর্শকরা খরচা কিনছে। যেহেতু বাণিজ্যিক ভাবে নিজেরাই ফুল চাষ করে ব্যবসা করা তাই লোকসান এড়াতে বাগানে দর্শনাথীদের হাতে ২ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি করছি॥ প্রায় সব দর্শনাথীদের হাতে ফুল নিয়ে বাড়ী ফিরছে । ২ বিঘা জমিতে পরিকল্পিত জিপসি, জাববালা, লিলিয়াম জাতের ফুলের চারা বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বৈধ্য পথে সংগ্রহ বা আমদানী করা, জমি প্রস্তুত করা, পানি সেচ ব্যবস্থা, বাঁশ খুটি উপরের ছাউনী সহ সীমানা বেড়া সহ খরচ হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। প্রকৃতিক কোন বড় ধারনের দুর্যোগ দেখা না দিলে ১০ বছরসেটের মেয়াদ থেকে টানা ৫ বছর মেয়াদী জিপসি, জাববালা, লিলিয়াম জাতের ফুলের চারা লাগানো বয়স ১মাস ২৮ দিন । ৯০ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া যাবে। প্রতিনিয়ত যতœ আর তদারকির কোন কমতি ন্য়ে। আর এই বাগান থেকে ৫ বছরে ১ কোটি টাকা আয়ের সম্ভবনা নিয়ে মাঠে নেমেছি । প্রথম বছরে খরচ একটু বেশি হলেও পরে ভালো ফলন পাওয়া যায়, ফলে লাভ অনেক বেশি হয়। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বিশেষ দিনগুলোতে, যেমন পহেলা বৈশাখ, ভালোবাসা দিবস বা বসস্ত উৎসব,২১ ফ্রেরুয়ারী, মহান বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস জন্মবার্ষিকী, মৃত্যুবার্ষিকী, গায়ে হলুদ, গাড়ি সাজানো, বিভিন্ন ধরনের পূজা-পার্বন ও সভা-সমাবেশে ফুলের বেশ চাহিদা রয়েছে। এসব দিবস আসলে ফুলের দাম একটু বেশি পাওয়া যায়। যেহেতু আমরা নিজেরাই চাষ করবো আবার নিজেরাই ঢাকা চট্রগ্রাম, খুলনা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করবো তাই লোকসানের মাএা কম হবে। এ ছাড়াও এখানে নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। এ জনপদে পুল চাষের বিপুল সম্ভবনা থাকা স্বত্বেও নতুন নতুন ফুল বাগান গড়ে উঠছে না । নতুন উদ্যেতা এগিয়ে তাকে সার্বিক সহয়োগিতা করা হবে।

উপজেলা কৃষি বিদ ও অতিরিক্তি কৃষিঅফিসার অভিজিত কুমার বিশা¦াস বলেন, উর্বর ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা প্রবণ হওয়ায় চুয়াডাঙ্গার মাটি ফুল চাষের জন্য উপযোগী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাষিদের আধুনিক প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিচ্ছে। ফলে নতুন নতুন ফুল বাগান চাষে চাষিদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাজারে ফুলের চাহিদা অনেকে। সেইতুলনায় উপজেলায় ফুল চাষীর সংখ্যা কম ।ফুল চাষ ক্রমেই বাড়ছে। ফুলগুলো শুধু সৌন্দর্য্য বর্ধন করছেনা প্রতি মাসে এই কৃষকের হাতে এনে দিচ্ছে মোটা অংকের টাকাও। আমরা চাষিদের সব বিষয় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিচ্ছি।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি