image

কেশবপুরে শীত আর ঘনকুয়াশায় ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে ধীরগতি

রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, কেশবপুর (যশোর)

তীব্র শীত আর ঘনকুয়াশায় চলতি আমন মৌসুমে কেশবপুর খাদ্য গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান চলছে ধীরগতিতে। গত এক মাসে মাত্র ১২০ মেট্রিকটন ধান ও ১৮৩ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ হয়েছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যের সমান বাজার দর হওয়ায় খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন কৃষকরা। এ অবস্থায় খাদ্যগুদামে চাল সংগ্রহ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাতাল মালিকেরা।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ নভেম্বর আমন মৌসুমে সারাদেশ ব্যাপী সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়। তবে ২৫ নভেম্বর কেশবপুর খাদ্য গুদাম ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়। প্রতিকেজি ধান ৩৪ টাকা ও চাল ৫০ টাকা বাজার দর নির্ধারণ করা হয়। সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ধান- ২০০ মেট্রিকটন ও চাল ৩৩৩ মেট্রিকটন। সংগ্রহ অভিযান শেষ হবে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি। গত ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ একমাসে মাত্র ১২০ মেট্রিকটন ধান ও ১৮৩ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ হয়েছে। আমন সংগ্রহ অভিযানের আর মাত্র দুইমাস বাকি রয়েছে।

কৃষকরা জানান, সরকার নির্ধারিত মূল্য ও বাজার দর প্রায় সমান। যে কারণে কৃষক ও মিলারদের সরকারি খাদ্য গুদামে ধান ও চাল সরবরাহে আগ্রহ কম। তাছাড়া, বন্যার কারণে অমন উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহে ঝুটঝামেলা বেশি থাকায় কৃষক খাওয়ার ধান মজুদ রেখে, অবশিষ্ট যে ধান থাকে তা খোলা বাজারেই বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে সরকারের ধান সংগ্রহ ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ধান, পাট ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার ও চাতাল মালিক বিষ্ণুপদ দাস জানান, বর্তমান বাজারে প্রতিমন ধান ১১৩০ টাকা মনদরে বিক্রি হচ্ছে। তবে মোটা চালের বাজার দর প্রায় সরকারি দামের সমান। এ অবস্থায় খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করলে কোনো লাভ হবে না। এতে বিপাকে পড়বেন তারা। মিলাররা সরকারি গুদামে চাল বিক্রিতে চুক্তিবদ্ধ। লোকসান যেনেও আগামী দিনের আশায় মিলাররা গুদামে চাল সরবরাহ করবেন বলে ডিলার বিষ্ণুপদ দাস জানান।

সচেতন চাল ব্যবসায়ীদের অভিমত, সরকারি ক্রয়মূল্য বৃদ্ধি করা হলে স্থানীয় বাজারেও চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাবে। অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সরকারি গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ না হলেও বাজারে দাম অস্বাভাবিক বাড়ার সম্ভবনা নেই। এ অবস্থায় যেটুকু ঘাটতি থাকবে তা সরকার আমদানি করেই পূরণ করতে পারবে।

কেশবপুর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা বানেছুর রহমান বলেন, কৃষকের অ্যাপসে আবেদন করার পর লটারিতে যেসব কৃষক বিজয়ী হবেন তারাই সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে পারবেন। কৃষকের অ্যাপস ছাড়া ধান কেনার কোনো সুযোগ নেই। তবে তীব্র শীত আর ঘনকুয়াশায় রোদের দেখা না মেলায় সংগ্রহ অভিযান বিলম্ব হচ্ছে। কেশবপুরে ৩৪ টি হাসকিং মিল মালিকের মধ্যে ২৯ জন চালের বরাদ্দ পেয়েছেন। এখনও দুই মাস সময় থাকলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় রয়েছে।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি