image

ধর্ষক পরিবারের হুমকিতে গৃহবন্দি ভুক্তভোগী পরিবার

রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, দেবীদ্বার (কুমিল্লা)

কুমিল্লার দেবীদ্বারে ৭ বছর বয়সী গোপালনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে চাচা সম্পকীয় আরমান হোসেন ভূঁইয়া (১৭) নামে এক কিশোর কর্তৃক ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযুক্ত আরমান হোসেন ভূঁইয়া (১৭) উপজেলার গোপালনগর ভূইয়া বাড়ির মোবারক হোসেন ভূইয়ার ছেলে। আরমান স্থানীয় গোপালনগর হাজী মীর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র।

ঘটনাটি ঘটে গত ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের বিলের মাঝখানের নির্জন এলাকার শামিম আহমেদের আধানির্মীত পরিত্যাক্ত একটি ভবনে।

ওই ঘটনার পর প্রভাবশালী ধর্ষক পরিবারের হুমকীর মূখে ভিক্টিম শিশুটিকে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে পারেনি। শিশুটি রক্তক্ষরনে প্রায় মৃতঅবস্থায় দেখে ঘটনার ৩ দিন পর প্রতিবেশী স্বপন ভূইয়া নামে অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ সদস্য নিজ দায়িত্বে গত বুধবার (২৪ ডিসেমম্বর) শিশুটিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করান। বর্তমানে শিশুটি ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত ২১ ডিসেম্বর বিকেলে শিশুটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে আরবি পড়ে বাড়ি যাওয়ার পথে আরমান তাকে ফুসলে নিয়ে প্রথমে বাড়ির পাশে একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়, সেখানে নিরাপদ না হওয়ায়, বিলের ধানক্ষেতে নিয়ে যায়, সেখানে পানি থাকায় বিলের মাঝে শামিম আহমেদের অধানির্মানাধীন পরিত্যাক্ত ভবনে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। শিশুটি রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরলে ধর্ষকের পরিবার তাকে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবা দিতে নিয়ে আসতে দেয়নি।

শিশু ধর্ষণের ঘটনায় এলাকায় সাধারন মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও, ধর্ষক পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা।

শিশুর বাবা ট্রাক্টর চালক জানান, ধর্ষকের পরিবার প্রভাবশালী, আমি নিরুপায়, চিকিৎসা সেবা দিতে হাসপাতাল নিতে পারিনি।

এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে পরিনাম খারাপ হবে বলে ওরা হুমকী দেয়। আমি বাড়ির লোকদের কাছে বিচার চাইলে মোবারক ভূইয়ার লোকজন আমাকে মারতে আসে। ধর্ষক আরমান তার বাবার প্রশ্রয়ে এলাকায় ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। অভাবের সংসার, আমি আজ ৪/৫ দিন কোন কাজে যেতে পারছিনা, মান সম্মানের ভয়ে এক রকম গৃহবন্দী অবস্থায় আছি।

এ ব্যাপারে ধর্ষক আরমানের বাবা মোবারক ভূইয়া বলেন, শুনেছি ধর্ষনের চেস্টা করেছে, ধর্ষণ করেনি। ডাক্তারি পরীক্ষা নিরীক্ষায় ধর্ষনের আলামত পায়নি, তবে ধর্ষণচেষ্টার প্রমান পেয়েছে। উভয়-ই শিশু এবং নাবালক। এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে উভয় পরিবারের মানসম্মানের হানী ঘটবে। তাই বিষয়টি স্থানীয়দের সাথে কথা বলে ভিক্টিমের পরিবারের সাথে মিমাংসা করে নিয়েছি। ভিক্টিমের বাবাও মানসম্মান হানীর ভয়ে মামলা করতে রাজী না।

দেবীদ্বার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার বলেন, ওই ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠিয়েছি। ভিক্টিমের বাবাকে থানায় আসতে বলেছি। সেও তিন দিন ধরে আসছেনা। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি