মেহেরপুর দেশের একটি সীমান্তবর্তী ছোট জেলা। মোটামুটি তিনদিকেই ভারতের পশ্চিম বাংলার সাথে সীমান্ত ঘেঁষা জেলা। জেলার সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামগুলিতে কুষ্ঠ আক্রান্ত রুগী দেখা যায়। সরকারী ভাবে জরিপ করলে এর প্রকপতা বোঝা যেত।
সালোম চার্চ অব বাংলাদেশের একটি ছোট প্রকল্প লেপ্রসীমিশন। মেহেরপুর জেলার তিন উপজেলার কয়েকটি গ্রামে দুয়েকজন কর্মী নিয়ে জরিপ করে প্রায় ৭০০ কুষ্ঠ আক্রান্ত রুগী পায়। বর্তমানে ৪৫ জন রুগী চিকিৎসাধীন আছে। আর সব রুগী সকলেই সুস্থ জীবন ফিরে পেয়েছেন। সালোম কর্মীদের তৎপরতা ও সরকারী হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসার ফলে এযাবত কোনো রুগী বিকলাঙ্গ হয়নি। তবে সরকারী হাসপাতালগুলিতে কর্মরতটি এলসিএ, সিএইচসিপি যাঁরা আছেন তাঁরা তাঁদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে কুষ্ঠরুগীর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেত।
কুষ্ঠরোগ যক্ষার মতো একটি নিরাময় যোগ্য রোগ। জ্ঞানও সচেতনতার অভাবের কারণে সীমান্তবর্তী জেলা মেহেরপুরে মানুষের মধ্যে এই মারাত্মক রোগটি বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন সিভিল সার্জন ডা: একে এম আবু সাঈদ।
আলাপ কালে তিনি সংবাদকে বলেন, যে কুষ্ঠরোগ পাপের ফল নয়। সঠিক সনাক্তকরণের পর ওষুধ প্রয়োগে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব হতে পারে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে কুষ্ঠ একটি মৃদু সংক্রামক ও দীর্ঘ মেয়াদী জীবাণু ঘটিত রোগ কিন্তু ছোঁয়া চেনয়।
২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কুষ্ঠ নির্মূলের লক্ষ্যে ১০টি জেলার মধ্যে মেহেরপুর জেলাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কুষ্ঠ আক্রান্ত দশটি জেলা হলো নওগাঁ বগুড়া লালমনিরহাট বাগেরহাট দিনাজপুর ঠাকুরগাঁও মৌলভীবাজার জয়পুরহাট পঞ্চগড় এবং মেহেরপুর (রেডজোন)। কিন্তু জনবলের অভাবে সালোম চার্চ অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পুরো মেহেরপুর জেলায় কাজ করা সম্ভব হয়নি। জেলার মাত্র কয়েকটি ভারত সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামে তাঁরা কাজ করছেন। তবে লেপ্রসী মিশন সূত্রে জানা যায় তাদেও প্রজেক্ট ২০২৫ সালের ডিসেম্বও মাসে শেষ হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, কুষ্ঠ রোগের যাতে বিস্তার না ঘটে সেজন্য সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিভাগ, লেপ্রসীমিশনের কর্মীদেও সহযোগীতায় কুষ্ঠ আক্রান্ত রোগীদেও পরিবারের সদস্যদেও এবং কুষ্ঠ রোগীদেও আশে পাশে বসবাসকারী আরো ৪০টি পরিবারকে ওষুধ সিঙ্গেল ডোজরিফামপিসিন (এসডিআর) খাওয়ানো হয়েছে বলে মেহেরপুরের সিভিল সার্জন জানান। তিনি দ্যা লেপ্রসীমিশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প গ্রহণ ও আরো মাঠকর্মী বৃদ্ধিরজন্য অনুরোধ করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি (সিএস) বলেন কুষ্ঠ রোগীদের সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয় এবং তাঁর জেলায় কুষ্ঠ রোগের জন্য ওষুধের কোনো ঘাটতি নেই। অন্য প্রশ্নের জবাবে তিনি সালোমচার্চ অব বাংলাদেশের কাজে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।