image
টলটলি পাড়া থেকে মহিষকুন্ডি পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারণ কাজ এলাকাবাসী বন্ধ করে দেয় -সংবাদ

দৌলতপুরে রাস্তা সম্প্রসারণ কাজে অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধ

রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া)

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের টলটলি পাড়া থেকে মহিষকুন্ডি পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন এলাকাবাসী। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও প্রকল্পের শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আরসিআইপি প্রকল্পের আওতায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে দৌলতপুর ও মিরপুর উপজেলায় একটি প্যাকেজে প্রায় ১৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই বরাদ্দের মধ্যে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি স্থানান্তর, গাছ কেটে পরিষ্কার, রাস্তার পাশে পাকা গাইড ওয়াল নির্মাণ এবং ২২টি কালভার্ট নির্মাণের কাজ অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রকল্পটির দরপত্র আহ্বান করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের টলটলি পাড়া মোড় থেকে মহিষকুন্ডি মোড় পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার রাস্তার কাজ দৌলতপুর অংশে এবং বাকি অংশ মিরপুর উপজেলার মধ্যে পড়ে। লটারির মাধ্যমে কুষ্টিয়ার ঠিকাদার আতাউর রহমান ও মিজানুর রহমান কাজের দায়িত্ব পান।

কাজ শুরুর পর গত ৫ জুলাইয়ের পর ঠিকাদার আতাউর রহমান (আতা) পলাতক থাকায় কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকে। পরে মিজানুর রহমান তার অংশীদার আতাউর রহমানের এক আত্মীয় ভেড়ামারা উপজেলার মকলেছুর রহমান এবং দৌলতপুর উপজেলার এক প্রভাবশালী ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে পুনরায় কাজ শুরু করেন।

কাজ চলাকালে এলাকাবাসী লক্ষ্য করেন, ১২ ফুট প্রশস্ত রাস্তার দুই পাশে ৬ ফুট করে বাড়িয়ে ১৮ ফুট করার কথা থাকলেও নিয়ম মেনে গাছ অপসারণ না করেই কাজ চালানো হচ্ছে। বিদ্যুতের খুঁটি সরানো হলেও শতাধিক মোটা মেহগনি গাছ রেখে বক্স কেটে প্রথমে বালি ও পরে নিম্নমানের বালি-মিশ্রিত খোয়া ব্যবহার করে ম্যাকাডাম নির্মাণ করা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী সমপরিমাণ বালি ও খোয়া ব্যবহারের কথা থাকলেও বাস্তবে অতিরিক্ত বালি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বকুল, মুহিদুল, পল্টু, জাহাঙ্গীরসহ শতাধিক এলাকাবাসী স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন। পরে গত ১৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে বিসিক বাজার এলাকায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের এসও সজিবসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে কাজের মান পরিদর্শন করা হয়। এ সময় অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেলে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী রাকিব হাসান বলেন, মেহগনি গাছ কাটার বিষয়ে আমি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি। জেলা প্রশাসকের নির্দেশ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এলাকাবাসী দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

» মাঠ ভরে ফসলে, ঘর ভরেনি স্বস্তি আদিবাসী নারীর বেদনার দিনলিপি

» আত্রাইয়ে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

সম্প্রতি