image

চকরিয়া সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে তৈরি করা হয়েছে মাছের ঘের

সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, চকরিয়া (কক্সবাজার)

জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবেশগত সংকটাপন্ন জোন বিশেষ করে বিলুপ্ত সুন্দরবন এলাকায় কেওড়া বাইনসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে প্যারাবন সৃজনের মাধ্যমে নিরাপত্তা বেস্টনী গড়ে তুলতে হবে। যার মাধ্যমে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাসের দুর্যোগকালীন সময়ে জনগণের জানমালের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। পাশাপাশি নির্বিচারে বনউজার, পাহাড় কাটা, নদী থেকে বালু উত্তোলন, পুকুর জলাধার ভরাটসহ পরিবেশ বিধংসী সকলধরণের কর্মকা- বন্ধে শ্রেনিপেশার সকল নাগরিকদের অংশগ্রহণে সামাজিক আন্দোলন জোরদার করতে হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলার) আয়োজনে রোববার (২৮ ডিসেম্বর) চকরিয়া উপজেলার ভরামুহুরীস্থ এসএআরপিভি মিলনায়তনে ‘পরিবেশ, পরিবেশ আইন ও জলবায়ু ন্যায্যতা ‘শীর্ষক দুইদিন ব্যাপী প্রশিক্ষন কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীন দেলোয়ার এসব কথা বলেন।

তাঁর আগে অংশগ্রহণকারী অংশিজনের উপস্থিতিতে সকাল দশটায় কর্মশালার উদ্বোধন করেন ইউএনও। শুরুতে ভার্চুয়ালী সুচনা বক্তব্য দেন বেলার প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম।

উদ্বোধনী কর্মশালার প্রথমদিনে উপকূলীয় অঞ্চলের বন সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, কৌশল ও চকরিয়া সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় করণীয় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ গাইডলাইন উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্বিবদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষক অধ্যাপক ডঃ মোহাম্মদ কামাল হোছাইন। তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালের পর থেকে চকরিয়া সুন্দরবন দখল-দুষণের কবলে পড়েছে। এখন সেখানে বনের কোন অস্তিত্ব নেই। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে তৈরি করা হয়েছে শত শত মাছের ঘের। এধরণের পরিবেশ বিধংসী কর্মকা- জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় বড়ধরণের হুমকি বটে।

বন ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ডঃ কামাল হোছাইন বলেন, বিলুপ্ত চকরিয়া সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ও ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হলে এখন সরকার ও স্থানীয় জনগণের সদিচ্ছা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এ জোনে বেশি করে প্যারাবন সৃজন করতে হবে। পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করে সুন্দরবনের হারানো সুদিন ফেরানো যেতে পারে।

কর্মশালার সেশন পরিকল্পনার শুরুতে পরিবেশের প্রাথমিক ধারনা, আইন ও নীতিমালা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার প্রোগ্রাম ও ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর এ.এম.এম মামুন এবং বেলার চট্টগ্রাম অঞ্চলের ডিভিশনাল অফিসার সংকেত দেব। কর্মশালার তদারকিতে ছিলেন বেলার ফিল্ড অফিসার সামির রহমান।

দুপুরে মধ্যহভোজের বিরতির পর জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবের ঘটনাগুলো নিয়ে কর্মশালায় আগত পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ এবং বেলার দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা পরিবেশ বিষয়ক বিশর্দ আলোচনা করেন এবং জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় করনীয় নির্ধারনে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণসহ কাজ করার জন্য নানাবিধ পরামর্শ তুলে ধরেন। সর্বশেষে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনে পলিসি ও পরিকল্পনা প্রেক্ষিত নিয়ে ভিডিও চিত্রের আলোকে অংশিজনদের সামনে টেকসই উন্নয়নের আলোকে এবং পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা উপকূলীয় জনপদে প্যারাবন সৃজনের মাধ্যমে নিরাপত্তা বেস্টনী গড়ে তোলার বিষয়ে বিশ্লেষণধর্মী দিকনির্দেশনা মূলক পরামর্শ তুলে ধরেন বেলার প্রোগ্রাম ও ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর এ.এম.এম মামুন।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি