বগুড়ার শেরপুরে দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠে সরিষার ক্ষেতে এখন শুধু হলুদের সমারোহ। চারদিকে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। এ যেন হলুদের চাদরে মোড়ানো হয়েছে মাঠ। মাঠের পর মাঠ হলুদে ছেঁয়ে যাওয়ায় বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন স্থানীয় কৃষকরা। শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সরিষার হলুদ ফুল প্রকৃতিতে এক নান্দনিক রূপ দিয়েছে। ওই সকল মাঠে ফুলের সুবাস চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে, যা আকৃষ্ট করছে প্রকৃতিপ্রেমীদের।সরিষার ক্ষেতে সুইচোরা, বুলবুলি ও শালিকের ঝাঁকসহ বিভিন্ন পাখিদের আনাগোনা বেড়েছে। এই সকল মনোরম দৃশ্য দেখতে ও ক্যামেরাবন্দি করতে দূর-দূরান্ত থেকে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও প্রকৃতিপ্রেমীরা ভিড় করছেন সরিষার জমিতে। আবার সরিষার ফুলের সৌন্দর্যকে ধরে রাখার জন্য অনেক তরুণ-তরুণীরা ক্যামেরা ও ভিডিওর মাধ্যমে নিজের ছবির সাথে সরিষার ফুলের ছবি ধরে রাখছেন। সরিষা ফুলের শোভা আরো বাড়িয়ে তুলেছে অসংখ্য মৌমাছির দল গুণগুনিয়ে মধু আহরণে ব্যাস্ত।
উপজেলার ভাটরা গ্রামের কৃষক সোনা মিয়া ও লোকমান হোসেন জানান, গত বছর তারা সরিষা চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন। এবছরও গাছ ও ফুল খুব ভালো হয়েছে। তারা আশা করছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও ভালো লাভ হবে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, এবার কৃষকদের সরিষা চাষে তাদের ভাগ্যবদল হবে। সরিষার আবাদ ভালো হওয়াতে তাদের মুখে যেন হাসির ঝিলিক। আবাদে সেচ, সার ও কীটনাশক অনেক কম লাগে। তার মতে, প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবার বাম্পার ফলন হবে। তিনি বলেন, সরিষা চাষ করে মানুষ শুধু তেল-ই তৈরি করে না। এই সরিষা ভাঙ্গিয়ে খৈল ও গাছ থেকে ভূষি তৈরি হয় যা গরুর ভালো খাদ্য এবং ভালো জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। সরিষা কৃষকের স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূরণেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার বলেন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ কিছুটা কম হলেও এখন পর্যন্ত সরিষার অবস্থা বেশ ভালো। যদি বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয়, তবে এবার সরিষার আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে।