image
ডিমলা (নীলফামারী) : শীতে কাবু বৃদ্ধ -সংবাদ

ডিমলায় তীব্র শীতে স্থবির জনজীবন

মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, ডিমলা (নীলফামারী)

ঘন কুয়াশা ও উত্তরের হিমেল হাওয়ায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলাসহ গোটা উত্তরাঞ্চলে শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। চলতি পৌষ মাসের শুরুতেই টানা পাঁচ দিন সূর্যের দেখা না মেলায় জনজীবন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু ও বয়স্করা।

গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ডিমলা উপজেলা শহরসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায়। দিনের বেলাতেও আলো স্বল্পতায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গত ৫ দিন ধরে সূর্যের আলো না থাকায় নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। শীতের তীব্রতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।

কৃষকরাও পড়েছেন বড় বিপাকে। কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডার কারণে মাঠে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বোরো ধানের বীজতলা তৈরি ও বিভিন্ন ফসলের পরিচর্যায় ব্যাহত হচ্ছেন অনেক কৃষক। শীত নিবারণে নিম্ন আয়ের মানুষ পুরোনো শীতবস্ত্র কিনছেন, আবার অনেককে খড়কুটো ও কাঠ জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, তীব্র শীত ও কুয়াশার মধ্যেও জীবিকার তাগিদে একাধিক গরম কাপড় গায়ে জড়িয়ে কাজে নেমেছেন শ্রমজীবী মানুষ। তবে স্বাভাবিক দিনের তুলনায় জনসমাগম কম থাকায় রিকশাচালকসহ অনেক কর্মজীবী মানুষকে শীতের কাপড় জড়িয়ে অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। সূর্যের দেখা না থাকায় কুয়াশার মধ্যে যানবাহন চলাচল করছে ধীরগতিতে। এতে সড়কে যাত্রী ও চালকদের দুর্ভোগ বেড়েছে। রিকশাচালকেরা জানান, কুয়াশার কারণে শহরে লোকজন কম, যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে না। শীতের জন্য অনেকেই রিকশায় উঠতে চায় না। তবুও জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন ঘর ছাড়তে হচ্ছে। এদিকে ফুটপাতের দোকানগুলোতে গরম কাপড়ের বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মীর হাসান আল বান্না জানান, মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে জেলায় রবি ফসল ও বোরো ধানের বীজতলায় বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। উপজেলার মাঠে সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসল রয়েছে, যেগুলোর পরিচর্যা ঠান্ডার কারণে ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সবুর জানান, মঙ্গলবার সকালে ডিমলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি আরও জানান, আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরানুজ্জামান বলেন, সরকারিভাবে এক হাজার ৬০০ কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তা ১০টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ছিন্নমূল ও দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। তবে এটি প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। নতুন করে আরও কম্বল বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তিনি শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সরকারি-বেসরকারি সহায়তার পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সম্প্রতি