image
ছবি: সংগৃহীত

হাড়কাঁপানো শীতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর চাপ

মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, মহেশপুর (ঝিনাইদহ)

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তঘেঁষা ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় পৌষের শুরুতেই হাড়কাঁপানো শীত জনজীবনকে চরমভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় সূর্যের দেখা না মেলায় সারাদিনই শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে।

মঙ্গলবার, (৩০ ডিসেম্বর ২০২৫) সকাল ৮টায় মহেশপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় সড়কে যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা গেছে, কমে গেছে হাটবাজার ও সাধারণ মানুষের আনাগোনা। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক ও ইটভাটার শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ, যারা জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করেই কাজে বের হচ্ছেন। সস্তা বাজারের ভ্যানচালক আনজু বলেন, এই ভ্যান চালিয়েই আমাদের সংসার চলে, যে কয়টা টাকা পাই, তা দিয়েই বাজার-সদাই করি। কিন্তু এই ঠান্ডায় নিজেরাই ঠিকমতো ভ্যান চালাতে পারছি না, আবার রাস্তায় যাত্রীও কম। মহেশপুর ভ্যানস্ট্যান্ডের ভ্যানচালক আব্বাস জানান, এই শীতে গরিব মানুষের চরম কষ্ট, একদিকে শীতের পোশাকের সংকট, অন্যদিকে রোজকার আয় কমে যাওয়ায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। শীতের প্রভাবে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগীর চাপ।উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মোছা. হেলেনা আক্তার নিপা জানান, প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ জন বয়স্ক এবং ২০০ থেকে ৪০০ জন শিশু আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছে; নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়ার রোগী বেশি আসছে। এদিকে ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডার কারণে বোরো ধানের বীজতলা এবং বিভিন্ন রবি শস্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, খুলনা বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় আরও কয়েক দিন শীতের দাপট অব্যাহত থাকতে পারে।এমন পরিস্থিতিতে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে স্থানীয় বিত্তবান ব্যক্তি ও সামাজিক সংগঠনগুলোর প্রতি মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন মহল। এদিকে পুরাতন কাপড়ের ব্যবসায়ী মহেশপুর জিমনেশিয়াম সংলগ্ন আরাফাত বলেন, এবার শীতে পুরাতন কাপড়ের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু তীব্র ঠান্ডা ও কুয়াশার কারণে মানুষ ঠিকমতো বাজারমুখী হতে পারছে না, তাই বেচাকেনা প্রত্যাশামতো হচ্ছে না। সব মিলিয়ে কনকনে শীতে মহেশপুর যেন এক নীরব কষ্টের জনপদ যেখানে শীত শুধু প্রকৃতির নয়, মানুষের জীবনযাত্রার ওপরও কঠিন ছাপ রেখে যাচ্ছে।

সম্প্রতি